‘মানুষ মানুষের জন্য
জীবন জীবনের জন্য
একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না?’
ভূপেন হাজারিকার বিখ্যাত এই গান যেন মানবসভ্যতার কাছে ছুড়ে দিয়েছে এক মৌলিক প্রশ্ন। মানুষ একে অপরের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়াবে। বিপদগ্রস্ত বিপন্ন মানুষের কাঁধে ভরসার হাত রাখবে। রোগজর্জর মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে সেবা ও সাহস। ক্ষুধিতের মুখে তুলে দেবে খাবার। ঠিক যেন কবি জসীমউদ্দীনের কবিতার মতো হবে মানুষ—সবার সুখে হাসব আমি/কাঁদব সবার দুখে/নিজের খাবার বিলিয়ে দেব/অনাহারীর মুখে।
কিন্তু তা কি হচ্ছে? মানুষই তো কেড়ে নিচ্ছে মানুষের মুখের গ্রাস।
তবে বিপরীতও আছে। বিভিন্ন সংকটে, দুর্যোগে বারবার প্রমাণ পেয়েছি আমরা। যুদ্ধবিধ্বস্ত জনপদে বহুদূর থেকে সাহায্য পাঠায় পৃথিবীর মানবিক মানুষ।
এই যে দেওয়া, অপরকে দান করা—এর ওপরই দাঁড়িয়ে আছে যে মানবসভ্যতা। যদি কোনো দিন এই দানের অনুশীলন সমূলে উঠে যায়, সন্দেহ নেই, সেদিনই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়বে পৃথিবীর তাবৎ সৌন্দর্য। দান করার জন্য আসলে কী দরকার? অঢেল বিত্ত? একদমই না। দরকার একটি সুন্দর ও মানবিক মন। আপনার হয়তো পর্যাপ্ত অর্থকড়ি নেই, কিন্তু দেওয়ার মতো সময় আছে, শ্রম আছে, মেধা আছে। তা-ই দান করুন। আপনার দেওয়া একটুখানি সময়, কায়িক পরিশ্রম কিংবা ব্যয়িত মেধা আরেকজনের জন্য হতে পারে ভালো থাকার উপলক্ষ। আবার অর্থসহায়তার ক্ষেত্রে কখনো কখনো খুব ছোট্ট একটি অঙ্কও অনেক বড় হয়ে উঠতে পারে। এ জন্য বিল গেটস কিংবা মুকেশ আম্বানি হওয়ার দরকার পড়ে না। ছোট্ট একটু দান-অনুদানও বদলে দিতে পারে পৃথিবী। অনেক উদাহরণ আছে এমন। আমরা দেখেছি, ভয়ংকর করোনাভাইরাসের সময় মানুষের ছোট ছোট দান-অনুদান কীভাবে মুমূর্ষু মানবজাতিকে বাঁচিয়ে দিয়েছে।
আজ ৪ মে, বিশ্ব দান দিবস। ২০১০ সালে গিভফরোয়ার্ড ডটকম নামের একটি অনলাইন তহবিল সংগ্রহ প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে দিনটির চল হয়।
ডেজ অব দ্য ইয়ার অবলম্বনে