‘কমার্স কলেজে সায়েন্সে পড়ি’
‘কমার্স কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ি শুনে অনেকেই চমকে যায়।’ বলছিল ঢাকা কমার্স কলেজের ছাত্র রাফিদ আওসাক। তার ভাষ্য, ‘আমার মামা এই কলেজে পড়েছেন। ছোটবেলায় তাঁর সঙ্গে কলেজে ঘুরতে এসেছিলাম। তখন এত বড় ক্যাম্পাস দেখে দারুণ লেগেছিল। ভবিষ্যতে যেহেতু প্রকৌশলী হতে চাই, শুরুতে ভেবেছিলাম এখানে পড়ার সুযোগ হয়তো হবে না। পরে যখন জানলাম কলেজে বিজ্ঞান নিয়েও পড়ার সুযোগ আছে, ভর্তি হয়ে গেলাম।’ রাফিদের মতো আরও অনেক শিক্ষার্থীই ঢাকা কমার্স কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হচ্ছে।
রাফিদের সহপাঠী মেহরান রাফি, সাদমান রাকিবদের সঙ্গেও কথা হলো। তারাই জানাল, শুধু যে বিজ্ঞান বিভাগ আছে, তা-ই নয়, কলেজের আইটি ক্লাব, বিজ্ঞান ক্লাব, নেচার স্টাডি ক্লাবগুলোও বেশ সক্রিয়। গণিত অলিম্পিয়াড, বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডসহ নানা আয়োজনে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে কলেজের শিক্ষার্থীরা।
১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা কমার্স কলেজে বিজ্ঞান শাখা চালু হয় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে। কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান সফিক আহমেদ সিদ্দিক বলেন, ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় আমরা বেশ ভালো ফল পাচ্ছি। বিজ্ঞাননির্ভর আধুনিক সব শিক্ষার সুযোগ ঢাকা কমার্স কলেজে আছে।’ কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবু মাসুদ বলেন, ‘এখন তো বিজ্ঞানের যুগ। আপনি ব্যবসায় শিক্ষায় পড়েন বা মানবিকে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতেই হবে। ল্যাব–সুবিধা, বিজ্ঞানভিত্তিক বিভিন্ন সৃজনশীল আয়োজনে অংশগ্রহণ, দক্ষ শিক্ষকের মাধ্যমে পাঠদানসহ নানা উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।’
পদার্থবিজ্ঞান ল্যাবে কথা হলো আদ্রিতা সাহা, প্রজ্ঞা ইসলাম, মুশফিকুর রহমান, সামিয়া আক্তার, রাউফু রহমানসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে। আদ্রিতা বলল, ‘আমাদের কলেজে বিজ্ঞান বিভাগের ব্যবহারিক অংশটাতে খুব জোর দেওয়া হয়। ক্লাসরুমে যা শিখি, ল্যাবে তা পরীক্ষা করার সুযোগ পাই। আমি ভবিষ্যতে প্রকৌশলী হতে চাই।’
ঢাকা কমার্স কলেজে বিজ্ঞান বিভাগ চালু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত তিনটি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ২০২১ সালে প্রথমবার উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১ হাজার ৮৬ জন পরীক্ষায় অংশ নেন, পাস করেন ১ হাজার ৮১ জন। পাসের হার ৯৯ দশমিক ৫৪। সেবার জিপিএ–৫ পেয়েছিলেন ৬৬৮ জন। অথচ ভর্তির সময় এসএসসিতে জিপিএ–৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৮০। ২০২২ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১ হাজার ৫২৭ জনের মধ্যে পাসের হার ছিল ৯৯ দশমিক ৬১। জিপিএ–৫ পেয়েছেন ১ হাজার ১৫৯ জন।