বন্যার্তদের সহায়তায় ড্রোন নিয়ে হাজির হয়েছিলেন এই শিক্ষার্থীরা

ড্রোনের সাহায্যে ত্রাণ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন তাঁরা
ছবি: সংগৃহীত

দলটির নাম র‌্যাপটরএক্স। বন্যাকবলিত ফেনীতে ড্রোন নিয়ে হাজির হয়েছিল ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের এই দল। ড্রোনের সাহায্যে ত্রাণ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছে তারা।

রোবোটিকস নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছোট-বড় প্রকল্প হলেও ড্রোন নিয়ে উল্লেখযোগ্য তেমন কাজ হয়নি। এই ভাবনা থেকেই কাজ শুরু করেন একদল শিক্ষার্থী—মোহাম্মদ শায়েখ সেলিম (দলনেতা), সৈয়দ জয় (সহ–দলনেতা), শওনক শাহরিয়ার, ফসিউল আবেদীন খান, ফারদিন নওশাদ, মাইদুল ইসলাম, নাশওয়াহ আফিফ, তাজওয়ার আহমেদ, তাসনিয়া মেহজাবীন, প্রীতম দত্ত ও আবরার জাহিন। পরামর্শক ও উপদেষ্টা হিসেবে সঙ্গে ছিলেন গবেষণা সহকারী ফিরোজ ওয়াদুদ ও প্রভাষক আব্দুল্লাহ হিল কাফি।

গত বছর থেকেই প্রকল্পের খুঁটিনাটি নিয়ে কাজ চলছিল। বিস্তারিত জানালেন সৈয়দ জয়। তিনি বলেন, ‘২০২৩ সাল থেকে আমরা গবেষণা ও উন্নয়নের কাজ শুরু করি। ড্রোনের ক্ষমতা নিয়ে গবেষণা করার সময় বুঝতে পারি, বন্যা আক্রান্ত মানুষের সাহায্যে কাজ করতে পারে এই ড্রোন। যেখানে নৌকা পৌঁছানো সম্ভব নয়, সেখানেও আমরা ত্রাণ ও প্রয়োজনীয় জিনিস পাঠাতে পারি। তাই দেশের এই দুর্যোগের সময়ে প্রযুক্তিগত সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিই। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও আমাদের সাহায্য করে।’

ছোট আকারের প্লেনের মতো দেখতে ভিটিওএল ড্রোনটি অল্প জায়গা ব্যবহার করে খাড়াভাবে আকাশে উড়তে সক্ষম
ছবি: সংগৃহীত

গত ২৭ থেকে ২৯ আগস্ট ফেনীতে কাজ করেছে র‌্যাপটরএক্স। এই উদ্যোগকে সফল দাবি করে দলনেতা মোহাম্মদ শায়েখ সরেজমিন কাজ করার অভিজ্ঞতা জানালেন। তাঁর ভাষ্য, ‘আমরা প্রথমে ফেনীর ছাগলনাইয়া থেকে শুরু করে দাগনভূঞা ও সিলোনিয়া পর্যন্ত এলাকাগুলো নজরদারি করেছি। ড্রোনের মাধ্যমে এরপর দুর্গম এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করি। মূলত দুটি ড্রোন ব্যবহার করেছি। ভিটিওএল (ভার্টিক্যাল টেক অফ অ্যান্ড ল্যান্ডিং) ড্রোন দিয়ে বিভিন্ন এলাকা পর্যবেক্ষণ করেছি। কোথায় নৌকা পৌঁছানো সম্ভব নয়, বোঝার চেষ্টা করেছি। আর কোয়াড ড্রোন দিয়ে চিহ্নিত এলাকায় প্রয়োজনীয় জিনিস ড্রপ করেছি। এর মধ্যে শুকনা খাবার, ওষুধ ও স্যানিটারি প্যাড ছিল।’

আরও পড়ুন

ছোট আকারের প্লেনের মতো দেখতে ভিটিওএল ড্রোনটি অল্প জায়গা ব্যবহার করে খাড়াভাবে আকাশে উড়তে সক্ষম। এটি দীর্ঘক্ষণ আকাশে উড়ে বিভিন্ন তথ্য পেতে সাহায্য করে। প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে, যা যেকোনো দুর্যোগ পরিস্থিতিতে ভূমিকা রাখতে বেশ উপযোগী।

এ ধরনের ড্রোন নজরদারি, মানচিত্র তৈরি, ত্রাণ বিতরণ, কৃষিকাজ এবং নিরাপত্তার কাজগুলোতে বিশেষভাবে কার্যকর বলে দাবি করছে র‍্যাপটরএক্স।