ফ্যাশনিস্তা তরুণীর ওয়ার্ডরোবে যে ১০টা জিনিস থাকতেই হবে

প্রতিটি নারীর শরীর আলাদা। তাঁর ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সঙ্গে ফ্যাশনসেন্সও আলাদা। কেননা, ফ্যাশন তো তাঁর ব্যক্তিত্বেরই একটা প্রতিফলন। তারপরও একটা ফ্যাশনিস্তা মিনিমালিস্টিক ক্যাপসুল ওয়ার্ডরোবের কথা ভাবুন। যেখানে অল্প পোশাক আর অনুষঙ্গের সন্নিবেশে আপনি দারুণভাবে স্টাইলিং করতে পারবেন ২০২৪ সালের পুরোটা। ফ্যাশনের এই উপাদানগুলো খুবই বেসিক, সহজে ‘আউট অব ট্রেন্ড’ হয় না, পাঁচ বছর ‘আমার করে’ সেগুলো আপনার আলমারিতে রাখতেই পারবেন। দেখে নেওয়া যাক, সেখানে কোন জিনিসগুলো অবশ্যই থাকতে হবে।  

১. কালো, লাল আর মাল্টিকালারের ব্লাউজ, জামদানি শাড়ি


যদি আপনি একটা ব্লাউজ দিয়েই বছরটা পার করতে চান, তাহলে একরঙা একটা কালো ব্লাউজেই সেটা সম্ভব। হতে পারে সেটা মখমল, সুতি বা চিকেনের। লাল রংটা সাংস্কৃতিকভাবে আমাদের ফ্যাশনে গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমা বিশ্বে কালো রংটা ফ্যাশনে যতটা গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের জন্য লাল সে রকম। তাই একটা লাল ব্লাউজ আপনাকে দেবে উৎসবের আমেজ। রাখতে পারেন একটা মাল্টিকালারের প্রিন্টের ব্লাউজও।

ব্লাউজের ডিজাইন হতে পারে সনাতনী বা আধুনিক। তবে মাপটা আপনার শরীরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। আপনার পছন্দমতো কিছু শাড়ি আপনার ওয়ার্ডরোবে থাকতে পারে। তবে বাংলাদেশের ফ্যাশনিস্তা নারীর আলমারিতে একটা জামদানি থাকবে না, তা কি হয়? একটা গাঢ়রঙা কাতান ও বেনারসিও সংগ্রহে রাখতে পারেন। মণিপুরি, তাঁতের শাড়ি তো কমবেশি থাকেই।  

তবে বাংলাদেশের ফ্যাশনিস্তা নারীর আলমারিতে একটা জামদানি থাকবে না, তা কি হয়?

২. কালো টপ


কালো টপ স্টাইলিংয়ের অন্যতম সেরা অনুষঙ্গ। কালো টপ এমন একটা পোশাক, সেটা আপনি যেখানেই পরে যান না কেন, ‘ভুল’ হবে না। এর মানে হচ্ছে আপনি অফিসেও পরে যেতে পারেন, আবার কিছু অক্সিডাইজড গয়নার সঙ্গে স্টাইলিং করে যেতে পারেন বিয়ের দাওয়াতে অথবা একটা কোটির সঙ্গে লেয়ারিং করে দিব্যি যোগ দিতে পারবেন রাতের পার্টিতে। কালো ড্রেস সবসময় সবখানে প্রাসঙ্গিক। কালো টপের পরেই সাদা টপের অবস্থান।

কালো টপ স্টাইলিংয়ের অন্যতম সেরা অনুষঙ্গ
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে
কালো টপের পরেই সাদা টপের অবস্থান
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

৩. সলিড টি–শার্ট


ফ্যাশনে সব সময়ই সেমিফরমাল এগিয়ে। আর সেমিফরমাল স্টাইলিংয়ের জন্য টি–শার্টের তুলনা হয় না। কয়েকটা সলিড মনোক্রোম নিউট্রাল টি–শার্ট রাখতেই হবে। অন্তত একটা অবশ্যই কালো রঙের হতে হবে। টি–শার্ট, ওভারসাইজড শার্ট, জ্যাকেট, ব্লেজার যেকোনো কিছু দিয়েই লেয়ারিং করতে পারেন। বটমে থাকতে পারে স্কার্ট, প্যান্ট বা জিনস। দুই–তিনটা সলিড টি–শার্টই যথেষ্ট। সেগুলো ভালো মানের কিনলে বেশ কয়েক বছর দিব্যি চলে যাবে। টি–শার্টের গলার কাট হতে পারে ক্রু বা টার্টেল।

