চকলেট

.
.

খাবার হিসেবে চকলেটের জুড়ি মেলা ভার। সারা বিশ্বে জনপ্রিয় এই খাদ্যপণ্যের উৎপত্তি প্রায় চার হাজার বছর আগে। অনেক গবেষক দাবি করেন, মেক্সিকোতেই প্রথম চকলেট দেখা যায়। তবে সেই চকলেট এখনকার মতো এমন সুস্বাদু ছিল না। তখন পানীয় হিসেবেই এটি পান করা হতো। যার স্বাদ ছিল তেতো।
চকলেট তৈরির মূল উপাদান কোনো বীজ। প্রাচীন মেসো-আমেরিকানরা খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ১৯০০ শতকের মধ্য আমেরিকার বনে কোকো বীজের সন্ধান পান। এই বীজ গরম করে পানি, মধু আর মরিচ গুঁড়া মিশিয়ে সে সময়ের মানুষ তৈরি করতেন তেতো স্বাদের পানীয়।
এর্নান কোর্তেসসহ একদল স্প্যানিশ অভিযাত্রী ১৫০০ শতাব্দীতে মেক্সিকো গিয়েছিলেন। তাঁরা অন্য কিছু না পেলেও সে দেশে প্রচুর পরিমাণ চকলেট বীজ পান। পরবর্তীকালে স্প্যানিশরাই এই তিতা স্বাদের পানীয়ের সঙ্গে আখের রস ও মিষ্টিজাতীয় পদার্থ মিশিয়ে তৈরি করেন সুস্বাদু মিষ্টি চকলেট। স্প্যানিশরা প্রায় ১০০ বছর ধরে এই চকলেট তৈরির রহস্য নিজেদের মধ্যে গোপন রেখেছিলেন।
তবে সে গুমর ফাঁস হয়ে যায় ১৬১৫ সালে। মূলত ফরাসি রাজা ত্রয়োদশ লুই স্পেনের রাজকন্যাকে বিয়ে করার পরই চকলেট তৈরির রহস্য সবাই জানতে পারে। কারণ, স্প্যানিশ রাজকন্যার ছিল ভীষণ চকলেটপ্রীতি। তিনি স্পেন ছাড়তে পারলেও পারেননি চকলেট খাওয়া। এরপর থেকেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাজদরবারে চকলেট অত্যন্ত জনপ্রিয় খাদ্য হয়ে ওঠে।
১৮২৮ সালের আগ পর্যন্ত চকলেটের ব্যবহার রাজদরবারেই সীমাবদ্ধ ছিল। সে বছর ডাচ রসায়নবিদ কনরাড জোহানেস ফন হউতেন কোকো প্রেস নামে একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন। এই যন্ত্র চকলেট তৈরির ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছে। এই ধারায় ১৮৪৭ সালে ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান জেএস ফ্রাই অ্যান্ড সন্স প্রথম চিনি ব্যবহার করে শক্ত বার আকৃতির চকলেট উৎপাদন শুরু করে; যা আজও আমরা দেখে থাকি।
হিস্ট্রি ডটকম অবলম্বনে আকিব মো. সাতিল