প্রথম আলোতে খবর প্রকাশের পর ফলোয়ার বেড়েছে ৩ লাখের বেশি
২০২২ সালের ২৫ ডিসেম্বর আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় দিন। স্বপ্ন পূরণের দিনও বলা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যখন থেকে আমার ভিডিওগুলো মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও সাড়া ফেলতে শুরু করে, তখন থেকেই চাইতাম, আমার কাজগুলো আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাক। আমার গ্রামীণ জীবন, কৃষিকাজ আর ইংরেজি শেখার গল্প নিয়ে নিজের মতো করে ভিডিও বানাতাম। ফেসবুক আর ইউটিউবে অনেকেই দেখতেন। তাই বলে প্রথম আলোর মতো একটা গণমাধ্যমে এই সংগ্রামের গল্প তুলে ধরা হবে, কখনো ভাবিনি। গত বছর ২৫ ডিসেম্বর এই অকল্পনীয় ব্যাপারটাই ঘটেছিল। ‘দয়ালের ইংরেজির ফসল’ শিরোনামে খবরটা ছাপা হয়েছিল প্রথম আলোর রোববারের ক্রোড়পত্র ‘স্বপ্ন নিয়ে’তে।
খবরটা প্রকাশের পর সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলেন আমার কৃষক বাবা আর মা। তাঁদের চোখে আনন্দ–অশ্রু দেখে মনে হয়েছিল, জীবনটা কিছুটা হলেও সার্থক। আমি পড়ালেখা করেছি পঞ্চগড়ের প্রামাণিক পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানকার প্রধান শিক্ষক আজগর আলী স্যারসহ স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকেরও চোখে পড়েছিল খবরটা। তাঁরা সাধুবাদ জানিয়েছেন। সেই অভিজ্ঞতাও আমার জন্য ভীষণ গর্বের, আনন্দের।
প্রথম আলোয় খবরটা ছাপা হওয়ার পর অন্যান্য সংবাদমাধ্যমও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করে। বাড়তে থাকে ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব অনুসারী (ফলোয়ার)। তিন মাসের মধ্যেই অনুসারীর সংখ্যা হয়ে যায় তিন লাখের বেশি। গণমাধ্যম সাহায্য না করলে এই গতি হয়তো কখনোই পেতাম না। সবার কাছে অবিশ্বাস্য সাড়া পেয়ে আরও ভালো ভালো কনটেন্ট তৈরিতে মনোযোগী হই। ধীরে ধীরে আরও আরও স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য কাজ করতে শুরু করি।
আমি মূলত ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা হতে চেয়েছিলাম। স্বপ্নটা লালন করে চলছিলাম কয়েক বছর ধরেই। নিজেকে তৈরি করতে, প্রমাণ করতেই লেগে গেছে প্রায় পাঁচ বছর। প্রথম আলোসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে খবরটা আসার পর আমার ইচ্ছেশক্তি আরও বেগবান হয়।
এখনো আমার স্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমার কনটেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ইংরেজি–ভীতি দূর করতে কাজ করে যাচ্ছি। এখন বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন অনুষ্ঠান থেকে কথা বলার আমন্ত্রণ আসে। আমি আমার গল্প দিয়ে মানুষকে অনুপ্রাণিত করতে চেষ্টা করি।
পঞ্চগড়ের এক কোণ থেকে আমার গল্পটা সারা দেশে, এমনকি দেশের বাইরেও পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমি প্রথম আলোর কাছে কৃতজ্ঞ। ২৫ ডিসেম্বর তারিখটা আজীবন আমার জন্য বিশেষ হয়ে থাকবে।