চারুকলায় চিত্রকর্ম বিক্রি করে চলছে তহবিল সংগ্রহ
আজ রোববার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটে গিয়ে দেখা গেল, প্রবেশমুখেই একদল শিক্ষার্থী বসেছেন চেয়ার-টেবিল পেতে। এক শিল্পীর মুখোমুখি বসেছেন এক তরুণী। তাঁর ক্যারিকেচার আঁকা হচ্ছে। ক্যারিকেচারের বিনিময়ে যে টাকা মিলছে, সবই যোগ করা হচ্ছে বন্যার্তদের জন্য সংগৃহীত তহবিলে।
একেকটা ক্যারিকেচার করতে কত টাকা নিচ্ছেন? এক শিল্পীর কাছ থেকে উত্তর এল, ‘যে যা দিচ্ছেন, তা–ই নিয়ে নিচ্ছি। নির্দিষ্ট কোনো অর্থের বিনিময়ে নয়। এই যেমন গতকাল আমরা ক্যারিকেচার এঁকে ১৫ হাজার টাকা পেয়েছি। আর এখন পর্যন্ত (বেলা ২টা) ৭ হাজার হয়েছে। আশা করছি, আজ হাজার বিশেক টাকা হবে।’ অনেকেই, বিশেষ করে তরুণেরা পছন্দ করেছেন এই আইডিয়া। দুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে, বিকেল বা সন্ধ্যা হলেই শিল্পীদের সামনে লাইন লেগে যাচ্ছে।
চারুকলার ভেতরে পা বাড়ালাম। অনেক শিক্ষার্থী ও শিল্পী তাঁদের বিভিন্ন সময়ে আঁকা ছবি বিক্রির জন্য তুলে দিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবীদের হাতে। কেউ কেউ নতুন করেও ছবি আঁকছেন। এক হাজার থেকে শুরু করে লাখ টাকার চিত্রকর্মও আছে সেখানে। এই সব ছবি বিক্রির টাকাও চলে যাচ্ছে বন্যায় আক্রান্তদের সহায়তায়। আজ দুপুরে গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী দুর্জয় গোস্বামী জানান, শনিবার পর্যন্ত অর্থাৎ প্রথম তিন দিনে তাঁরা বিভিন্ন চিত্রকর্ম বিক্রি করে সাত লাখ টাকার তহবিল সংগ্রহ করেছেন।
জয়নুল গ্যালারির একটা অংশ ভরে উঠেছে ত্রাণসামগ্রীর বস্তায়। ভেতরে আছে পানি, শুকনা খাবার, স্যালাইন, পোশাকসহ নানা কিছু। কোন বস্তায় কী, তা লেখা রয়েছে বস্তার গায়ে। বস্তাগুলো একে একে গ্যালারির ভেতর থেকে খোলা করিডরের একটা অংশে এনে রাখা হচ্ছে। এরপর সেগুলো ট্রাকে তোলা হবে। করিডরের আরেক পাশে শিশুদের পোশাক সংগ্রহ করছেন স্বেচ্ছাসেবকেরা।
টিএসসি থেকে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হলেও তা ছড়িয়ে পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায়। আজ সকাল থেকে টিএসসিতে কেবল নগদ অর্থ আর ওষুধ নেওয়া হচ্ছে। তবে কেউ কাপড় বা খাবার নিয়ে এলেও দিয়ে যেতে পারবেন। জিমনেশিয়াম বা ব্যায়ামাগারের মাঠে চলছে খাবার ও পোশাক সংগ্রহের কাজ। চারুকলার শিক্ষার্থীরাও নিজেদের মতো করে ত্রাণ সংগ্রহ করে পাঠাচ্ছেন দুর্গতদের জন্য।