উচ্চতা বাড়াতে পারবেন এই বুদ্ধিতে
ডায়েট, ব্যায়াম ও ওজন কমানো–বাড়ানো নিয়ে পাঠকদের নির্বাচিত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ও বিভাগীয় প্রধান শামছুন্নাহার নাহিদ
প্রশ্ন: আমার বয়স ১৪ বছর। উচ্চতা ৪ ফুট ৯ ইঞ্চি, ওজন ৫৩ কেজি। আমি যত দ্রুত সম্ভব ওজন কমাতে চাই। এ জন্য আমি কী করব, দয়া করে জানাবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
উত্তর: ১৪ বছর বয়সে তোমার এই উচ্চতায় ওজন থাকতে হবে ৩৬ কেজি। মানে ১৭ কেজি বেশি আছো। তুমি ওজন কমাতে চেয়েছ ঠিক আছে, যেকোনো বয়সেই ওজন কমানো বা বাড়ানো সম্ভব। কিন্তু তোমার কি জানা আছে, একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর উচ্চতা বাড়ানো সম্ভব হয় না। ছেলেদের ক্ষেত্রে এই বয়সের সীমা ১৬-১৮ বছর আর মেয়েদের ১৪-১৬ বছর। তুমি ছেলে না মেয়ে, সেটা লেখোনি। যদি ছেলে হও, তাহলে ১৪৪ সেন্টিমিটার (৪ ফুট ৯ ইঞ্চি হিসেবে) উচ্চতা মূলত ১১ বছর ২ মাস বয়সের। ১৪ বছরে উচ্চতা থাকতে হবে ১৬৩ সেন্টিমিটার। আর মেয়ে হলে এটি ১০ বছর ১১ মাসের উচ্চতা, যেটা এখন থাকার কথা ১৬০ সেন্টিমিটার। উচ্চতা ঠিকঠাক হলে তখন তোমার স্বাভাবিক ওজন ৫০ কেজি থাকার দরকার পড়বে। মানে এই সময়ে তোমার ওজনের চেয়ে উচ্চতা বাড়ানো জরুরি।
উচ্চতা বাড়াতে যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ—
১. ডায়েট: খাবারে প্রোটিন (মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, বাদামজাতীয় খাবার) বেশি থাকবে। পাশাপাশি ওজন কমাতে ক্যালরি কম, এমন খাবার খেতে হবে। ক্যালরি কীভাবে কমানো যায়, শিখে নিতে হবে। রান্নায় তেল কম হবে। শরীরের চাহিদা অনুযায়ী প্রতিদিন পরিমাণ মতো ভাগ করে করে খেতে হবে। কোনো পুষ্টি যেন বাদ না যায়।
২. ব্যায়াম: উচ্চতা বাড়াতে বাস্কেটবল, ভলিবল, সাঁতার, দড়ি লাফানো, সাইকেল চালানো, রিং ঝোলা ইত্যাদি ব্যায়ামগুলো বেশি ভালো। পাশাপাশি বাড়তি ওজন কমাতে দ্রুত হাঁটা, জগিং, দৌড়ানো ভালো। জিমে গিয়ে অ্যারোবিক এক্সারসাইজও করতে পারো।
৩. ঘুম: ওজন কমাতে বা উচ্চতা বাড়াতে রাতে পর্যাপ্ত (৬-৮ ঘণ্টা) ঘুম অত্যন্ত জরুরি। কারণ, রাতে ঘুমালে শরীরের গ্রোথ হরমোন (জিএইচ) হাড় ঘন ও লম্বা করার কাজ করে। এটাকে প্রাকৃতিকভাবে উচ্চতা বৃদ্ধির ওষুধ হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের সামগ্রিক বৃদ্ধির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে রাত জেগে দিনে অনেকটা সময় ধরে ঘুমালে ওজন বাড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
৪. শারীরিক পরিশ্রম: দ্রুত ওজন কমানোর সবচেয়ে ভালো পথ হলো শরীরে জমা বাড়তি ক্যালরি ঝরিয়ে ফেলা। তার জন্য শুয়ে-বসে থাকা কমিয়ে যতটা সম্ভব হাঁটাচলা করতে হবে। শারীরিক পরিশ্রম বাড়াতে হবে। এতে ওজন তো কমেই, শারীরিক বৃদ্ধিও ঘটে।
তোমার প্রতিদিনের জীবনযাপনের সঙ্গে মিল রেখে একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শমতো ডায়েট চার্ট তৈরি করে নেওয়া জরুরি। তিনি একই সঙ্গে তোমাকে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ওজন কমানো ও উচ্চতা বাড়ানোর আরও পরামর্শ দিতে পারবেন, যা তোমার উপযোগী।
লেখা পাঠানোর ঠিকানা
পাঠকের প্রশ্ন পাঠানো যাবে ই–মেইলে, ডাকে এবং প্র অধুনার ফেসবুক পেজের ইনবক্সে।
ই–মেইল: [email protected]
(সাবজেক্ট হিসেবে লিখুন ‘পাঠকের প্রশ্ন’)
ডাক ঠিকানা: প্র অধুনা, প্রথম আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫। (খামের ওপর লিখুন ‘পাঠকের প্রশ্ন’), ফেসবুক পেজ: fb.com/Adhuna.PA