নারীদের 'বেল্ট ইন' ঈদ ফ্যাশন
‘ও আমার রসিয়া বন্ধু রে, তুমি কেন কোমরের বিছা হইলা না’ সমাধি চলচ্চিত্রে সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীনের কণ্ঠে এ গান যাঁরা শুনেছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই মনে করতে পারবেন, শাড়ির সঙ্গে বিছা বা কোমরবন্ধনী পরা বাংলাদেশের ফ্যাশনে অনেক আগে থেকেই ছিল। তবে শুধু শাড়ি নয়, এ বছরের ঈদে নারীদের সব ধরনের পোশাকের সঙ্গে বেল্ট দারুণ হিট।
জামায় বেল্ট যুক্ত করা তো বটেই, অনেকেই গয়না হিসেবে বেছে নিচ্ছেন বেল্ট। বাজারেও তাই বাহারি বেল্টের সরবরাহ আছে। চামড়ার বেল্ট থেকে শুরু করে, পাটের, কাপড়ের এমনকি ধাতব বেল্টে ‘রত্ন’ বসানো বেল্টের দেখা মিলবে ঈদের বাজারে। নগরীর বেইলি রোড, বসুন্ধরা সিটি, গুলশান, যমুনা ফিউচার পার্ক এবং অনলাইনের পেজগুলোতেও নারীদের পোশাকের ওপরে পরার এসব বেল্ট পাওয়া যাচ্ছে।
বেল্টের একজন ক্রেতা হাইকোর্টের আইনজীবী তাসমিয়াহ আহমেদ জানান, ইদানীং তিনি অনেক পোশাকের সঙ্গেই বেল্ট ব্যবহার করছেন। মাঝেমধ্যে শাড়ির সঙ্গেও বেল্ট পরেন তিনি। তাসমিয়াহ বলেন, ‘সাধারণত আমি কেপ বা কামিজের ওপরে পাতলা কাপড়ের জ্যাকেট পরি, এ ধরনের পোশাকের সঙ্গে বেল্ট ব্যবহার খুব সুবিধাজনক। এতে পোশাক ঠিকঠাক থাকে এবং চলাচলেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ হয়।’
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাধারণ কাপড় বা পাটের বেল্টগুলোর দাম তিন শ থেকে পাঁচ শ টাকার মধ্যে। চামড়ার বেল্টের দাম চার শ থেকে হাজার টাকা। সবচেয়ে বেশি দাম ধাতব বেল্টগুলোর; আকার এবং রত্নের ব্যবহারের ব্যবধানে আড়াই হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
অন্য সব পণ্যের মতো ঈদ উপলক্ষে অনলাইন ও ফেসবুকেও বসেছে বেল্টের বাজার। ফেসবুক পেজ ওপাল ফ্যাশন ওয়্যারের স্বত্বাধিকারী তানজিম হোসেন তালুকদার জানান, ঈদের আগে থেকেই ক্রেতারা বেল্টের চাহিদার কথা জানিয়ে আসছিলেন। ঈদে তাই তাঁরা পর্যাপ্ত পরিমাণে বেল্ট মজুত করেছেন।
তানজিম হোসেন জানান, এবারের ঈদে পোশাকের ট্রেন্ড লম্বা কামিজ বা গাউন। এগুলোর সঙ্গে নারীরা বেল্ট চাইছেন। ফলে বেল্ট এই ঈদের ফ্যাশনে বেশ সমাদর পাচ্ছে।
ফ্যাশন হাউস আর্টিসানের বেইলি রোড শাখার বিক্রেতা ইব্রাহীম জানান, ওয়েস্টার্ন ডিজাইনের কিছু পোশাক বাজারে আসছে বেল্ট যুক্ত হয়ে। ছোট মেয়েদের পোশাকেও বেল্ট ব্যবহারের একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে এবারের ঈদে। এ ছাড়া সাধারণ চামড়ার বেল্টের মজুত খুব দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে ইদানীং।
ফ্যাশন হাউস আড়ংও মেয়েদের পোশাকে যুক্ত করেছে বেল্ট। আড়ংয়ের ফ্যাশন ব্র্যান্ড তাগার এবারের ঈদের কালেকশন পুরোটাই বেল্ট দেওয়া টপসের। এ ছাড়া সেখানে পাওয়া যাচ্ছে চামড়া, কাপড়, পুঁতি ও ধাতব বেল্ট।
নারীদের ঈদ ফ্যাশনে বেল্ট যুক্ত হওয়ার বিষয়টি খুব ইতিবাচকভাবে দেখছেন ফ্যাশন ডিজাইনার ও বিবিআনা ফ্যাশন হাউসের স্বত্বাধিকারী লিপি খন্দকার। তিনি বলেন, ফ্যাশন প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। নারীরা যে পোশাকে বেল্ট যুক্ত করেছে, এটা এই পরিবর্তনের একটা ধারা। নতুন কিছু যুক্ত করার চেষ্টা থেকে এটার শুরু হয়েছে বলে ধারণা করেন এই ফ্যাশন ডিজাইনার।