হাওয়াবদলের পালা শুরু হয়েছে। দিনে প্রচণ্ড গরম হলেও দুপুরের পর থেকে কেমন একটু ঠান্ডার ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে ত্বকেও। সময়টা এখন শরীরের বাড়তি যত্ন নেওয়ার। চুল থেকে নখ—সবকিছুই এ সময় যত্ন চায় রুক্ষতার হাত থেকে বাঁচতে। সৌন্দর্যচর্চার বিষয়টি শুধু নারীদের এখতিয়ারে, এ ধারণা এখন আর চলে না। তবে পুরুষেরা নিজেদের সৌন্দর্যচর্চার ব্যাপারে থাকেন উদাসীন। ৩০ পেরোনো পুরুষদের এ উদাসীনতা মনে হয় একটু বেশি। অথচ একটু নিয়ম মেনে চললেই নিজেকে সতেজ রাখতে পারেন নিজেকে।
চলচ্চিত্র অভিনেতা ফেরদৌস বলেন, সব বয়সের মানুষেরই শরীর ও ত্বকের যত্ন নেওয়া উচিত। আর নিজের সতেজতা ধরে রাখতে খাবার একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ ক্ষেত্রে সবারই তাজা শাকসবজি খাওয়া উচিত। এ সময়ে ভোরের কুয়াশামাখা বাতাস শরীরকে সতেজ করে। তাই অন্যদের মতো ৩০ পেরোনো পুরুষদেরও সকালের বাতাসে হাঁটাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এ ছাড়া শুষ্ক ত্বকে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বক থাকবে ঝরঝরে।
৩০ পেরোনোর পর শরীরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হতে থাকে। এগুলোর মধ্যে ত্বকের রং পরিবর্তন হওয়া, কপালে বলিরেখা পরা, চোখের নিচে কালো দাগ হওয়া, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া বা চুল পড়ার সমস্যা খুব সাধারণ। এসব সমস্যার কারণে ৪০ বছরের মধ্যেই বুড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু নিয়মিত শরীরের একটু যত্ন নিলে নিজেকে বাঁচিয়ে বয়সটাকেও ধরে রাখা যায়। নিজেকে তরতাজা, চিরসবুজ দেখতে কে না চায়, বলুন? কাজেই একেবারে উদাসীন না থেকে নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যের প্রতি কিছুটা হলেও সময় ব্যয় করে দেখতে পারেন।
ছেলেদের সৌন্দর্যচর্চাকেন্দ্র হেয়ারোবিক্সের রূপ পরামর্শক শাদীন মাহবুব বলেন, ‘মধ্যবয়সে শরীরের যত্ন নেওয়াটা অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। শীতের আগেই নিজের প্রতি বাড়তি যত্ন নেওয়া শুরু করতে হবে।’
এই বয়সে ত্বকের উপরিভাগে জৈবিক তেলের সরবরাহ কমতে থাকে। ফলে ত্বক আগের টানটান ভাব হারিয়ে কিছুটা শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাই সব সময় খেয়াল রাখবেন আপনার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব যেন কোনো কিছুতে হারিয়ে না যায়।
এ সময়ে মধ্যবয়সীদের যেসব বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে, তার একটি তালিকা তৈরি করে দিয়েছেন রূপ পরামর্শক শাদীন মাহবুব।
শাদীন মাহবুবের পরামর্শ
এই বয়সে ত্বকের উপরিভাগে জৈবিক তেলের সরবরাহ কমতে থাকে। ফলে ত্বক আগের টানটান ভাব হারিয়ে কিছুটা শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাই সব সময় খেয়াল রাখবেন আপনার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব যেন কোনো কিছুতে হারিয়ে না যায়।
ক্ল্যারিফাই ক্লিনজারের পরিবর্তে তুলনামূলক কোমল ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন।
শেভের সময় ফোম ব্যবহার না করে অ্যান্টি অ্যাজিং ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন।
ক্লিনজিং টোনার ব্যবহার না করে ক্লিনজিং মিল্ক ব্যবহার করুন।
যেকোনো প্রসাধনী ব্যবহার করার আগে তাতে অ্যালকোহলের মাত্রা যেন তুলনামূলক কম থাকে, সেটি দেখে নেবেন।
মাসে অন্তত দুবার ভালো কোনো রূপ বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে ফেসিয়াল করিয়ে নিন।
শীত পড়লে রাতে ভিটামিন এ–সমৃদ্ধ ভালো ব্র্যান্ডের কোনো নাইট ক্রিম মুখে লাগিয়ে শোবেন।
গোসলের পরে সারা গায়ে ময়েশ্চারাইজার লোশন লাগাতে ভুলবেন না।
খাদ্যাভ্যাসে ফলমূল, শাকসবজি ও পানির মাত্রা বাড়িয়ে নিন।
যেকোনো ধরনের বাদাম খেতে পারেন। বাদাম চুল ও ত্বকের জন্য বেশ উপকারী।
যত দূর সম্ভব দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলুন।
প্রতিদিন কমপক্ষে আট ঘণ্টা ঘুমান।
প্রতিদিনের রুটিনে ইয়োগা অথবা হালকা ব্যায়াম রাখুন।