রোদ যেভাবে ত্বকের উপকার করে
রোদে থাকলে ত্বক নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। বিশেষত দুপুরের কড়া রোদ যে ত্বকের জন্য ভালো নয়, এ কথা অনেকেই বলে থাকেন। তাই তো সানস্ক্রিনসামগ্রীর কথা বলা হয় বারবার। কথাটা পুরোপুরি ভুল নয়, আবার পুরোপুরি ঠিকও নয়! কি দ্বন্দ্বে পড়ে গেলেন তো? ব্যাপারখানা আরেকটু খোলাসা করে বলা যাক।
চর্মরোগবিশেষজ্ঞ ডা. ইসরাত খান বলছিলেন, ‘ত্বকের সুস্থতার জন্য ভিটামিন ডি আবশ্যক। খাবারদাবার থেকে এই প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানটি পাওয়ার সুযোগ বেশ কম। রোদ থেকে পাওয়া যায় ভিটামিন ডি। তাই রোদ আমাদের বন্ধু। ত্বকের সুরক্ষার জন্য সব সময় রোদ এড়িয়ে চললেই হবে না, ত্বকে রোদও লাগাতে হবে ঠিকঠাক।
ভিটামিন ডি ত্বকের জন্য কেন প্রয়োজন জানালেন এই চিকিৎসক:
ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। পরিবেশের নানা ধরনের দূষণকারী পদার্থের কারণে আমাদের ত্বকে প্রদাহ হতে পারে। প্রদাহের ফলে ত্বকে লালচে ভাব দেখা যায়, ত্বক ফুলেও যেতে পারে। ভিটামিন ডি প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। ফলে ত্বক থাকে সুস্থ।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতার ওপরেও ভিটামিন ডির প্রভাব রয়েছে। শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি থাকলে আপনার ত্বকে নানা ধরনের জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যাবে।
ভিটামিন ডি অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবেও কাজ করে। অর্থাৎ শরীরে সঠিক মাত্রায় ভিটামিন ডি থাকলে ত্বকে বয়সের ছাপও কম পড়বে।
শরীরে ভিটামিন ডির মাত্রা ঠিক না থাকলে হাড়ক্ষয়ের প্রবণতা বাড়ে। হাড় ক্ষয়ে যেতে থাকলে এর ওপরকার পেশি ও ত্বক ঝুলে পড়তে পারে সহজেই। তাই ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতেও হাড়ক্ষয় প্রতিরোধ করতে হবে। ভিটামিন ডির মাত্রা রাখতে হবে ঠিকঠাক।
করণীয়
সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টার মধ্যে ন্যূনতম ১৫ মিনিটের জন্য রোদে যান। অন্তত দুই হাত ও দুই পায়ের বেশ খানিকটা অংশে রোদ লাগান। মনে রাখতে হবে, ত্বকে সানস্ক্রিনসামগ্রী প্রয়োগ করা হলে কিন্তু রোদ থেকে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পাওয়া যায় না। তাই মুখের ত্বকে সানস্ক্রিনসামগ্রী প্রয়োগ করলেও হাত-পায়ে সানস্ক্রিনসামগ্রী রাখবেন না এই ১৫ মিনিট। ঘরের ভেতর কিংবা বারান্দায় যদি সরাসরি রোদ আসে, তাহলে ঘরে বা বারান্দায় এটুকু সময় রোদে বসে থেকেও ভিটামিন ডি পেয়ে যাবেন।
তবে শহুরে বাড়িতে সেই সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তাই যেতে পারেন ছাদে। সেখানে রোদে বসতে পারেন, হাঁটতে পারেন। ১৫ মিনিট রোদে বসে বই পড়ুন, অডিও ক্লিপ শুনুন কিংবা অন্য কিছু করুন। বিশ্বাস করুন, রোদ শত্রু নয়, পরম বন্ধু।