গরম মানেই রোদ আর ঘাম। তাই পায়ের আরামের জন্য খোলা স্যান্ডেলই হয়ে ওঠে বিশেষ পছন্দ। এতে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায় পায়ের ত্বক আর দেয় ফুরফুরে একটা আমেজ। কিন্তু এত রোদ, ঘাম আর ধুলা–ময়লায় করে দেয় নতুন নতুন সমস্যা।
গরমে পায়ের অনেক ধরনের সমস্যার মধ্যে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস সংক্রমণের সমস্যা হয় সব থেকে বেশি। এ ছাড়া রোদে চামড়া পোড়া, পা ফাটা, মরা চামড়া ওঠার মতো সমস্যাও রয়েছে। কিন্তু গরমে কী করলে পায়ের রং ও ত্বক থাকবে উজ্জ্বল ও কোমল, সেটা জানা জরুরি।
পরিষ্কার পা
গরমে আর্দ্রতা বেশি থাকে বলে ঘাম হয়ে থাকে। ফলে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। আর ঘামে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির কারণে গন্ধ হয়। তাই পা পরিষ্কার রাখা সব থেকে ভালো সমাধান। দিনে একবার হলেও গরম পানি ও সাবান দিয়ে পা পরিষ্কার করা জরুরি। আর সপ্তাহে একবার সাবান–পানিতে পা ভিজিয়ে ভালোমতো পেডিকিউর করতে হবে।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার
গরম হলেও পায়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের বিকল্প নেই। আবার ত্বক তৈলাক্ত বা স্বাভাবিক হলেও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা চাই। কারণ, পায়ের ত্বক শুষ্ক থাকলেই শুরু হবে পা ফাটা ও মরা চামড়া ওঠা। তাই সব থেকে ভালো পা ধোয়ার সঙ্গে সঙ্গে ময়েশ্চারাইজার লাগানো। আর খুব বেশি পা ফাটা থাকলে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করে মোজা পরে রাতে ঘুমাতে হবে।
পায়ের পাতার যত্ন
কেবল পায়ের ওপরের দিকের যত্ন ও গোড়ালির যত্নে পা সুন্দর থাকবে না, পায়ের পাতার যত্নও নিতে হবে। সেটাও সমান জরুরি। পায়ের এই অংশে সব থেকে বেশি চাপ পড়ে এবং হাঁটতে গেলেও বেশি ঘষা লাগে। তাই এই জায়গার ত্বকের যত্নে বিশেষভাবে নজর দেওয়া প্রয়োজন। প্রতিদিন গোসলের সময়ে ঝামা–পাথর দিয়ে ঘষে ময়লা ও মরা চামড়া তুলে ফেলতে হবে।
শুকনা জুতা, শুকনা মোজা
এই সময়ে পা সুন্দর রাখতে চাইলে অবশ্যই প্রতিদিনের ব্যবহার করা জুতা পরিষ্কার করে তবেই পরতে হবে। এ ছাড়া এক মোজা প্রতিদিন পরা যাবে না। বরং প্রতিদিনই ধোয়া ও শুকানা মোজা পরতে হবে। ভেজা জুতা ও মোজা একেবারেই পরা যাবে না। কারণ, তাতে ছত্রাক সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়ে। সঙ্গে দুর্গন্ধ তো আছেই। সে ক্ষেত্রে বাইরে গেলে আরেক জোড়া জুতা, মোজা রাখা বুদ্ধির কাজ হবে।
পেডিকিউর করা
পায়ের যত্নে পেডিকিউর সব থেকে ভালো উপায়। পায়ের কয়েক ধরনের যত্ন একই সময় করা যায়। সামগ্রিকভাবে সেটাই পেডিকিউর। এই যত্নে মধ্যে রয়েছে পায়ের ফাটা ও মরা চামড়া পরিষ্কার করা, নখের যত্ন নেওয়া, পা পরিষ্কার করা ও ময়েশ্চারাইজার লাগানো। এর জন্য বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং ঘরে বসেই করে নেওয়া যাবে। আর সপ্তাহে এক দিন সেটা করা প্রয়োজন। সারা সপ্তাহ যে পা দুটিকে আমরা ব্যস্ত রাখি, তাদের জন্য একটা দিন মাত্র কিছুক্ষণ সময় দেওয়াই যেতে পারে।
পায়ের নেইলপলিশ তোলা
নেইলপলিশে সুন্দর ও ফ্যাশনেবল দেখায় পা। কিন্তু এই গরম, এই বৃষ্টির সময়টাতে অনেক দিন নখে নেইলপলিশ রাখা নখের জন্য অস্বাস্থ্যকর। ওপরের এই প্রলেপের কারণে নখে প্রয়োজনীয় আলো লাগে না, আবার সঠিক পরিমাণে অক্সিজেনও পায় না। ফলে নখের রং বিবর্ণ ও শুষ্ক হয়ে যায়।
পুরোনো জুতা না পরা
পায়ের জন্য পুরোনো জুতা একেবারেই ভালো নয়। অনেক দিন ব্যবহারের ফলে জুতার সোল শক্ত হয়ে যায়, যা পাব্যথা হওয়ার অন্যতম কারণ। এ ছাড়া পুরোনো জুতা পরলে অনেক সময় পায়ে দাগ হয়ে যায়।
খালি পায়ে না থাকা
অনেকেই হয়তো জানি না খালি পায়ে থাকা পায়ের জন্য বেশ বড় একধরনের অযত্ন। ঘরে বা অফিসে খালি পায়ে থাকলে পায়ে ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস সংক্রমণ হতে পারে, যা থেকে চুলকানি বা র্যাশের সমস্যা সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া খালি পায়ে থাকা মানেই বেশি বেশি পা ফাটা।
গরম ও বৃষ্টির এই সময়ে সহজ কিছু যত্নে পায়ের স্বাস্থ্য রাখা যায় ভালো। এতে বাড়বে পায়ের সৌন্দর্যও। তবে বিশেষ প্রয়োজনে অবশ্যই নিতে হবে চিকিৎসকের সাহায্য।