অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজিস্ট কী নিয়ে কাজ করেন? একজন অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজিস্টের কাছে কখন যাওয়া উচিত?
একজন মানুষকে সুন্দর ও নিখুঁত দেখানোর জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক যেসব পদ্ধতি কাজে লাগানো হয়, সেগুলো নিয়েই অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজির কাজ। ত্বকের দাগছোপ, বলিরেখা, তিল, আঁচিল, ক্ষতচিহ্ন কিংবা অবাঞ্ছিত লোমের সমস্যা ছাড়াও ত্বক ঝুলে পড়া, অতিরিক্ত চর্বির সমস্যা নিয়ে কাজ করেন একজন অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজিস্ট। ত্বক টানটান রাখা, দেহের বিভিন্ন অংশের আকৃতি সুন্দর রাখাসহ নানান বিষয় নিয়ে তাঁকে কাজ করতে হয়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে দেহে নানান ধরনের পরিবর্তন হতে থাকে। কেবল ত্বকই নয়, ত্বকের নিচেও এ পরিবর্তন হয়, আমরা বাইরে থেকে যা বুঝতে পারি না। ত্বকের নিচের স্বাভাবিক চর্বির স্তরটির পুরুত্ব কমে যায়। এমনকি হাড়ও ক্ষয় হতে থাকে। বয়স বাড়লে ত্বক কালচে হয়ে আসে, খানিকটা কুঁচকানো ভাব কিংবা বলিরেখাও দেখা দেয়। এসব সমস্যার সমাধান করতে পারেন একজন অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজিস্ট।
এসব কাজের জন্য কী ধরনের পদ্ধতি প্রয়োগ করার প্রয়োজন পড়ে?
একেকটি সমস্যার জন্য একেক ধরনের চিকিৎসাপদ্ধতির প্রয়োজন হয়। প্রয়োজন অনুযায়ী বোটক্স ও ডারমাল ফিলার, বিভিন্ন ধরনের লেজার চিকিৎসা, মাইক্রোনিডলিং, হাইড্রা ফেসিয়াল এবং কেমিক্যাল পিলিং প্রযুক্তি কাজে লাগানো হয়। আবার ব্যক্তির চাহিদা ও প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষায়িত চিকিৎসা দেওয়ারও সুযোগ রয়েছে। অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজিতে বিভিন্ন ধরনের স্মার্ট ডিভাইস, এমনকি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সও কাজে লাগানো হয়।
আজকাল অনেক প্রতিষ্ঠানই তো এ ধরনের সেবা দিচ্ছে। সেগুলোর সবই কি নিরাপদ?
এ ধরনের বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়। একজন এমবিবিএস চিকিৎসক যখন স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পড়ালেখা সম্পন্ন করেন, তখন তিনি একজন বিশেষজ্ঞের স্বীকৃতি পান। অর্থাৎ ডার্মাটোলজিতে স্নাতকোত্তর করার পরই একজন চিকিৎসক হয়ে ওঠেন ত্বক বা চর্মরোগবিশেষজ্ঞ। এরপর যখন তিনি অ্যাস্থেটিক বিষয়গুলোর ওপর প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন, কেবল তখনই তিনি একজন অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজিস্ট হিসেবে আইনত স্বীকৃতি পান। একজন ব্যক্তি যে প্রতিষ্ঠানেই এ ধরনের সেবা নিতে যান না কেন, তাঁর অবশ্যই জেনে নেওয়া উচিত, সেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজিস্ট আছেন কি না। অন্য কারও কাছে এ ধরনের চিকিৎসা নেওয়া নিরাপদ নয়।
প্রশিক্ষণবিহীন কারও কাছে এ ধরনের চিকিৎসা নেওয়া হলে পরে কী সমস্যা হতে পারে?
অ্যাস্থেটিক ডার্মাটোলজিতে ব্যবহৃত চিকিৎসাপদ্ধতির ভুল প্রয়োগে ত্বকের রক্তনালী, স্নায়ু কিংবা ত্বকের নিচের পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এভাবে এসব অংশের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমনকি চোখের কাছাকাছি জায়গায় ভুলভাবে ইনজেকশন প্রয়োগের ফলে একজন ব্যক্তি দৃষ্টিশক্তিও হারাতে পারেন। তা ছাড়া সৌন্দর্যচর্চায় ব্যবহৃত পণ্য কেনার আগেও দেখে নেওয়া উচিত, এগুলো সঠিকভাবে পরীক্ষিত কি না। নইলে ত্বকে এগুলোর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে পারে।