সুস্থ থাকতে ফার্মেন্টেড ফুড
আমাদের সুস্থ জীবন যাপন করার জন্য ফার্মেন্টেড ফুড গুরুত্বপূর্ণ। ফার্মেন্টেড ফুড বলতে প্রোবায়োটিকসমৃদ্ধ খাবারকে বোঝায়। ফার্মেন্টেড ফুড পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে এটি সহায়তা করে। অন্ত্রে যত ভালো ব্যাকটেরিয়া থাকবে, হজমব্যবস্থা তত ভালো হবে। হজমে উন্নতির জন্য খেতে পারেন ফার্মেন্টেড ভেজিটেবলস।
প্রোবায়োটিকস কী
প্রোবায়োটিক হলো উপকারী ব্যাকটেরিয়া, যা আমাদের হজমপ্রক্রিয়ার অভ্যন্তরে জীবিত থাকে এবং আমাদের শরীরকে সঠিকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। যেমন কিমচি নাপা বাঁধাকপি থেকে তৈরি একটি ফার্মেন্টেড খাবার, দই, কেফির (দুগ্ধ ও দুগ্ধবিহীন), কম্বুচা। তবে বাঁধাকপি থেকে তৈরি ফার্মেন্টেড সবজি বেশি ভালো।
প্রোবায়োটিকগুলো আমাদের দেহে যে কাজ করে
প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া আমাদের দেহে বায়োটিন, ফোলেট, ভিটামিন বি১২ ইত্যাদি সংশ্লেষণে সহায়তা করে। এগুলো মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। প্রোবায়োটিকগুলো হজমে সহায়তা করে, নিউট্রিয়েন্টস শোষণে সহায়তা করে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
অনেক ফার্মেন্টেড খাবারের মধ্যে একটি জনপ্রিয় খাবার হচ্ছে ফার্মেন্টেড বাঁধাকপি। দেখে নেওয়া যাক, কীভাবে ফার্মেন্টেড বাঁধাকপি তৈরি করা যায়।
ফার্মেন্টেড বাঁধাকপি
উপকরণ
বাঁধাকপি, লবণ ও পানি পরিমাণমতো। তবে কেউ চাইলে এর মধ্যে টমেটো, শসা, গাজর, কাঁচা মরিচ, রসুন ও লেবুপাতা যোগ করতে পারেন।
বানানোর পদ্ধতি
–প্রথমে একটি কাচের জার গরম পানিতে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে।
–সব সবজি জারের পরিমাপ অনুযায়ী ধুয়ে কেটে নিতে হবে। একটি বাঁধাকপি কুচি করে নিন। একটি বাঁধাকপি রান্না করতে যে পরিমাণ লবণ ব্যবহার করা হয়, তার চেয়ে সামান্য বেশি লবণ দিন।
-এরপর পরিমাণ মতো পানি দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন সবজিগুলো সব সময় পানির নিচে ডুবন্ত অবস্থায় থাকে। তা না হলে ছত্রাক পড়তে পারে।
-এরপর জারের মুখ বন্ধ করে দিয়ে একটু ঝাঁকিয়ে নিতে হবে।
-জারটি শুষ্ক ছায়াযুক্ত স্থানে রেখে দিতে হবে। ভালো ফল পেতে কমপক্ষে দু–তিন সপ্তাহ রেখে দিন। কিন্তু কয়েক দিন পরপর খেয়াল রাখতে হবে পানি কমে যাচ্ছে কি না। যাতে সবজিগুলো সব সময় পানির নিচে ডুবন্ত অবস্থায় থাকে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে আবার একটু পানি দিতে হবে।
কীভাবে খাবেন
এক বা দুই টেবিল চামচ ফার্মেন্টেড সবজি সালাদ, স্প্রাউট/অঙ্কুরিত বীজ বা সবজির জুসের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন।
প্রাচীন এই পদ্ধতিতে সংরক্ষিত খাবার পুষ্টিগুণ ধরে রাখে দীর্ঘদিন। সেই সঙ্গে মেলে উপকারী ব্যাকটেরিয়া, যা শরীরের বিভিন্ন উপকার করে থাকে।
লেখক: পুষ্টিবিদ, নারী ও শিশু স্বাস্থ্য