পাঁচ বন্ধুই এক মেয়ের প্রেমে পড়লাম
ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে মনের বাক্সে জমা হয়েছে পাঠকের ভালোবাসার নানা রকম গল্প। কেউ প্রেমিকের পথ চেয়ে বসে আছেন, কেউ আবার ছোটবেলার প্রেম ঘিরে এখনো নস্টালজিয়ায় বাঁচেন। তেমনই দুটি ভালোবাসার গল্প পড়ুন এখানে
তুমি ফিরবে তো?
১৬ বছর বয়সে তোমার প্রেমে পড়েছিলাম। আমার তরফ থেকে ভালোবাসার কথাও জানিয়েছিলাম। এক বছর পর তুমি ‘হ্যাঁ’ বলেছিলে। তারপর স্বপ্নের মতো চারটা বছর কাটালাম আমরা। আজ এখানে, কাল ওখানে ঘুরে বেড়াতে লাগলাম। তোমার সঙ্গে জীবন কাটাব বলেই হাত ধরে পালিয়েছিলাম। একটা দারুণ সংসারের স্বপ্ন দেখেছিলাম। তুমিও কথা দিলে আমরা বিয়ে করে একসঙ্গে থাকতে শুরু করলাম। ঠিক পাঁচ মাস পর এক ভোরে তুমি বাজারে গেলে। আমি রুটি বানাতে গেলাম রান্নাঘরে। কথা ছিল তুমি বাজার থেকে ফিরে এলে একসঙ্গে নাশতা খাব। কিন্তু কোন বাজারে গেলে তুমি? আর তো ফিরলে না! তোমার ফোনটাও বন্ধ হয়ে গেল সেই সকাল থেকে। আমি এখনো বাড়ি ফিরে যাইনি। দুই বছর ধরে তোমার ফিরে আসার অপেক্ষায় আছি। দুজনে মিলে যে নতুন সংসার গড়তে চেয়েছিলাম, সেটা এখন একা একা টেনে নিয়ে যাচ্ছি। তবে তোমার সঙ্গে থাকব বলে যে বাড়ি ছেড়ে এসেছি, সেখানে আর ফিরব না। আমাদের সেই ছোট্ট শহরের তিনতলার ফ্ল্যাট থেকে আমি তোমাকে বয়ে নিয়ে যেতে চাই, আমৃত্যু। তোমার ফেরার অপেক্ষায় আছি, থাকব।
তুলিকা, রাজশাহী
আজও সে আমাকে মুগ্ধ করে
সপ্তম শ্রেণির কোচিং ক্লাসে মেহরিনকে পেলাম আমরা। আমরা মানে কুমিল্লা বয়েজের সে বছরের ক্লাস সেভেনে পড়ুয়া পাঁচ বন্ধু। দেখতে কী অপূর্ব! গায়ের রং যেন দুধে আলতা। কথা বলে আদুরে ঢঙে। দ্বিতীয় বেঞ্চের জানালার পাশে সে বসল। তার মুখে এসে পড়ল পশ্চিম আকাশের সূর্য। এত অপূর্ব লাগছিল। পড়া শেষে সাইকেলে মেহরিনের পিছু নিলাম আমরা। বাড়ি চিনে এলাম। সব বন্ধুই তাকে ভালোবাসলাম। কিন্তু তার তো একটাই মন, এক বছরের সাধনায় সেটা জিতে নিল রাজীব। অন্যদের মতো আমি শুধু কেঁদেই বুক ভাসালাম। রাজীবের ওপর অভিমান করে কথা বলাই ছেড়ে দিলাম। দূরত্ব বাড়ল বন্ধুত্বে, তবে মেহরিনকে ভালোবাসা কমল না। হোক না সেটা একতরফা। সময়ের স্রোতে মিশে একসময় কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে ঢাকা এলাম। সাত বছর পর টিএসসিতে একদিন রাজীবের সঙ্গে দেখা। সংকোচ কাটিয়ে জড়িয়ে ধরলাম। সেও জানাল মেহরিন তাকে ছেড়ে গেছে অনেক আগেই। আরও নানা কুৎসা শোনাল। কিন্তু আমার ভালোবাসা কমল না। আমার হৃদয়ে এখনো সেই সপ্তম শ্রেণির কোচিং ক্লাসের মুগ্ধতা ছড়ায় মেহরিন।
সরদার মিজান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়