মনের বাক্স
আমাদের বিচ্ছেদের এক বছর পূর্ণ হলো
এই বিভাগে পাঠক তার মনের কথা লিখে পাঠাতে পারেন। নির্বাচিত লেখা ছাপা হবে বুধবারের প্র অধুনাতে। এবার থাকছে ভিন্ন রকম দুটি লেখা
গৃহশিক্ষকের কষ্ট
সবাই বলত, ঢাকায় নাকি ভাগ্য বদলানো যায়। ভাগ্য বদলের জন্যই ২৯০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ঢাকায় এসেছিলাম। তখন রোজার মাস, তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি। পড়ানো শেষ করি বিকেল হওয়ার আগমুহূর্তে, যাতে তাপমাত্রা শরীর ভেদ না করে। করবেই–বা কী করে? এ দেহে তাপমাত্রার চেয়ে যেটা বেশি লেগে আছে সেটা হলো, ভাগ্যবদলের জিনের আসর। বাবা অসুস্থ, মনে হয় এই বুঝি তাঁর দম বন্ধ হয়ে যাবে। মায়ের বিলাপ, কখন বদলাবে আমার ভাগ্যের চাকা? এই বিলাপ এতই প্রখর যে সূর্যের ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রা আর শরীর ভেদ করতে পারে না।
ঈদ ঘনিয়ে আসছে। শুনেছি, ঢাকায় পড়ালে অনেক সালামি পাওয়া যায়। সে আশা আমিও করি বা করছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে আমার পিছুই ছাড়ে না। দুই মাস পড়ানো হয়েছে, এমন এক ছাত্রের পরিবার বলছে, ‘এবার আপনাকে টাকা না দিলে কি সমস্যা হবে?’
রোজার তপ্ত দুপুরে মিষ্টি করে হেসে বললাম, ‘আপনার যদি অভাব থাকে, তাহলে আমার কোনো দুঃখ নেই।’
ঈদের সালামি আমি না পেলেও ওই সব পরিবার আমাদের মতো ক্ষুদ্র গৃহশিক্ষকের টাকা দিয়েই ঈদ করেছে।
করুক তারা ঈদ, আমরা তো এখনো ভাগ্য বদল করতে পারিনি। তাই আমাদের কিসের ঈদ!
এন উদ্দিন, শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ।
আমাদের বিচ্ছেদের এক বছর পূর্ণ হলো
আমাদের পাশের বাড়ির দোতলা ও তিনতলায় মেয়েদের মেস। আমার কয়েকজন বান্ধবীও ওই মেসে থাকে। সেই সূত্রে চলতে-ফিরতে তাদের সঙ্গে কথা হয়। কিন্তু নদীর এসব পছন্দ নয়, কথায় কথায় ঝামেলা বাধে। আমাদের তিন বছরের সম্পর্ক আনন্দ-বেদনা ও সুখ-দুঃখের মধ্য দিয়ে এগোচ্ছিল। কিন্তু গত বছর পয়লা বৈশাখে সব এলোমেলো হয়ে গেল। বান্ধবীর সঙ্গে আমার প্রেম আছে, দাবি তুলে আমাকে মিথ্যা অপবাদ দিল নদী।
আরেকটা পয়লা বৈশাখ পার করলাম। আমাদের বিচ্ছেদের এক বছর পূর্ণ হলো। এর মধ্যে বহুবার বহুভাবে চেষ্টা করেছি, কিন্তু নদীর মনের বরফ গলেনি। কথা শোনা তো দূর, দেখা করতেও রাজি হয়নি। আর কিছু চাওয়ার নেই তার কাছে। কেবল জোর দাবিতে বলতে চাই, নদী, আমি হয়তো একটু উদাসীন, কিন্তু অসৎ নই। আমি তোমাকেই ভালোবেসেছিলাম। ভালোবাসার প্রশ্নে আমার কোনো আড়াল নেই।
সৌমেন্দ্র গোস্বামী, কেশবপুর, যশোর।
লেখা পাঠানোর ঠিকানা
অধুনা, প্রথম আলো, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০–২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ই-মেইল: [email protected], ফেসবুক: facebook.com/adhuna.PA খামের ওপর ও ই-মেইলের subject–এ লিখুন ‘মনের বাক্স’