দীর্ঘ সময় ধরে এই দ্বীপটির মুদ্রা ছিল নারকেল
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সর্ব উত্তরের দ্বীপ কার নিকোবর। দীর্ঘ সময় ধরে এই দ্বীপের অধিবাসীদের প্রধান খাদ্য ও পানীয় ছিল নারকেল। এমনকি গত শতাব্দীর গোড়ার দিকেও দ্বীপটির মুদ্রাব্যবস্থা ছিল নারকেলনির্ভর, নারকেল দিয়েই বিনিময় হতো। আমাদের দেশেও আছে নারকেলময় এক দ্বীপ—নারকেল জিঞ্জিরা (সেন্ট মার্টিন)। খনার বচনে আছে নারকেলের কথা—‘দাতার নারিকেল, বখিলের বাঁশ/ কমে না বাড়ে, বারো মাস।’
বৃক্ষ থেকে ফল—নারকেলগাছের কোনো অংশই ফেলনা নয়। নারকেলগাছকে বলা হয় জীবনবৃক্ষ। স্বর্গবৃক্ষ বা কল্পবৃক্ষও বলা হয়। অনেক প্রয়োজন মেটায় বলে মালয়রা বলে থাকে—হাজার ব্যবহারের গাছ। সত্যিই তো। একবার ভাবুন, ঠিক কত কাজে লাগে নারকেল ও নারকেলগাছ! খাদ্য, পানীয়, জ্বালানি থেকে প্রসাধনসামগ্রী—কোথায় নেই এর ব্যবহার!
ডাবের পানি শুধু পানীয় হিসেবেই উপকারী নয়, এতে রয়েছে প্রচুর খনিজ লবণ ও নানা উপাদান, যা অনেক জটিল রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। নারকেল শাঁসের সুস্বাদু পিঠাপুলির কথাও বলা বাহুল্য। আছে আরও হরেক রকমের রেসিপি। নারকেল নাড়ু, নারকেল দুধ দিয়ে হাঁসের মাংস কিংবা নারকেল-চিড়া—একেবারে জিবে লেগে থাকা স্বাদ। নারকেল দিয়ে তৈরি হয় তেল, সাবান, শ্যাম্পু। পাপোশ, গদি, সোফা, জাজিম বা শক্ত দড়ি তৈরি, থালাবাসন পরিষ্কার কিংবা ধূপ জ্বালানোর কাজে নারকেলের ছোবড়ার তুলনা নেই। নারকেলগাছেরও রয়েছে নানামুখী ব্যবহার। গ্রামবাংলায় নারকেলগাছ চিরে মাচা, তক্তপোশ বা দেউড়ির বেড়া বানানো হয়। নারকেলগাছের শুকনো পাতা দিয়ে কুঁড়েঘর, পাতার কাঠি দিয়ে তৈরি হয় ঝাড়ু। নারকেলের খোসাও বিভিন্ন কাজে লাগে। খোসা কেটে, মসৃণ করে বা খোদাই করে বানানো যায় বাটি, ফুলদানি, কলমদানি, চাবির রিং বা বাহারি গয়না।
আজ ২ সেপ্টেম্বর, বিশ্ব নারকেল দিবস। এশিয়া প্যাসিফিক কোকোনাট কমিউনিটির (এপিসিসি) উদ্যোগে ২০০৯ সাল থেকে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
সূত্র: ডেজ অব দ্য ইয়ার