সন্দেহপ্রবণতা ভালো না খারাপ? বিভিন্ন দিক থেকে একে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। ব্যক্তিজীবনের সম্পর্কচর্চায় কিংবা নির্ভেজাল জীবনচর্চায় সন্দেহ-সংশয় হয়তো নেতিবাচক। কিন্তু নতুন জ্ঞান সৃষ্টি বা সত্যান্বেষণে সন্দেহ অতি জরুরি। একটি ফারসি প্রবাদ আছে, সন্দেহই হলো জ্ঞানের চাবিকাঠি। কেননা, কোনো কিছু সম্বন্ধে সন্দেহ না থাকলে অধিকতর জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়।
সন্দেহ নিয়ে আমাদের ভেতর একটি সাধারণ ধারণা আছে। তা হলো—সন্দেহ বিশ্বাসের বিপরীত। অথচ ব্যাপারটি মোটেই তা নয়। এ ক্ষেত্রে জার্মান বংশোদ্ভূত আমেরিকান দার্শনিক পল টিলিকের (১৮৮৬-১৯৬৫) বক্তব্যকে আমলে নেওয়া যেতে পারে। তিনি বলেছেন, সন্দেহ বিশ্বাসের বিপরীত কিছু নয়, বরং এটা বিশ্বাসেরই অংশ।
যেকোনো বিষয় সম্পর্কে বিশ্বাস থাকুক, সমস্যা নেই। তবে পাশাপাশি সংশয় জারি রাখাটাও দরকার। সন্দেহ-সংশয়ের ওপর ভিত্তি করেই সত্য জ্ঞানের প্রসার ঘটে। রোজকার জীবনে যত্রতত্র ব্যবহারে আমরা ‘সন্দেহ’ শব্দটির অর্থই সংকুচিত করে ফেলেছি। সন্দেহ বলতে মূলত নিরীক্ষামূলক চিন্তাভাবনা ও যৌক্তিক অনুসন্ধানকে বোঝায়। প্রশ্ন উত্থাপন ও প্রাপ্ত তথ্যপ্রমাণ যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত সত্যের কাছে পৌঁছাতে হয়। চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে ফেলা কোনো কাজের কথা নয়। জ্ঞানবিজ্ঞানের বড় সব আবিষ্কারের উৎসই তো আসলে সন্দেহ।
আজ ১৩ জানুয়ারি, আন্তর্জাতিক সন্দেহবাদী দিবস। ১৯৯০-এর দশকে এটি প্রথম পালিত হয়। দিনটি কিন্তু পালন করতে পারেন। যা বিশ্বাস করছেন, সেই সব বিশ্বাসের ভিত্তিগুলো সত্যের নিক্তিতে মেপে দেখবেন না একবার!
ডেজ অব দ্য ইয়ার অবলম্বনে