বাণিজ্যিক বিমানের রং সব সময় সাদা হয় কেন
হয়তো খেয়াল করেছেন, কোম্পানির লোগো ও আনুষঙ্গিক নকশা ছাড়া বাণিজ্যিক বিমানের প্রায় পুরোটা হয় সাদা। কেন এটা করা হয়? জেনে নেওয়া যাক আসল কারণ।
গত শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত বিমানের গায়ে কোনো রং করা হতো না। বিমানগুলো দেখে মনে হতো যেন চকচকে রুপালি টিউব, ইতিউতি উড়ে বেড়াচ্ছে। এখন অবশ্য বিমান রাঙানো হয়, তবে কেবল সাদা রঙে। আর এই সাদা রঙের ওপরে থাকে কোম্পানির লোগো এবং বিমানের লেজের দিকটায় খানিকটা রঙের ছোপছাপ। অর্থাৎ বাণিজ্যিক বিমানের রং মূলত সাদা। এটা কি শুধু স্টাইল; নাকি প্রতিটি বিমানের অভিন্নতা বজায় রাখতেই এমন সাদামাটা রূপ?
বড় আকারের বাণিজ্যিক বিমানগুলোয় ব্যবহৃত সাদা রং নষ্ট হয়ে যায় খুব দ্রুত। খটকা লাগছে? যে রং দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়, সেই রং দিয়েই কেন তবে বিমান রাঙানো? আপনার মনে খচখচ করতে থাকা এ প্রশ্নের উত্তরে আসছি একটু পর।
উড্ডয়ন থেকে অবতরণ পর্যন্ত একটি বিমানের ওপর দিয়ে বেশ ধকল যায়। একেকটা বিমান ছোটে গড়ে ঘণ্টায় ৮৬০ কিলোমিটার বেগে। ফলে বাহ্যিক কিছু ক্ষয়ক্ষতি তো হয়ই। আঁতকে উঠো না, এই ক্ষতি সামান্য আর যাত্রীদের গায়ে ফুলের টোকাটিও লাগে না। তো এই ওড়াউড়িতে বিমানের গায়ে ছোটখাটো আঁচড় লাগা খুব স্বাভাবিক। মজার বিষয় হলো, বিমানের রং সাদা বলেই এসব আঁচড় বা ত্রুটিগুলো বিমান রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত প্রকৌশলীরা সহজে দেখতে পান।
আরেকটা কারণ আছে। আকাশে ওড়ার সময় বিমানের গায়ে এসে পড়ে প্রচুর পরিমাণ অতিবেগুনি রশ্মি। এ কারণে বিমানের রং নষ্ট হয়ে যায় দ্রুত। তবে এটা তো জানো, সাদা রং অন্য যেকোনো গাঢ় রঙের চেয়ে ধীরে বিবর্ণ হয়। ফলে বিমানের রং সাদা হলেও বিবর্ণ হয় রয়েসয়ে। এ ছাড়া পুরো সাদা রঙের কারণে উড়ন্ত বিমানকে সহজে দেখতে পায় পাখিরা। বিমানগুলোকে সাদায় রাঙানোর এটাও একটা কারণ। যদিও বিমানের আঘাতে পাখির প্রাণ হারানোর ঘটনা বিরল।
৫০ বছরও হয়নি এয়ারলাইনসগুলো বিমান রাঙাতে শুরু করেছে। ১৯৭০–এর দশকে প্রথমবারের মতো বিমানের গায়ে রং চড়িয়েছিল এয়ার ফ্রান্স। আর তার পর থেকে সাদাই হয়ে গেছে বিমানের ‘পোশাক’!
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট