নাক-কথন

নাকের ত্বক চর্চা করা প্রয়োজন নিয়মিত। মডেল: মিশু, কৃতজ্ঞতা: ভোগ লাইফস্টাইল লাউঞ্জ, ছবি: নকশা
নাকের ত্বক চর্চা করা প্রয়োজন নিয়মিত। মডেল: মিশু, কৃতজ্ঞতা: ভোগ লাইফস্টাইল লাউঞ্জ, ছবি: নকশা

চেহারা দেখলেই নাক চোখে পড়ে। অবধারিতভাবেই সৌন্দর্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ নাক। কেউ আবার পরেন নাকফুল। নাক সাজালেন কি না–সাজালেন, তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নাকের সার্বিক যত্ন। নাকের যত্ন নিলে পুরো মুখের ত্বকের যত্ন নেওয়া হবে, মৃত কোষ দূর হবে, ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। প্রতি সপ্তাহে না পারলেও দুই সপ্তাহ অন্তর যত্ন নেওয়া উচিত।

ঢাকার ভোগ লাইফস্টাইলের বিউটি ইনচার্জ সুলতানা মুন্নি বলেন, দু–তিন দিন অন্তর নাকের ত্বকে স্টিম বা ধোঁয়া দিয়ে স্ক্রাবিং করলে নাকের ত্বক পরিষ্কার থাকে, মৃত কোষ সরে যায়। ব্ল্যাকহেডস থাকলে তা-ও কমে আসে। এর জন্য পাত্রে গরম পানি নিয়ে ৮-১০ মিনিট ধোঁয়ায় নাক রাখতে হবে। এরপর ১ চা-চামচ চিনি, আধা চা-চামচ মধু ও ১ চা-চামচের সিকি ভাগ পরিমাণ লেবুর রসের মিশ্রণ নাকে লাগিয়ে রাখুন ৫ মিনিট। এরপর আঙুল দিয়ে আলতোভাবে ঘষে তুলে ফেলুন। ধুয়ে ফেলুন। তবে অতিসংবেদনশীল ত্বকের ক্ষেত্রে লেবুর রসের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া কিংবা একেবারে বাদ দিয়ে দেওয়াই ভালো। 

ধাপ ১
ম্যাসাজ ক্রিম দিয়ে ১ মিনিট আলতোভাবে নিচ থেকে ওপর দিকে মালিশ করুন পুরো মুখ। এরপর হালকা গরম পানিতে ভেজানো তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলুন।

ধাপ ২
ধাপ প্রথম ধাপের পুনরাবৃত্তি করুন একবার।

ধাপ ৩
স্ক্রাবিং করুন। বাজারের স্ক্রাব বেছে নিতে পারেন। কিংবা বাড়িতে তৈরি করতে পারেন স্ক্রাব। ১ টেবিল চামচ চালের গুঁড়া কিংবা সুজির সঙ্গে সমপরিমাণ কাঁচা তরল দুধ দিয়ে স্ক্রাব তৈরি করুন। স্ক্রাবিং শেষে আবার হালকা গরম পানিতে ভেজানো তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলুন।

ধাপ ৪
এবার প্যাক লাগাতে হবে। অন্তত ১৫ মিনিট রেখে এরপর মুখ ধুয়ে ফেলুন।  

মনে রাখুন

● শসা ও আপেলের প্যাক এক দিন আগে তৈরি করে রাখতে চাইলে ডিপ ফ্রিজে রাখতে হবে। অন্যগুলোও চাইলে ফ্রিজে রাখা যায়, তবে ডিপ ফ্রিজে নয়।

● স্ক্রাব বা প্যাক ব্যবহারের সময় নাকফুল খুলে রাখুন।

● ১৫ দিন অন্তর বিউটি পারলারে যাওয়া ভালো। তাতে ডিপ ক্লিনিং ও ফেস ম্যাসাজের দিকগুলো ঠিকঠাক করানো হবে।

নাকের ত্বক চর্চা করা প্রয়োজন নিয়মিত। মডেল: মিশু, কৃতজ্ঞতা: ভোগ লাইফস্টাইল লাউঞ্জ, ছবি: নকশা
নাকের ত্বক চর্চা করা প্রয়োজন নিয়মিত। মডেল: মিশু, কৃতজ্ঞতা: ভোগ লাইফস্টাইল লাউঞ্জ, ছবি: নকশা

যা করবেন না

● নাকে পাউডার–জাতীয় শুষ্ক প্রসাধন ব্যবহার না করাই ভালো। এগুলোতে ত্বকে ময়লা আটকে যায়, স্বাভাবিক এবং প্রয়োজনীয় ক্ষুদ্র ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়।

● মুখ বা নাকের ত্বক মালিশের সময় বা কিছু ঘষে তোলার সময় কখনোই ওপর থেকে নিচের দিকে টানবেন না। খুব জোরে ঘষাঘষি করবেন না, বরং আলতো হাতে মালিশ করুন।

● রোজ মুখ পরিষ্কারের সময় নাকের পরিচ্ছন্নতাকে অবহেলা করবেন না।

● সানস্ক্রিন সামগ্রী ব্যবহারের সময় নাকে দেওয়ার কথা ভুলবেন না।  

প্যাকগুলো যেমন হতে পারে—

● ১ টেবিল চামচ দুধের সরে ১০-১২টি জাফরানের পাপড়ি দিন (জাফরান আগে থেকে ভিজিয়ে রাখার প্রয়োজন নেই)। চাইলে আধা চা-চামচ মধু যোগ করতে পারেন। জাফরান যোগ করার পর অন্তত ১২ ঘণ্টা ফ্রিজে রাখুন (তবে ৩-৪ দিনের বেশি সময় নয়)। প্যাক ব্যবহারের আগে নেড়েচেড়ে নিন।

● ১ টেবিল চামচ চন্দনগুঁড়া, ১০-১২টি জাফরানের পাপড়ি ও ১ টেবিল চামচ (বা পরিমাণমতো) কাঁচা দুধ মিশিয়ে প্যাক তৈরি করা যায়। এরপর এক থেকে দেড় ঘণ্টা রেখে দিয়ে (ফ্রিজে বা বাইরে) ব্যবহার করতে হবে।

● ১ টেবিল চামচ মধু ও ১ টেবিল চামচ চন্দনগুঁড়ার সঙ্গে পরিমাণমতো কাঁচা দুধ মিশিয়ে প্যাক তৈরি করতে পারেন।

● এগুলোর কোনোটি সম্ভব না হলে ১ টেবিল চামচ শসাকুচি, ১ টেবিল চামচ আপেলকুচি ও সামান্য কমলার রস দিয়ে প্যাক তৈরি করুন। ত্বক সংবেদনশীল হলে এবং ব্রণ থাকলে কমলার রস বাদ দিতে হবে। ব্রণ থাকলে শসাকুচি উপকারে আসবে।