ভিন্ন মাস, বছর, এমনকি ভিন্ন দশকে জন্ম নিয়েও তাঁরা যমজ

চেহারা ও বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একে অপরের কার্বন কপি হয়ে থাকেন যমজরা। আর যমজ মানেই তাঁদের জন্মদিন এক—এটা আমাদের সাধারণ ধারণা। কিন্তু ভিন্ন ঘটনাও আছে। এই লেখায় এমন পাঁচটি যমজের কথা থাকছে, যাঁরা কেবল ভিন্ন ভিন্ন দিনে নয়, জন্মেছেন ভিন্ন মাস, বছর, এমনকি দশকে।

৪ বছর বয়সে ক্যাটি ও অ্যামি জোনস এলিয়ট

ক্যাটি ও অ্যামি জোনস এলিয়ট

যমজ সন্তানের অপেক্ষায় ছিলেন আয়ারল্যান্ডের কিলকেনি শহরের বাসিন্দা ক্রিস ও মারিয়া জোনস এলিয়ট দম্পতি। সন্তান হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ ছিল ২০১৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর। কিন্তু গর্ভধারণের মাত্র ২৩ সপ্তাহ পাঁচ দিনের মাথায় তলপেটে তীব্র চাপ অনুভব করেন মারিয়া। হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। ২০১৩ সালের ১ জুন জন্মগ্রহণ করে প্রথম যমজ অ্যামি। তার ওজন ছিল মাত্র আধা কেজি। সে লড়ছিল ইনকিউবেটরে। ওদিকে তার যমজ বোন ক্যাটি লড়ছিল মায়ের ডিম্বাশয়ে। অবশেষে অ্যামির জন্মের ৮৭ দিন পর, ২৭ আগস্ট জন্ম নেয় ক্যাটি।

মিকা ও মেডিলিন মিলার

যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের জেফারসন সিটির দম্পতি ক্রিস্টেন ও ইয়ান মিলার। তাঁদের যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাব্য সময় ছিল ২০১৬ সালের জুন। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতেই জটিলতা দেখা দেওয়ায় ক্রিস্টেনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২০১৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি গর্ভধারণের ২৪ সপ্তাহ এক দিনের মাথায় জন্ম নেয় যমজ পুত্র মিকা। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে মিকার যমজ বোন মেডিলিনও চলে আসবে—এমনটাই প্রত্যাশা করছিলেন চিকিৎসক। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি বুঝতে পারেন, মেডিলিনের জন্ম শিগগিরই হচ্ছে না। অবশেষে মিকার জন্মের ৩৮ দিন পর পৃথিবীতে আসে মেডিলিন।

জন্মের পর জসলিন ও জেক্সন টেলো
ছবি: লিস্টভার্স

জসলিন ও জেক্সন টেলো

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা রাজ্যের বাসিন্দা ডন গিলিয়াম ও জেসন টেলো দম্পতি। প্রবল উত্তেজনা নিয়ে যমজ সন্তানের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা। সম্ভাব্য দিন ছিল ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। অনাগত সন্তান নিয়ে আলাপের ফাঁকে একদিন তাঁরা ভাবলেন, যমজ সন্তান দুটো একই দিনে না হয়ে যদি ভিন্ন ভিন্ন দিনে হতো! স্রষ্টা বোধ হয় তাঁদের কথা শুনেছিলেন। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর একটু সমস্যা বোধ করায় হাসপাতালে যান এই দম্পতি। সেদিনই রাত ১১টা ৫৭ মিনিটে জন্মগ্রহণ করে জসলিন গ্রেস টেলো, যমজের প্রথমজন। এর ঠিক ৩০ মিনিট পর অর্থাৎ ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি রাত ১২টা ৭ মিনিটে জন্ম নেয় দ্বিতীয় সন্তান, জেক্সন মিলস টেলো। এই যমজের জন্ম শুধু আলাদা বছরে নয়, আলাদা দুটি দশকেও।

অলিভ ও অ্যাস্টন পেরি

অলিভ ও অ্যাস্টন পেরি যমজের জন্মের ব্যবধানটা ঘণ্টা-মিনিটের ছিল না। মিনেসোটার লেক পার্কের অধিবাসী হিথার ও ক্রিস পেরি দম্পতির এই যমজ সন্তান রীতিমতো পাঁচ দিন আগে-পরে জন্মেছিল। সন্তান জন্মের সম্ভাব্য সময় ছিল ২০২১ সালের মে। একদিন কাজ করার সময় হিথারের পানি ভাঙতে শুরু করে। দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রসববেদনা উঠতে অবশ্য কয়েক সপ্তাহ লেগে যায়। ২৪ ফেব্রুয়ারি জন্ম নেয় মেয়েশিশু অলিভ। পরের সন্তান স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় জন্ম নিচ্ছিল না বলে চিকিৎসকেরা অপেক্ষা করতে থাকেন। একদিন, দুই দিন নয়, পাঁচ দিন অপেক্ষার পর ১ মার্চ জন্মগ্রহণ করে দ্বিতীয় যমজ অ্যাস্টন পেরি। ফলে কেবল ভিন্ন দিনেই নয়, ভিন্ন মাসে জন্মদিন পালন করতে হয় তাদের।

চার্লি ও লায়লা বার্গেস

ইংল্যান্ডের ৩৪ বছর বয়সী হেইলি বার্গেস যমজ সন্তান জন্মের অপেক্ষা করছিলেন। নির্ধারিত সময়ের ৯ সপ্তাহ আগেই সন্তানেরা জন্ম নেবে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসক। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হন হেইলি। ওই দিনই রাত সাড়ে ১১টায় জন্ম নেয় প্রথম যমজ সন্তান চার্লি। মধ্যরাত গড়াতেই, অর্থাৎ নতুন মাস অক্টোবরের ১ তারিখে জন্ম নেয় চার্লির যমজ বোন লায়লা।

সূত্র: লিস্টভার্স