গাছের জন্য ঘরের সার
বাড়িতেই তৈরি হচ্ছে এখন সবকিছু। প্রতিদিনকার চাহিদা মেটাতে চার দেয়ালের ভেতরেই চলছে কর্মযজ্ঞ। তবে কিছুটা বিপদে পড়েছেন গাছপ্রেমী মানুষেরা। গাছের প্রয়োজনীয় সার, ভিটামিন কিনতে হলে এখন ঘুরতে হয় অনেকটাই। বাড়ির কাছের ছোট নার্সারিগুলো বন্ধ হয়ে আছে। সার তৈরির কারখানাও কিন্তু চাইলে ঘরেই করে ফেলতে পারেন। আমরা পুষ্টি পাচ্ছি, এমন অনেক উপকরণ থেকে গাছও সহজে ক্যালসিয়াম কার্বনেট, ম্যাগনেশিয়াম, সালফার, পটাশিয়াম ইত্যাদি প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেয়ে যাবে। হাতের কাছে এখন সহজেই পাবেন, এমন উপকরণগুলোই তুলে ধরা হলো।
ডিম ডিমা ডিম ডিম
গাছের সার হিসেবে ডিমের খোসা বেশ জনপ্রিয়। গাছের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম কার্বনেট পাওয়া যায় এই উপকরণ থেকে। ডিম প্রায় প্রতিদিনই খাওয়া হয় বাসায়। খোসাগুলো ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখুন। এরপর শুকিয়ে নেওয়ার পালা। দুই থেকে তিন দিন রোদে বিছিয়ে শুকানো যায়। এত অপেক্ষা করতে না চাইলে ওভেনে ২০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ২০ মিনিট বেক করে নিতে পারেন। ঝামেলা শেষ। এরপর আসবে গুঁড়া করার পালা। নগরকৃষির পরিচালন প্রধান মাহফুজ মুনতাসির জানালেন, ব্লেন্ডারে সহজেই গুঁড়া করে নিতে পারেন। বাড়িতে সেই সুবিধা না থাকলে হাত তো আছেই।
এ ছাড়া ডিমের খোসা পানির মাধ্যমেও দেওয়া যায়। ফুটন্ত ১ গ্যালন পানি ঢেলে দিন ২০টি খোসার ওপর। সারা রাত ভিজতে দিন। পরদিন পানি ছেঁকে গাছের গোড়ায় দিয়ে দিন। বছরে দুবার ডিমের খোসার ব্যবহার যথেষ্ট।
লবণের ধার
ম্যাগনেশিয়াম ও সালফারের ঘাটতি কমাতে সহায়তা করবে ইপসম লবণ। এক গ্যালন পানির মধ্যে এক টেবিল চামচ ইপসম লবণ মিলিয়ে নিন। স্প্রেয়ারের মাধ্যমে গাছের পাতায় ছড়িয়ে দিন। মাসে একবার করলেই ভালো ফল পাবেন। অনলাইন দোকানগুলোতে ইপসম লবণ খুঁজে দেখতে পারেন।
কফির স্বাদে
গ্রাইন্ড করা কফির স্বাদ দিতে পারেন আপনার গাছকেও। গোলাপ বা টমেটোগাছের জন্য ভালো হবে। মাটির অম্লতা বাড়াবে। ব্যবহৃত গ্রাইন্ড করা কফি মাটির ওপর ছড়িয়ে দিলেই হবে। তবে আগে অবশ্যই শুকিয়ে নিতে হবে।
রান্নাঘরের খোসা
রান্নাঘরে সবজি কাটার পর খোসা ফেলে দেবেন না। জমিয়ে সেগুলোও গাছে দিয়ে দিতে পারেন। হতে পারে গাজর কিংবা কলার খোসা। সবজির খোসাগুলো সাধারণত পানিতে এক সপ্তাহ চুবিয়ে রাখার নির্দেশনা দিচ্ছে সবাই। এরপর সেই পানি গাছের গোড়ায় ঢেলে দিলেই হবে। ধীরে ধীরে পুষ্টি পাওয়া গেলেও এই সময় অনেকটাই সহায়তা করবে। যাঁদের সবজির বাগান আছে, গরমের মৌসুমে মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করবে।
কলায় কেল্লা ফতে
কলার ভেতর পটাশিয়ামের যে পুষ্টি আছে, গোলাপগাছের জন্য বেশ উপকারী সেটা। গোলাপের টবের মাটির উপরিভাগে কলার ছোকলা পুঁতে দিন। প্রাকৃতিকভাবে সারের কাজ করবে।
অ্যাকুয়ারিয়ামের পানি
মাছের অ্যাকুয়ারিয়ামের ব্যবহৃত পানিও গাছের সার হিসেবে ভালো কাজ করবে। তবে অ্যাকুয়ারিয়ামে লবণাক্ত পানি ব্যবহার করলে সেটা গাছে দেবেন না।