আদর্শ বস কর্মীদের যে ৫টি কথা প্রতিদিন বলেন
‘বস’ বললেই হয়তো আমাদের অনেকের চোখের সামনে ভাসে গুরুগম্ভীর এক চেহারা। এর উল্টোটাও আছে, এ ক্ষেত্রে বস হয়ে ওঠেন ‘নেতা’। তারপরও ‘বস’ শব্দটা অগ্রাহ্য করার উপায় নেই। কর্মক্ষেত্রে বসের মুখোমুখি হতে হয় প্রতিদিন। বসের সঙ্গে কর্মীর আচরণ কেমন হবে, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা এবং পরামর্শ আছে। অন্যদিকে কর্মীর সঙ্গে বসের আচরণ কেমন হবে, তা–ও আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বটে। তবে আপনি যদি বস হয়ে থাকেন কিংবা হয়ে থাকেন গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী, তাহলে এই লেখা আপনার জন্য। এমনকি ভবিষ্যতে যাঁরা বস হবেন, তাঁরাও জেনে নিন একজন বস প্রতিদিন কর্মীদের যে পাঁচটি কথা বলে আদর্শ বস হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
রেজুমে বা জীবনবৃত্তান্ত লেখার জন্য সেবাদানকারী বিশ্বের অন্যতম প্রতিষ্ঠান টপরেজুমের ক্যারিয়ার এক্সপার্ট অ্যামান্ডা অগাস্টিন জানালেন, আদর্শ বস প্রতিদিন তাঁর কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁর ইতিবাচক কথোপকথন কর্মীদের সুন্দরভাবে কাজ সম্পন্ন করতে অথবা আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করে।
১. নতুন কী করছেন
শুনতে সাধারণ মনে হতে পারে, তবে অগাস্টিন বলেছেন, ‘এটি এক দারুণ কার্যকর প্রশ্ন।’ দলের প্রতিটি সদস্যের সঙ্গে আপনার প্রতিদিন অন্তত একবার কথা বলার বিষয়টি অগ্রাধিকার তালিকায় রাখুন। ‘কেমন আছেন?’ বা ‘কী খবর?’—এমন সাধারণ জিজ্ঞাসাও কর্মীদের সঙ্গে আপনার যোগাযোগ সহজ করে দেবে। কর্মীদের উদ্যোগের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করুন, এতে আপনি পুরো দলের মনোভাব টের পাবেন।
২. আমি কি এ বিষয়ে কোনো মতামত দিতে পারি
আদর্শ বস যে কঠোর হন না, তা কিন্তু নয়। কর্মীদের অগ্রযাত্রায় বরং তা সাহায্যই করে। কিন্তু এই কঠোরতা দেখাতে হয় খুব সতর্কতার সঙ্গে। আটকে থাকা কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনার আগে কর্মীকে বলতে পারেন, ‘আমি কি আপনার সঙ্গে আমার কিছু পর্যবেক্ষণ শেয়ার করতে পারি?’ আর একবার যদি আপনি এভাবে বলেন, দেখবেন, কর্মীরা আপনার প্রতিক্রিয়া জানার জন্য আরও আগ্রহী হয়ে উঠবেন।
৩. ভালো করেছেন
আদর্শ বস কখনো কর্মীদের ভালো কাজের প্রশংসা করতে দ্বিধা বোধ করেন না। তাঁরা জানেন, প্রশংসা করা গঠনমূলক প্রতিক্রিয়া জানানোর মতোই গুরুত্বপূর্ণ। কর্মীদের এটা জানতে দিন যে আপনি তাঁদের ভালো কাজের প্রশংসা করেন। কর্মীরা যদি জানেন যে বস হিসেবে আপনি তাঁদের কাজের মূল্যায়ন করেন, তাহলে তাঁরা নিজে থেকেই দ্বিগুণ উদ্যমে কাজ করতে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।
৪. এতে কি ভালো কিছু হবে
আদর্শ বস হিসেবে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে আপনার সঙ্গে যোগাযোগের পথ সব সময় খোলা। যখন নতুন প্রকল্প বা কোনো অ্যাসাইনমেন্ট কর্মীকে বুঝিয়ে দেবেন কিংবা কোনো বিষয়ে আপনার মতামত দেবেন, তখন এটা নিশ্চিত করুন যে আপনারা ‘যাত্রী একই তরণির’। অর্থাৎ আপনার দায়িত্ব এবং কর্মীর দায়িত্ব আদতে একই। কর্মীর ভালো মানে আপনারাও ভালো। তাই কোনো ক্ষেত্রে সন্দেহ বা দ্বিধা থাকলে খোলাখুলি প্রশ্ন করুন—এতে কি ভালো কিছু হবে? এই প্রশ্নে ধোঁয়াশা কেটে যাবে এবং কর্মী কোনো কিছুতে দ্বিধায় ভুগবেন না।
৫. লক্ষ্যটা কী
আদর্শ বস হিসেবে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যের কথা কর্মীদের মনে গেঁথে দেওয়ার দায়িত্ব আপনার। কেউ যদি কোনো প্রকল্পের প্রস্তাব আপনার সামনে উপস্থাপন করেন, তাহলে তাঁকে জিজ্ঞেস করুন, এর মাধ্যমে আপনার প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য কতটা বাস্তবায়িত হবে? লক্ষ্যের কথা বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে দলকে গুরুত্বপূর্ণ কাজের প্রতি মনোনিবেশ করতে সাহায্য করুন।
তথ্যসূত্র: সিএনবিসি