চোখের রং
‘নীলাঞ্জনা ওই নীল নীল চোখে চেয়ে দেখো না’ অথবা ‘কালো মেয়ের কালো হরিণ চোখ’; কত রঙের চোখেরই না বন্দনা করা হয়েছে কবিতায়, গানে। প্রকৃতিপ্রদত্ত যদি নাও হয় ক্ষতি নেই; কন্টাক্ট লেন্স তো আছেই। যার বদৌলতে চাইলেই নিজের পছন্দের রঙের চোখের মণি বেছে নিতে পারেন। কখনো কালো তো কখনো বাদামি নয়তো ধূসর।
মডেল ও অভিনেত্রী আইরিন আফরোজ জানালেন, শুটের সময় ছাড়া যদিও তিনি খুব একটা কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন না, তবে এটি তাঁর পরতে ভালোই লাগে। তাঁর মতে, চোখের মণির রং পাল্টে দিতে পারে পুরো চেহারা। খুব সাধারণ সাজের সঙ্গেও কেবল সুন্দর রঙের লেন্সটা পরে নিলে জমকালো একটা ভাব চলে আসে। বিশেষ করে পশ্চিমা ঢঙের পোশাকের সঙ্গেই তিনি লেন্স বেশি পরেন। তিনি বলেন, ‘শ্যামল বরণ মেয়েদের যে রঙের লেন্সে মানায়, তা দেখেই আমি লেন্সের রং বেছে নিই।’ হ্যাজেল, হানি হ্যাজেল, টারক্যুইজ রং বাছাই করেন কোনো জমকালো পার্টি বা ফটোশুটের সময়। এ ছাড়া ঘরোয়া কোনো অনুষ্ঠানে পড়েন ধূসর অথবা বেগুনি আভার লেন্স।
লেন্স কী রঙের বাছাই করবেন, তা নির্ভর করবে গায়ের এবং চুলের রঙের ওপর। বিভিন্ন দোকান ঘুরে বিক্রয়কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল হাল ফ্যাশনে কন্টাক্ট লেন্সের মধ্যে গ্রে, স্টার্লিং গ্রে, অ্যামেথিস্ট, টারক্যুইজ, বাদামি, পিওর হ্যাজেল, হানি হ্যাজেল রংগুলোই বেশি চলছে। লেন্সের গায়ে ইংরেজিতে লেখা এই রংগুলো দেখেই কেনা হচ্ছে। সবুজ ও নীল সাধারণত আমাদের দেশে কমই চলে।
মডেল অর্পিতা আলম পাওয়ার লেন্স ব্যবহার করেন। অর্থাৎ চশমার বিকল্প হিসেবে লেন্স পরেন। তাঁর মতে, ধূসর রং সব ধরনের পোশাক ও গায়ের রঙের সঙ্গেই মানিয়ে যায়। ধূসরের মধ্যেও আছে নানা ভাগ। তাঁর পছন্দ হাইলাইট কুল গ্রে। এটি ছাড়াও বাদামি, হ্যাজেল ইত্যাদি রং পরেন। বেশি জমকালো ভাব আনতে মাঝেমধ্যে পরেন হাইলাইট কুল হ্যাজেল। লেন্স যে রঙেরই হোক, তা নির্বাচন করার আগে বিশেষজ্ঞর কাছ থেকে চোখ দেখিয়ে নিতে ভোলেন না তিনি।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ এ কে এম ওমর শরীফ কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার নিয়ে দিয়েছেন পরামর্শ দিয়েছেন।
কন্টাক্ট লেন্স যাদের এড়িয়ে চলা উচিত
অ্যালার্জি থাকলে
চোখে জীবাণু সংক্রমিত হলে
অতিরিক্ত ধুলা-বালুময় পরিবেশে কাজ করতে হলে
যদি চোখে ব্যথা করে
আলোতে চোখ সংবেদনশীল হলে
লেন্স পরার পর ঝাপসা দেখলে
বিশেষজ্ঞের মতে, লেন্স একটানা সর্বোচ্চ আট ঘণ্টার বেশি সময় ধরে পরে থাকা উচিত নয়। পাওয়ার লেন্স হলে অবশ্যই কোনো চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে লেন্স নির্বাচন করা উচিত। লেন্স পরার এবং ব্যবহার শেষে খুলে রাখার সময় খুব ভালোমতো সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে তারপর মুছে শুকনো হাতে এটি স্পর্শ করতে হবে। লেন্স পরে কখনোই ঘুমানো যাবে না। ব্যবহার শেষে এটি সলিউশনে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
কিছু সতর্কতা
লেন্স কেনার আগে তার মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ নিশ্চিত হয়ে নিন। ক্ষেত্রবিশেষে এর মেয়াদ ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত থাকে।
লেন্সের সলিউশন খোলার পর তিন মাসের বেশি ব্যবহার করা যায় না।
একজনের ব্যবহার করা কন্টাক্ট লেন্স কোনো অবস্থাতেই আরেকজন ব্যবহার করবেন না।
অপরিচ্ছন্ন হাতে এটি স্পর্শ করা উচিত নয়। খোলার সময় নখ দিয়ে খুঁচিয়ে উঠানো যাবে না।