বাংলাদেশের ২ তরুণ পেলেন ডায়ানা লিগ্যাসি অ্যাওয়ার্ড
শতাধিক সমাজসেবী সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন ব্রিটিশ যুবরাজ চার্লসের সাবেক স্ত্রী প্রিন্সেস ডায়ানা। তাঁর স্মরণে সমাজসেবায় যুক্ত তরুণদের দেওয়া হয় ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড। এ বছর সারা বিশ্বের ২০ উদ্যোগী তরুণকে দেওয়া হয়েছে ডায়ানা লিগ্যাসি অ্যাওয়ার্ড। তাঁদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশের দুজন—অলাভজনক সংগঠন অ্যামপ্লিটিউডের প্রতিষ্ঠাতা নাফিরা নাঈম আহমাদ এবং জলবায়ু ও পরিবেশবিষয়ক সংগঠন ইকো-নেটওয়ার্ক গ্লোবালের প্রতিষ্ঠাতা শামীম আহমেদ মৃধা। ১৪ মার্চ লন্ডনের বিজ্ঞান জাদুঘরে তাঁদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছেন ডায়নাপুত্র প্রিন্স উইলিয়াম। নাফিরা ও শামীমের সঙ্গে কথা বলেছেন তানভীর রহমান
দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেল: নাফিরা
‘যখন আমার জীবনের একমাত্র সমস্যা হলো হোমওয়ার্ক শেষ করা, তখন আমার বয়সেরই কেউ হয়তো এক বেলা খাবারের জন্য ইট ভাঙছে,’ এভাবেই নিজের কাজের অনুপ্রেরণার কথা ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরেছেন নাফিরা নাঈম আহমাদ। সমাজের এসব বৈষম্য দূর করতেই নাফিরা গড়েছেন অলাভজনক সংগঠন অ্যামপ্লিটিউড। এই সংগঠনে ৩০ জনের বেশি স্বেচ্ছাসেবী আছেন। সমতা প্রতিষ্ঠা, বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই, ন্যায্য ও ন্যায়সংগত সমাজ গঠনসহ বেশ কিছু লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে নাফিরার সংগঠন।
প্রান্তিক মানুষের জন্য কাজ করা এই উদ্যমী তরুণ বলেন, ‘লিগ্যাসি অ্যাওয়ার্ড পাওয়াটা আমার কাছে অবিশ্বাস্য ছিল। কারণ, ২০২২ সালে যখন ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড পাই, তখন আমার বয়স মাত্র ১৮। ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড পাব, প্রত্যাশা করিনি।
তবে লিগ্যাসি অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার একটা শখ ছিল। আমাকে ডায়ানার লিগ্যাসি হিসেবে চিন্তা করা হচ্ছে, এটা একটা অসাধারণ অনুভূতি। এই অ্যাওয়ার্ড আমাকে প্রেরণা জোগাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। মনে হচ্ছে দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেল।’
অন্য সদস্যদেরও উৎসাহ জোগাবে: শামীম
শামীম আহমেদ মৃধা মূলত পরিবেশকর্মী। ইকো-নেটওয়ার্ক গ্লোবাল নামে তাঁর একটি সংগঠন আছে, যা সঠিক জলবায়ু শিক্ষা নিশ্চিতকরণে কাজ করে। এ ছাড়া জলবায়ু দূত (ক্লাইমেট অ্যাম্বাসেডর) নামে শামীমের একটি দল আছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে জলবায়ু ও পরিবেশবিষয়ক প্রচারণা চালায় দলটি। শামীম জলবায়ু বিপর্যয় প্রতিরোধেও কাজ করেন। ‘মিশন গ্রিন বাংলাদেশ’ নামে তাঁদের একটি প্রকল্প আছে। প্রকল্পের অধীনে ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০ হাজার গাছ লাগাতে চান তাঁরা।
ডায়ানা লিগ্যাসি অ্যাওয়ার্ড জেতা প্রসঙ্গে শামীম আহমেদ বলেন, ‘এই অ্যাওয়ার্ড আমাদের দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। জলবায়ু রক্ষায় আমরা যেন অবদান রাখতে পারি, সমাজের জন্য কিছু করতে পারি—সেই দায়িত্বটা এখন আরও বেশি করে অনুভব করছি। আমরা গত কয়েক বছর ধরেই জলবায়ু নিয়ে কাজ করছি। আমার মনে হয়, এই ধরনের স্বীকৃতি সংগঠনের অন্য সদস্যদেরও উৎসাহ জোগাবে। তাঁরা আরও ভালোভাবে কাজ করবেন।’
প্রিন্স অব ওয়েলসের কাছ থেকে পুরস্কার নেওয়ার সময় কী কথা হলো, জানতে চেয়েছিলাম শামীমের কাছে। বললেন, প্রিন্স উইলিয়াম জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তাঁরা অনেক বেশি উদ্বিগ্ন। তাই তরুণদের এ ধরনের উদ্যোগকে তাঁরা সমর্থন করছেন। তরুণ প্রজন্মের যাঁরা জলবায়ু নিয়ে কাজ করছেন, তাঁরা যেন আরও বেশি উদ্যোগ নেন, সে বিষয়ে উৎসাহ দিয়েছেন তিনি।