সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে বহুকাল ধরেই নারীর প্রথম পছন্দ বিভিন্ন প্রসাধনসামগ্রী। প্রসাধনের জনপ্রিয়তা এখনো একই। কত ধরনের, কত রকমের প্রসাধন যে এখন খুঁজে পাওয়া যায়, তার হিসাব মেলানো মুশকিল। মেকআপের ক্ষেত্রে যেসব প্রসাধনী এখন বেশি জনপ্রিয়, তার মধ্যে হাইলাইটার অন্যতম। তবে হাইলাইটার ব্যবহারে রয়েছে নানা জটিলতা। এটি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না পারলে হিতে বিপরীত ঘটতে পারে।
হাইলাইটার মূলত মুখের ত্বক নরম ও উজ্জ্বল দেখাতে সাহায্য করে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, নিখুঁতভাবে হাইলাইটার ব্যবহারের জন্য, আগে বেশ কয়েক দিন প্র্যাকটিস করে নিতে হয়। এ ছাড়া নিজের ত্বকের রং এবং ধরন সম্পর্কেও জানা থাকতে হবে। সে অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে হাইলাইটার। যেমন, ত্বক যদি তেলতেলে হয়, তা হলে পাউডার হাইলাইটার ব্যবহার করা উচিত। ত্বক শুষ্ক ধরনের হলে বেছে নিতে হবে তরল হাইলাইটার। কারণ, প্রতিবার হাইলাইটার দিয়ে ত্বক উজ্জ্বল করার ঝামেলা অনেক।
কেননা নির্দিষ্ট সময় পর তা সঠিকভাবে পরিষ্কার করে নিতে হয়। হাইলাইটার পণ্যগুলোর দামও বেশ বাড়তি। তাই বেছে নেওয়া উচিত প্রাকৃতিক উপাদান, যেমন অ্যালোভেরা। অনেকেই হয়তো জানেন না, অ্যালোভেরা একটি প্রাকৃতিক হাইলাইটার, যা ত্বকের জন্যও নিরাপদ। প্রাকৃতিক উপাদান বা উপকরণ নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে যে কেউ প্রাকৃতিকভাবেই মুখের ত্বক হাইলাইট করে নিতে পারেন।
অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী প্রাচীনকাল থেকেই পুরো পৃথিবীতে রূপচর্চার এক সমাদৃত উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট যা ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া, ব্রণের দাগ দূর করা, ট্যান দূর করার মতো নানা রকম সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করে। তবে এর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা হলো, এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে ত্বকে আসে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা, যা দেখে অনেকটাই হাইলাইটারের মতো মনে হয়।
অ্যালোভেরার ব্যবহার খুব সহজ আর সময়ও বেশি লাগে না। একটা অ্যালোভেরার পাতা কিনে তা ছোট টুকরা করে এক পাশের খোসা ছাড়িয়ে ভালোমতো ধুয়ে ব্যবহার করতে হবে। অনেকের হয়তো অ্যালোভেরা ব্যবহারের ফলে নানা রকম অ্যালার্জির সমস্যা দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে, ব্যবহারের আগে অল্প একটু অ্যালোভেরা নিয়ে তা হাতের ওপর বা গলার ওপর দিকটায় একটু লাগিয়ে দেখতে হবে, তা আপনার ত্বকের সঙ্গে মানিয়ে যাচ্ছে কি না।
ত্বককে উজ্জ্বল আর প্রাকৃতিকভাবে লাবণ্যময় করে তুলতে অ্যালোভেরার ব্যবহার শুরু করতে পারেন। বাজারে অ্যালোভেরার স্টেম পাওয়া যায়। আপনারা চাইলে সেগুলো কিনে ব্যবহার করতে পারেন।
ত্বক ও চুলের যত্নে অ্যালোভেরা বেশ কার্যকর। যেমন যাঁদের চুল খুব শুষ্ক এবং মাথার ত্বকে অ্যালার্জি বা চুলকানি দেখা দেয়, তাঁরা এটি ব্যবহার করতে পারেন। অ্যালোভেরার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান চুল পড়া ও খুশকির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এমনকি চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতেও এটি কার্যকর। সে জন্য অ্যালোভেরার রসের সঙ্গে আমলকীর রস মিশিয়ে নিয়মিত চুলে লাগাতে হবে। ত্বকের যত্নেও অ্যালোভেরার জেল ব্যবহৃত হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। ত্বকের র্যাশ, চুলকানি, রোদে পড়া দাগ দূর করতেও অ্যালোভেরা অতুলনীয়।