চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা ও ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাসেল রোহান কয়েক মাস আগেও টিউশনি করাতেন। ক্যাম্পাস থেকে ২১ কিলোমিটার দূরের নিউমার্কেট ছিল গন্তব্য। দূরত্বের কারণে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা এখানেই চলে যেত। আবার টিউশনি শেষে এতটাই ক্লান্ত থাকতেন, পড়ালেখা বা অন্য কাজকর্ম করতে পারতেন না। আয়ের বিকল্প উপায় খুঁজছিলেন তাই রাসেল। অন্যদিকে ক্যাম্পাসে সাশ্রয়ী দামে ভালো খাবারের যে অপ্রতুলতা রয়েছে, তা দূর করতে চাইতেন সমাজতত্ত্ব বিভাগের মোস্তাফিজুর রহমান। দুজনে এক হলেন, গড়ে তুললেন নতুন এক বিভাগ, ‘ডিপার্টমেন্ট অব বিরিয়ানি’।
ডিপার্টমেন্ট অব বিরিয়ানিকে খাদ্য সরবরাহকারী সেবা (ফুড ডেলিভারি সার্ভিস) বলছেন এই দুই তরুণ। নামটা তাহলে এমন কেন? রাসেল নিজেই খোলাসা করলেন, নাম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর একটু ব্যতিক্রমী নাম হলে সবাই মাথায় রাখবে—ডিপার্টমেন্ট অব বিরিয়ানি নাম দেওয়ার পেছনে এ ব্যাপারগুলোই কাজ করেছে।
বিরিয়ানি বিভাগে পাঁচটি কোর্স রয়েছে। ১০১ নম্বর কোর্সে রয়েছে চিকেন বিরিয়ানি; ১০২ নম্বর কোর্সে রোস্ট, পোলাও ও ডিম; ১০৩ নম্বরে বিফ তেহারি; ১০৪ নম্বর কোর্সে বিফ বিরিয়ানি এবং কোর্স নম্বর ১০৫ হলো ভুনাখিচুড়ি ও ঝাল ফ্রাই। বর্তমানে শুধু ১০১, ১০২ ও ১০৫ নম্বর কোর্স চালু রয়েছে। বাকি কোর্স দুটি ধীরে ধীরে চালু হবে বলে জানাল ডিপার্টমেন্ট কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগ, ইনস্টিটিউট শুক্র ও শনিবার সাধারণত বন্ধ থাকে। সেখানে বিরিয়ানি ডিপার্টমেন্টের কার্যক্রম কেবল শুক্রবারেই পরিচালিত হয়। ডিপার্টমেন্ট অব বিরিয়ানির অন্যতম স্বত্বাধিকারী রাসেল রোহান বলেন, ‘ক্যাম্পাসের আশপাশের দোকান থেকে বৃহস্পতিবার আমরা বাজার করি। এরপর শুক্রবার সকালে শুরু হয় রান্না। দুপুর ১২টা থেকে ফুড ডেলিভারি শুরু করি। যেহেতু বাজার থেকে রান্না—সব নিজেরাই করি, তাই খাবারের মানও ভালো থাকে। আমাদের রান্নায় ঘরোয়া একটা ব্যাপার আছে বলে ক্রেতারা আমাদের জানিয়েছেন।’
ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ডিপার্টমেন্ট অব বিরিয়ানির প্রধান ক্রেতা। তাঁদের থেকে নিয়মিত সাড়া যেমন পাচ্ছেন, তেমনি বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশন ও বিভাগের চড়ুইভাতি, র্যাগ ডে ইত্যাদি অনুষ্ঠানে খাবার সরবরাহের দায়িত্বও তাঁরা পান। অফলাইনে দোকান খোলার চিন্তা আপাতত তাঁদের নেই।