মনীষার ‘পথচলা’
২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দেওয়া হচ্ছে ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড। পুরস্কারটি প্রবর্তন করেছে প্রিন্সেস ডায়ানার নামে প্রতিষ্ঠিত একটা দাতব্য সংস্থা। ন্যূনতম এক বছর কোনো মানবিক কাজ করেছেন এবং বয়স ৯-২৫ বছরের মধ্যে, এমন উদ্যমী তরুণদেরই কেবল দেওয়া হয় এই পুরস্কার। গত ১ জুলাই ভার্চ্যুয়াল এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঘোষণা করা হলো এই বছরের প্রাপকদের নাম। বিশ্বের নানা দেশের উদ্যমী তরুণদের পাশাপাশি তালিকায় বাংলাদেশি আট তরুণ ‘চেঞ্জমেকার’-এর নামও আছে। পড়ুন এই আট তরুণের একজনের গল্প।
তৃতীয় লিঙ্গ (ট্রান্সজেন্ডার) জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে ২০১৯ সালে অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ‘পথচলা ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’। শুরুটা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরাই করেছিল। পরে করোনাকালে মনীষা মীম নিপুণের নেতৃত্বে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় ‘পথচলা ফাউন্ডেশন’। মাত্র ৯ মাসে ১ হাজার ১১২ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে সেবা দিয়েছে পথচলা। সেবা বলতে খাবার, পোশাক, টাকা, কম্বল, সেলাই মেশিন, ওজন মাপার মেশিনসহ ঈদ উপহার। এ ছাড়া মাস্ক ক্যাম্পিং, কফি হাউস ক্যাম্পিং, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের সুশিক্ষা ব্যবস্থাপনা সভা, করোনা ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পিং, করোনা সচেতনতা ক্যাম্পিং, এইডস সচেতনতা ক্যাম্পিং, কারিগরি প্রশিক্ষণ, জীবনদক্ষতার ওপর প্রশিক্ষণ, মানসিক স্বাস্থ্য সহযোগিতা, ফ্ল্যাশ মব, প্রামাণ্যচিত্রসহ আরও কিছু কর্মশালারও আয়োজন করেছে ‘পথচলা ফাউন্ডেশন’।
চট্টগ্রাম থেকে শুরু হয় সংগঠনটির প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম। তারপর তা পৌঁছে গেছে খুলনা, ময়মনসিংহ ও ঢাকায়। পরিচালনা করছে ২৪টি কমিউনিটিভিত্তিক কার্যক্রম। এ ছাড়া গত তিন বছরে ২৫টি স্থানীয়, বিভাগীয় এবং জাতীয় পর্যায়ের সংগঠনের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে কাজ করছে পথচলা। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে মিলেছে শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড, জাতিসংঘ স্বেচ্ছাসেবক সম্মাননা, জাতিসংঘ একাডেমি ইমপ্যাক্ট মিলেনিয়াম ফেলোশিপ। আর ২০২২ সালে ‘লিঙ্গসমতা ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তি’ ক্যাটাগরিতে ‘ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেছেন ‘পথচলা ফাউন্ডেশন’-এর নির্বাহী পরিচালক মনীষা মীম নিপুণ।
মনীষা বলেন, ‘বড় পরিসরে আমাদের কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে ১০ জন মূল সদস্যসহ আরও ৭০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা সম্প্রতি জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) একটি প্রকল্পে কাজের সুযোগ পেয়েছি, যা আমাদের কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করবে বলে আশা করি।’