সিলিং ফ্যান পরিষ্কার করার এই বুদ্ধি কি জানতেন
শীতের তেজ কমছে। হালকা গরমে এখন মাঝেমধ্যে ফ্যান ছাড়া হবে। তাই হুট করে ফ্যান ছেড়ে একগাদা ধুলাময়লা খাওয়ার আগেই সিলিং ফ্যানটা পরিষ্কার করে নেওয়া জরুরি। সিলিং ফ্যান পরিষ্কার করাটা কারও কারও কাছে একটু কষ্টসাধ্য! তবে কিছু টিপস মেনে দেখতে পারেন, সহজে পরিষ্কার হবে সিলিং ফ্যান।
সিলিং ফ্যান যেহেতু বাড়ির সবচেয়ে উঁচু জায়গায় থাকে, তাই সেটা পরিষ্কার করার জন্য মই বা সিঁড়ি দরকার। অনেকে অবশ্য এই কাজ চেয়ার বা টুলে দাঁড়িয়ে করে ফেলতে চান। এটা কিছুতেই করবেন না। ফ্যান পরিষ্কার করতে গিয়ে বড় বিপদ ডেকে আনার দরকার নেই। তাই ব্যক্তির নিরাপত্তার দিকে সর্বোচ্চ খেয়াল রাখুন। সিঁড়ি ছাড়া আর লাগবে—সুতি কাপড়, পানি আর লিকুইড সাবান বা ভিনেগার।
সিলিং ফ্যান পরিষ্কারের কিছু সাধারণ নিয়ম জেনে নিলে পরিষ্কার করতে সুবিধা হবে—
পরিষ্কারের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি
প্রথমে নিশ্চিত হয়ে নিন ফ্যানের সুইচ ভালোভাবে বন্ধ করা আছে কি না। তারপর ধুলা থেকে ঘরের বাকি আসবাবগুলো রক্ষা করার জন্য পুরোনো চাদর বা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে পারেন। ঘরে কার্পেট থাকলে ধুলার হাত থেকে বাঁচাতে মেঝে থেকে সেটি সরিয়ে রাখুন। তবে চাইলে এসবের ওপর কাগজ বিছিয়েও নিতে পারেন।
জানালা খুলে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করা
ফ্যান পরিষ্কার করার সময় ঘর দূষিত ধুলাবালুতে ভরে যায়। তাই দরজা ও জানালা খুলে দিয়ে বাতাস চলাচলের রাস্তা সহজ করে দেওয়া দরকার, তা না হলে ধুলায় শরীর একাকার হবে।
স্টেপ ল্যাডার বা মই ভালোভাবে স্থাপন
মই ঠিকমতো বসানো খুব জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ। অনেক সময় টাইলস বা পিচ্ছিল মেঝেতে মই (ল্যাডার) পিছলে যেতে পারে। তাই মইয়ের নিচে পুরোনো কাপড় বা পাপোশ দেওয়া যেতে পারে, এতে মই সরে যাবে না।
ফ্যানের আলগা ধুলা পরিষ্কার
ফ্যান পরিষ্কারের সময় শুরুতেই ভেজা কাপড় দিয়ে ঘষেমেজে ময়লা তোলার চেষ্টা করবেন না। প্রথমে একটি সুতি কাপড় দিয়ে ফ্যানের পাখাগুলো ভেতর থেকে বাহিরমুখী করে মুছতে হবে। এ ক্ষেত্রে পুরোনো বালিশের কভার একটি উপকারী জিনিস। বালিশের কভার ফ্যানের ব্লেডে ভরে আলতো করে টেনে আনলে লেগে থাকা ধুলা দ্রুত পরিষ্কার হয়। আর ব্লেডের ধুলা নিচে না পড়ে কভারের ভেতরে পড়ে। ফলে চারপাশ ময়লা হয় না।
হালকা ভেজা কাপড় ও ক্লিনারের ব্যবহার
শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে নেওয়ার পর বাড়িতে থাকা যেকোনো লিকুইড ক্লিনার বা ডিটারজেন্ট পানিতে মিশিয়ে নিয়ে ফ্যান পরিষ্কার করতে পারেন। অতিরিক্ত কেমিক্যাল–জাতীয় উপকরণ পরিষ্কারের জন্য ব্যবহার করবেন না। এতে ফ্যানের রং বা নকশা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। চাইলে ভিনেগার আর পানি মিশিয়ে ঘরোয়া পরিষ্কারক তৈরি করে নিতে পারেন। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন, কাপড় যেন হালকা ভেজা থাকে। বেশি ভেজা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করলে ফ্যানের ব্লেডে ছোপ ছোপ দাগ থেকে যেতে পারে। তা ছাড়া ফ্যানের মোটরে পানি ঢুকে সেটা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
পুনরায় শুকনা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার
হালকা ভেজা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করা শেষে আবার একটি পরিষ্কার শুকনা সুতি কাপড় দিয়ে ফ্যান মুছে নিন। এটা খুব জরুরি। কোনোভাবেই ফ্যানের পাখা বা মোটর ভেজা রাখা যাবে না। সাধারণত দু-তিন মাস পরপর ভালোভাবে সিলিং ফ্যান পরিষ্কার করা উচিত। ফ্যানের পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে বাড়ির সদস্যদের সুস্থতাও অনেকটা নির্ভর করে। কেননা, সিলিং ফ্যানের পাখাগুলোয় অনেক বেশি ক্ষুদ্র ধুলাময়লা জমে থাকে। এসব ধুলা বাড়ির বাতাসকে দূষিত করে। অ্যাজমা, অ্যালার্জি ও ফুসফুসজনিত রোগ তৈরি করে।
তা ছাড়া ফ্যানে অতিরিক্ত ধুলা জমে থাকলে এর কার্যকারিতা ধীরে ধীরে কমে যায়। এমনকি ফ্যানের মোটর গরম হয়ে আগুন ধরে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ফ্যানের পাখা পরিষ্কারে সাবধানতা
ফ্যানের পাখা অনেকটা ধারালো হয়, তাই সাইডের অংশ পরিষ্কারের সময় বিশেষ সাবধানতা মেনে চলুন। অনেকে আবার ব্লেড বাঁকিয়ে পরিষ্কার করেন, সেটা করা ঠিক নয়। ব্লেড বেঁকে গেলে পরবর্তী সময় ফ্যানের বাতাস ভালো পাবেন না।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট