গর্ভাবস্থায় খেতে মানা যা
গর্ভাবস্থা একজন নারীর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ সময় সাবধানতা অবলম্বন আর শরীরের যত্ন নেওয়া যেকেনো সময়ের চেয়ে জরুরি। বিশেষ করে মায়ের খাবারের বিষয়ে যত্নবান হওয়া সবচেয়ে জরুরি। গর্ভাবস্থায় কিছু খাবার এড়িয়ে চলা খুব প্রয়োজন। এমন কিছু খাবার হলো—
* ভালো করে সেদ্ধ না হওয়া খাবার, যেমন কাঁচা বা আধা সেদ্ধ ডিম, ভালো করে রান্না না হওয়া মাংস, সামুদ্রিক খাবার ইত্যাদি মা ও শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এতে অন্ত্রের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
* প্রক্রিয়াজাত খাবার ও ভাজাপোড়া খাবারে অকারণে ওজন বাড়বে, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও হবে। তাই এসব খাবারও এড়িয়ে চলতে হবে।
* গর্ভাবস্থায় পাস্তুরিত নয়, এমন দুধ খাওয়া উচিত নয়। এ ছাড়া চা-কফি পানও কমাতে হবে। ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন করতে হবে।
* অনেকেই মনে করেন, গর্ভে সন্তান আসা মানেই শরীরে দুজন মানুষের খাবারের চাহিদা তৈরি হওয়া। কাজেই দুজনের খাবার খেতে হবে। তবে বাস্তবতা হলো গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে স্বাভাবিক খাবারই যথেষ্ট। কিছুটা বেশি খাওয়া যেতে পারে। তবে দ্বিগুণ পরিমাণ খেতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবশ্য গর্ভের শিশুর খাবারের চাহিদা বাড়তে থাকে। তাই প্রথম তিন মাসের পর খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া যায়।
গর্ভাবস্থা নিয়ে সমাজ ও পরিবারে কিছু প্রচলিত ধারণা ও বিশ্বাস রয়েছে, যার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আজও পাওয়া যায়নি। এমনই কিছু ধারণা হলো—
* অনেকের ধারণা, গর্ভাবস্থায় শাক খেলে বুক-গলা জ্বালা করবে। কিন্তু গর্ভাবস্থায় বুক-গলা জ্বলা খুব সাধারণ একটি উপসর্গ। এর সঙ্গে শাকের কোনো সম্পর্ক নেই।
* কেউ কেউ মনে করেন, বেশি বেশি শাক খেলে সন্তান মাথায় অনেক চুল নিয়ে জন্মাবে। শাকের সঙ্গে সন্তানের মাথায় চুল গজানোরও কোনো সম্পর্ক নেই। তবে প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি শরীরের পুষ্টিচাহিদা পূরণে সহায়ক হয়। কাজেই খাবারের তালিকায় শাকসবজি থাকা জরুরি।
* গর্ভাবস্থায় একেক নারীর একেক স্বাদের খাবারে আকর্ষণ বাড়ে। যেমন কেউ নোনতা খাবার খেতে পছন্দ করেন। আবার কেউ মিষ্টি খাবারের দিকে ঝুঁকে পড়েন। এ নিয়ে বাড়ির বয়স্ক ব্যক্তিরা সন্তান ছেলে হবে, না মেয়ে হবে, তা নির্ণয়ের চেষ্টা করেন। এই বিশ্বাসের আসলে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। গর্ভাবস্থায় একজন নারী কোন স্বাদের খাবারে বেশি আকৃষ্ট হবেন, তার সঙ্গে গর্ভস্থ ভ্রুণের কোনো সম্পর্ক নেই।
আগামীকাল পড়ুন: হাম-রুবেলার টিকা কেন জরুরি