৪. কালো চিকেন কারি কুর্তা

চিকেন কারি আরেকটা ফ্যাশনেবল অনুষঙ্গ, যেটা সব সময়ই ট্রেন্ডি, ক্ল্যাসি। চিকেন কারি কামিজ বা টু পিস অথবা থ্রি–পিস ছাড়া এথনিক ফ্যাশন চিন্তা করা যায় না। একটা চিকেন কারি থাকলে সেটা কালো রঙের, দুইটা থাকলে দ্বিতীয়টা সাদা আর তিনটা থাকলে তৃতীয়টা লাল রঙের রাখতে পারেন। আপনার দরজিকে দিয়ে নিজের পছন্দমতো ডিজাইন করে বানিয়ে নেবেন। এছাড়া রাখতে পারেন কয়েকটা ‘গো টু ওয়্যার’ ধরনের কুর্তি।

চিকেন কারি কামিজ বা টু পিস অথবা থ্রি–পিস ছাড়া এথনিক ফ্যাশন চিন্তা করা যায় না
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

৫. ফ্লোরাল ড্রেস


ফ্লোরাল টপ, শর্ট ড্রেস, মিডি ড্রেস বা লং ড্রেস একটা থাকতেই পারে। এটা আপনি ডিনার ডেটে বা বিচ লুকের জন্যও পরতে পারেন। সুন্দর ক্যাজুয়াল ছবির জন্য ফ্লোরাল ড্রেসের তুলনা নেই।

ফ্লোরাল প্রিন্ট লাগবেই!
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

৬. হাই হিল

ফ্যাশন সব সময়ই যে খুব আরামদায়ক হবে, তা নয়। একটা স্টিলেটো বা নিদেনপক্ষে ব্লক হিলের পেছনে টাকা খরচ করাটা ভালো বিনিয়োগ! একটা ‘পারফেক্ট হিল’ আপনার থাকতেই হবে।

৭. বয়ফ্রেন্ড ব্লেজার


ব্লেজার ছাড়া বস লুক? ভাবাই যায় না! সেটা যে সব সময় ফরমাল হতে হবে, এমন না। আরামদায়ক বয়ফ্রেন্ড ব্লেজারও হতে পারে। এটা আপনি অনেক কিছুর সঙ্গে পরতে পারেন।

ঘুরতে বের হলে অবশ্যই সঙ্গে রাখবেন রোদচশমা
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

 ৮. ডেনিম ও লেদারের জ্যাকেট

একটা ডেনিমের জ্যাকেট ছাড়া ফ্যাশনিস্তা তরুণীর আলমারি পূর্ণতা পায় না। এছাড়া লেদারের জ্যাকেটও রাখতে হবে অন্তত একটা।

৮. ঘড়ি, রোদচশমা

সাধারণ সিলভার ডায়ালের ঘড়ির জায়গায় হতে পারে সেটা স্মার্টওয়াচ। আর দু–একটা মানানসই রোদচশমা।

লেদারের জ্যাকেটও জরুরি
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

৯.  ব্লু জিনস, ফরমাল প্যান্ট, কালো পালাজো


বটমে পরার জন্য এই তিনটা প্যান্ট লাগবেই। এরসঙ্গে রাখতে পারেন একরঙা লেগিংস।

বডি হাগিং ব্ল্যাক ড্রেস সবসময় ট্রেন্ডি
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

১০. কোটি

‘লাস্ট বাট নট দ্য লিস্ট’ একটা স্টাইলিশ কোটি আপনার লুক বদলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। আপনি বিভিন্ন কাট আর নকশার তিনটা কোটি রাখতে পারেন।
আপনার ওয়ার্ডরোবে আর যা কিছুই থাক, আপনার রুচি, পছন্দের সঙ্গে মিলিয়ে ওপরের অনুষঙ্গগুলো থাকলে আপনার ‘ফ্যাশনেবল জীবন’ হয়ে যাবে অনেকটাই সহজ। তবে আপনি যদি এখন থেকে এগুলো সংগ্রহ করা শুরু করেন, তাহলে আপনার ৬ মাস থেকে ১ বছর সময় লাগতে পারে।

সূত্র: দ্য লাইফস্টাইল কগ, কৃতিকা খুরানা ও ঈশিকা খান্নার ইউটিউব চ্যানেল

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন