মেসির স্ত্রী আন্তোনেলার সঙ্গে যেভাবে সেলফি তুললেন মেহেদী

এই সেই সেলফি!

গতকাল গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পোল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা। মাঠে উপস্থিত ছিল মেসির পুরো পরিবার। সাধারণ সমর্থকদের তাঁদের ধারেকাছে ঘেঁষার জো নেই। গ্যালারি, বক্স—সবই আলাদা। কঠোর নিরাপত্তা। এ সবকিছু উপেক্ষা করে মেসির স্ত্রী আন্তোনেলা রোকুজ্জোর সঙ্গে ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি এক সমর্থক। তাঁর নাম মেহেদী জামান। তিনি একজন ব্যবসায়ী।

আর্জেন্টিনার সমর্থক মেহেদী যে লিওনেল মেসিরও ভক্ত, সে কথা নিশ্চয়ই আলাদা করে বলতে হবে। তবে মেসির প্রতি মেহেদীর ভালোবাসাটা অন্য দশজন ভক্তের তুলনায় ভিন্ন, বোঝা যায় তাঁর বিয়ের ছবি দেখলে। ২০১৭ সালে বিয়ে করেছেন তিনি।

নিজের বিয়ের সাজসজ্জায় লিওনেল মেসি ও আন্তোনেলা রোকুজ্জোর ছবির একটি কাটআউট রেখেছিলেন মেহেদী
ছবি: সংগৃহীত

বিয়ের সাজসজ্জায় রেখেছিলেন লিওনেল মেসি ও আন্তোনেলা রোকুজ্জোর ছবির একটি কাটআউট। সেবার কাটআউটের সঙ্গে ছবি তুলে ক্ষান্ত থাকতে হয়েছিল। তবে মেহেদী জানতেন না পাঁচ বছর পর স্বয়ং মেসির খেলা কাছ থেকে দেখার সুযোগ হবে। এমনকি সেলফি তোলার সুযোগ হবে আন্তোনেলার সঙ্গেও!

কীভাবে সম্ভব হলো? তরুণ ব্যবসায়ী মেহেদী জামান যেহেতু ফুটবল ভালোবাসেন, বিশ্বকাপ দেখার সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাননি। বাংলাদেশের আরও অনেক ফুটবল–ভক্তের মতো খেলা দেখতে কাতারে গিয়েছেন তিনি। স্টেডিয়ামে বসে দেখেছেন মেক্সিকো ও পোল্যান্ডের বিপক্ষে প্রিয় দল আর্জেন্টিনার দুটি ম্যাচ। মেহেদীর ভাগ্য ভালো বলতেই হয়, দুটি ম্যাচেই আর্জেন্টিনা জয় পেয়েছে।

তবে তাঁর আনন্দ আরও বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে বিশেষ একটি মুহূর্ত। মেহেদী বলছিলেন, ‘আমি স্টেডিয়ামের যেখানে বসেছিলাম, পাশেই ছিল ভিআইপি বক্স। হঠাৎ ডান দিকে তাকিয়ে দেখি, ওই বক্সগুলো খেলোয়াড়দের পরিবারের সদস্যদের জন্য বরাদ্দ।’ শুরু থেকেই বক্সের দিকে নজর রাখছিলেন মেহেদী। খুঁজছিলেন, আন্তোনেলা বা মেসির সন্তানদের কাউকে চোখে পড়ে কি না। খেলা শেষেও বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেছেন তিনি। স্টেডিয়াম যখন প্রায় খালি, তখন হঠাৎ দেখতে পান মেসির পরিবারের সদস্যদের।

মেহেদী বলেন, ‘আন্তোনেলা অন্যদিকে ঘুরে কথা বলছিলেন। আমি হাত নেড়ে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করলাম। কিছুক্ষণ পর মুহূর্তের জন্য একবার পেছনে ঘুরে তাকালেন তিনি। আমাকে দেখলেন। আমি হাত নেড়ে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম, একটা ছবি তুলতে চাই। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ইঙ্গিতে একটু অপেক্ষা করতে বললেন। এরপর বক্স থেকে বের হয়ে কয়েক ধাপ নিচে নেমে এসে আমার সঙ্গে ছবি তুললেন। ওই মুহূর্তে এত খুশি হয়েছিলাম, বলে বোঝানো যাবে না। এত বড় সেলিব্রিটি হয়েও তাঁরা কত ভদ্র, কত নিরহংকার। এক ফোঁটা বিরক্তিভাব ছিল না।’

এ সময় ভেতরে ছিলেন মেসির বাবা, মা, তিন সন্তান। মেসির সন্তানদের সঙ্গেও মেহেদী জামানের ইশারা বিনিময় হয়েছে। মেসি-আন্তোনেলা জুটির কার্ডবোর্ড অবয়ব–সংবলিত নিজের বিয়ের ছবি আন্তোনেলাকে দেখাতে পারলে নিশ্চয়ই দারুণ হতো। কিন্তু অতি উত্তেজনায় বিষয়টি সেই মুহূর্তে তাঁর মাথায় আসেনি।

বাংলাদেশের পতাকা হাতে আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা

স্টেডিয়ামে বহু আর্জেন্টাইনের সঙ্গে দেখা হয়েছে মেহেদীর। অনেক আর্জেন্টাইন জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সুবাদে তাঁরা জেনেছেন, বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার লাখো সমর্থক আছে। মেহেদী বলেন, ‘আমার কাছে বাংলাদেশের পতাকা দেখে ওরা অনেকে পতাকা নিয়ে ছবি তুলতে চাইল। ফিফার শেয়ার করা বাংলাদেশি সমর্থকদের ভিডিও ওরা দেখেছে। ওরা যে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে শুধু ছবি তুলেছে তা নয়। সমস্বরে বলছিল, “উই লাভ বাংলাদেশ।”’