মাস্কে অস্বস্তি এড়ানোর উপায়

>
দীর্ঘ সময় মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতি ১০ মিনিট পর খুলে সতেজ বাতাসে শ্বাস নিন। তবে কাছাকাছি কেউ থাকলে এটি করা যাবে না।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মাস্ক পরে অনেকাংশে প্রতিহত করা সম্ভব। বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে, যথাযথভাবে মাস্ক ব্যবহার করলে মুখনিঃসৃত তরলকণা (ড্রপলেট) সরাসরি নাকে-মুখে প্রবেশ করতে পারে না। কিন্তু টানা দীর্ঘ সময় মাস্ক পরে থাকাও অনেক সময় অস্বস্তিকর ও কষ্টকর হয়ে ওঠে।

অনেকক্ষণ ধরে মাস্ক ব্যবহার করলে কিংবা একাধিক মাস্ক একসঙ্গে একটির ওপর আরেকটি রেখে ব্যবহার করলে হাইপোক্সিয়া বা অক্সিজেনের ঘাটতি হতে পারে। শরীরে অক্সিজেন কমে গেলে মানুষের শ্বাসপ্রশ্বাসের স্বাভাবিক ক্রিয়া ব্যাহত হয়। শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি বেড়ে যায় (প্রতি মিনিটে ২৪ বারের বেশি)। হৃদ্স্পন্দনের গতিও বেড়ে যায় (প্রতি মিনিটে ১০০–এর বেশি)। ফলে বুকে ব্যথা হয় ও শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। এ ছাড়া মাস্কে জমে থাকা কার্বন ডাই-অক্সাইড শরীরে প্রবেশ করে এই গ্যাসের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে মাথা ঘোরা বা মাথা ঝিমঝিম করতে পারে, হতবিহ্বল লাগতে পারে। মাথাব্যথাও হতে পারে। অবসাদগ্রস্ততা দেখা দিতে পারে। মাস্ক পরা অবস্থায় অনেকক্ষণ গাড়ি চালালে অক্সিজেনের অভাবে চালক সাময়িক চেতনা হারিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। আবার দীর্ঘ সময় মাস্ক ব্যবহার করলে তা সংক্রমণের উৎস হয়ে উঠতে পারে। মাস্ক আর্দ্র হয়ে গেলে সেখানে জীবাণুর জন্ম হয়, যা শ্বাস নেওয়ার সময় ভেতরে চলে যায়। এ ক্ষেত্রে কিছু কৌশল এসব অসুবিধা এড়ানো সম্ভব।

● একই মাস্ক বারবার ব্যবহার করা উচিত নয়। কোনো উপায় না থাকলে প্রতিবার ব্যবহারের পর সাবান-পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিন।

● দীর্ঘ সময় মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতি ১০ মিনিট পর খুলে সতেজ বাতাসে শ্বাস নিন। তবে কাছাকাছি কেউ থাকলে এটি করা যাবে না। এমন একটি খালি জায়গায় মাস্ক খুলবেন, যেখানে আশপাশে ছয় ফুটের মধ্যে কেউ নেই। বুক ভরে কিছুক্ষণ শ্বাস নিয়ে আবার মাস্ক পরে নিন। মাস্ক খোলা ও পরার আগে সাবান-পানি দিয়ে হাত ভালো করে ধুয়ে নিন।

● মাস্ক পরে কোনো শারীরিক পরিশ্রম যেমন সিঁড়ি ভাঙা, দৌড়ানো বা ব্যায়াম করা উচিত নয়।

অধ্যাপক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