যে ভুলে ডায়েটেও ওজন কমে না
অনিয়মিত জীবন যাপন ও জাঙ্কফুড খাওয়ার কারণে সিংহভাগ মানুষ ওজন বাড়ার সমস্যায় ভোগেন। বারবার ডায়েটের উদ্যোগ নিয়েও অনেকে ব্যর্থ হন। দিনের পর দিন খাবার নিয়ন্ত্রণ করেও ওজন কমে না। অনেকে তড়িঘড়ি ওজন কমাতে চান। তাই দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা, খাবারের পরিমাণ অনেকটা কমিয়ে আনার মতো নানা রকম ক্ষতিকর উদ্যোগ নেন। এতে সমস্যা আরও বাড়ে। তাই ওজন কমাতে চাইলে আগে জানা দরকার, কোন ভুলে আপনার ওজন বাড়ছে। ডায়েট করেও ওজন না কমার নানা রকম কারণ আছে। এর মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হলো—
১. অভ্যস্ত হওয়া: দীর্ঘদিন ধরে কম শর্করাযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর এতে অভ্যস্ত হয়ে যায়। তখন অল্প শর্করা খেলেও ওজন আর আগের মতো কমে না বরং একটি স্থিতাবস্থা লক্ষ করা যায়। তাই আগে নিজের শরীরের এই লক্ষণ শনাক্ত করা জরুরি।
২. হতাশ হয়ে অসচেতনভাবে খাওয়া: দেহের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই ওজন কমার হার স্থির হয়ে যেতে পারে। একই রকম খাবার গ্রহণ করে অথবা ব্যায়াম করে এক মাসে যতটা ওজন কমল, সমান পরিশ্রম করে পরের মাসে সেই পরিমাণ ওজন না–ও কমতে পারে। এটা শরীরের একধরনের প্রক্রিয়া। কিন্তু অনেকে সেটা না জানার কারণে হতাশ হয়ে পড়েন। তারপর ডায়েট চার্ট অনুসরণ করার আগ্রহ হারিয়ে ইচ্ছেমতো খেতে শুরু করেন। এখানে ভুলটা হয়, যার কারণে ওজন তো কমেই না, বরং বেড়ে যেতে পারে। তা ছাড়া ওজন না কমার দুশ্চিন্তা থেকেও ওজন বাড়তে থাকে।
৩. চর্বি কমছে কিন্তু পেশি বাড়ছে: অনেক সময় শরীরচর্চার কারণে আমাদের শরীরে চর্বি ক্ষয় হয় ঠিকই কিন্তু ওজন কমে না। কারণ, চর্বি যেমন কমে, তেমনি মাংসপেশি তৈরি হতে থাকে। মাংসপেশি রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আমাদের চালিকাশক্তি। তাই মাংসপেশি তৈরি হয়ে ওজন না কমলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
দ্রুত ফলাফল পেতে এই নিয়মগুলো মেনে চলুন
১. উপভোগ্য ব্যায়াম নির্বাচন করুন: ওজন কমাতে আমরা যেসব কঠিন, একঘেয়ে ও বিরক্তিকর ব্যায়াম নির্বাচন করি, তার জন্য মোটিভেশন ধরে রাখা অনেক সময়ই অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই এমন কোনো শরীরচর্চা নির্বাচন করুন, যেটা ওজন কমানোর চেয়ে আনন্দ লাভের জন্যই বেশি করতে ইচ্ছা হয়। যেমন শিশুদের সঙ্গে মাঠে দৌঁড়ঝাপ বা খেলাধুলা করা। মোটরচালিত বাইক ব্যবহার না করে সাইকেল চালানোর অভ্যাস করা যেতে পারে। সাঁতার কেটে গোসল করতে পারেন। একইভাবে জুম্বা বা অ্যারোবিকসের মতো শরীরচর্চাও নিজেকে ফিট রাখার জনপ্রিয় কৌশল। এই উপায়গুলো ওজন কমানোর জন্য উপভোগ্য হতে পারে।
২. স্বাস্থ্যকর খাবার: ওজন কমানো মানে খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দেওয়া নয়। প্রক্রিয়াজাত খাবার যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে। তবে আঁশ জাতীয় খাবার যেমন ফল, শাকসবজি ইত্যাদি পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস বরং ওজন কমাতে সহায়তা করে।
৩. পর্যাপ্ত ঘুম: কম ঘুম শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এটি ওজন বাড়িয়ে দেয়। তাই ওজন কমাতে চাইলে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
৪. মোটা দানার শস্য: খুব সহজেই খাবার টেবিলে কিছু পরিবর্তন এনে ওজন কমানো যায়। যেমন সাদা চালের পরিবর্তে লাল চাল। লাল আটা দিয়ে রুটি বানানো ইত্যাদি।
ওজন কমানো কোনো স্বল্পমেয়াদি কার্যক্রম নয়। রাতারাতি পরিবর্তন আসবে না। কিন্তু কিছু দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে নিশ্চিতভাবেই ওজন কমিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা সম্ভব।