বেতনের কত অংশ হবে বাড়িভাড়া?
কথায় বলে, আয় করার চেয়ে নাকি ব্যয় করা কঠিন! এখানে ব্যয় করা বলতে আসলে বোঝানো হয়েছে ‘মানি ম্যানেজমেন্ট’ বা আয় বুঝে, প্রয়োজন বুঝে, ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ব্যয় করার বিষয়টি। এক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের একজন জেফ বেজোসের একটি উক্তি না বললেই নয়। তিনি বলেন, ‘অনেকে আগে টাকা খরচ করেন। তারপর যা বেচে থাকে, জমান। আমি আগে সঞ্চয় করি। তারপর যা বেচে থাকে, তার ভেতরেই সব খরচ আটকে ফেলি।’ চলুন জেনে নেওয়া যাক, অর্থ ব্যবস্থাপনার সাতটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম...
১. সঞ্চয়, সঞ্চয়, সঞ্চয়
আপনি যে পরিমাণ অর্থ আয় করেন, তার অন্তত এক–চতুর্থাংশ জমা করুন। খুব ভালো হয়, যদি এক-তৃতীয়াংশ জমা করতে পারেন। যেদিন অ্যাকাউন্টে বেতন ঢোকে, সেদিনই অ্যাকাউন্ট থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা হওয়ার ব্যবস্থা করুন। যেটুকু বাকি থাকে, সেটি দিয়েই চলুন। সঞ্চয়ের কোনো বিকল্প নেই।
২. ছয় মাসের জরুরি তহবিল
মহামারিকাল আমাদের শিখয়েছে, জরুরি অবস্থার জন্য একটি সঞ্চয় রাখা কতটা জরুরি। আপনার যদি একাধিক আয়ের উৎস থাকে, তাহলে তিন মাসের জরুরি ফান্ড থাকলেই যথেষ্ট। আর আপনি যদি চাকরি ছেড়ে নিজেই কিছু করতে চান, সে ক্ষেত্রে এক বছর যাতে চলতে পারেন, এমন একটা তহবিল রাখতেই হবে। কেননা, যেকোনো ব্যবসা দাঁড় করাতে গড়ে এক বছর সময় লাগে।
৩. ৫০-২৫-২৫–এর নিয়ম
যা আয় করবেন, এর ৫০ ভাগ দিয়ে নিজের প্রয়োজন মেটাবেন। ২৫ ভাগ দিয়ে শখ মেটাবেন। আর ২৫ ভাগ সঞ্চয় করবেন।
৪. বিনিয়োগ
জরুরি অবস্থার তহবিল বাকি রেখে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা হলে, তার আবার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগ করুন। বিনিয়োগের মাধ্যমেই তৈরি হতে পারে বিকল্প কোনো আয়ের উৎস।
৫. বাড়িভাড়া
আপনার আয়ের সর্বোচ্চ এক–চতুর্থাংশ হতে হবে আপনার বাড়িভাড়া। তাই বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় বিষয়টি মাথায় রাখবেন। অর্থাৎ আপনার বেতন যদি হয় ৮০ হাজার টাকা, তাহলে যে বাসার ভাড়া, সিকিউরিটি চার্জ, পানির বিল, গ্যাসের বিল, বিদ্যুতের বিল—সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা, এমন একটি বাসাই আপনার জন্য প্রযোজ্য। এর কম হলে আরও ভালো।
৬. দ্বিধা নিয়ে ক্রয় নয়
কোনো কিছু কেনার ক্ষেত্রে যদি সামান্যতম দ্বিধাও কাজ করে, ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। ২৪ ঘণ্টা পর নিশ্চিত হয়ে কিনুন। এভাবে কেনাকাটা করলে অনেক অযথা কেনাকাটা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারবেন।
৭. বিলাসদ্রব্য
বিলাসী পণ্যের লোভ সংবরণ করুন। ১২০০ টাকার জুতা দিয়ে যদি দিব্যি চলে যায়, কী দরকার ১২০০০ টাকা দিয়ে জুতা কেনার?