বিল গেটসের মতো সুখী হতে চান?
যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট রেডিট ‘আস্ক মি এনিথিং’ নামের এক আয়োজন করে। সম্প্রতি সেখানে এসেছিলেন মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। ৩০ মিনিটের সরাসরি (লাইভ) আয়োজনে দুটি প্রশ্ন মানুষ বেশি করেছিল—১. আপনি কি সুখী? এবং ২. সবকিছু মিলিয়ে কোন জিনিসটি আপনাকে বেশি আনন্দ দেয়? গেটস জানিয়েছেন, অতীতের চেয়ে বর্তমানেই তিনি অনেক সুখী। আর সুখের সূত্রগুলো জানিয়ে দিয়েছেন সবাইকে।
১. নিজের কথা শুনুন
জীবন থেকে ‘যদি’ শব্দটি পারলে মুছে ফেলুন। বিশেষ করে কর্মজীবনে তেমন কাজই বেছে নিন, যেখানে ‘যদি’ শব্দটি ব্যবহার করতে না হয়। ‘যদি এমন কিছু করতে পারতাম’—চাকরি বা ব্যবসা শুরু করার পর এই বাক্য মানুষকে কখনোই সুখী করে না। তাই গেটস বলেন, নিজেকে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলোই আগে পূরণ করুন। আপনার যদি মনে হয়, জীবনে আরও বড় কিছু করার আছে, তাহলে সেটার জন্য উঠে–পড়ে লেগে থাকাই সুখী হওয়ার অন্যতম সূত্র। তেমন কিছুই করুন, যেন দিন শেষে বলতে পারেন, ‘এটাই তো করতে চেয়েছিলাম।’
২. মানসিকতা হোক দানশীল
মার্কিন ব্যবসায়ী এবং মোটিভেশনাল গুরু জন রিম বলেছিলেন, ‘অনেক কিছু থাকার পরও একমাত্র দানই পারে আপনাকে আরও সমৃদ্ধ করতে।’ এই সূত্রই মেনে চলেন বিল গেটস। তাঁর ফাউন্ডেশনই এটির বড় প্রমাণ। বিজ্ঞানও বলে, দান করলে আমাদের মন ভালো হয়, শরীরও হয়ে ওঠে ফুরফুরে। বিল গেটস অনেক দিন ধরেই মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন। নিজের সম্পদের প্রায় পুরোটাই ব্যয় করছেন সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য। তবে কেবল অর্থ দানেই সুখ আছে, তা নয়। বিপদে যেকোনোভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ালেই সুখ খুঁজে পাবেন।
৩. শরীরচর্চা করুন নিয়মিত
বিল গেটস একাধিক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, নিয়মিত শরীরচর্চা তাঁর সুখের কারণ। টেনিস খেলেন নিয়মিত, ইদানীং ধ্যানেও মনোযোগ দিয়েছেন। মন ভালো করতে ঘাম ঝরানোর মতো বিকল্প কমই আছে। হতাশা, ক্রোধ, উদ্বেগ, ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলতে সকাল–বিকেল শরীরচর্চা টনিকের মতো কাজ করে। ২৪ জন নারীকে নিয়ে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত শরীরচর্চার ফলে তাঁদের হতাশা অনেকটাই কেটে গেছে। দৈনিক ১০ থেকে ৩০ মিনিটের ব্যায়ামে নিরানন্দ ভাব কেটে যায়। তাই সুখী হতে শারীরিক পরিশ্রম করুন।
৪. সবার আগে পরিবার
বিল গেটসের পরামর্শ হলো, পরিবারকে সবার আগে রাখুন। গেটস পেশাগত জীবনের শুরু থেকেই এটা মেনে আসছেন। দুনিয়ার সব এক দিকে, পরিবার আরেক দিকে। বিশেষ করে সন্তানদের জন্য তিনি সময় বের করেছেন হাজারো সমস্যার মধ্যেও। এমনকি সমান গুরুত্ব দেওয়ার বেলাতেও আপত্তি আছে গেটসের। অবশ্যই পরিবারকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। পেশাগত জীবনে খুব সমস্যা হলে বা পরিবারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে সহজ সূত্রও আছে। সূত্রটা হলো, পেশাক্ষেত্র আর পরিবারের মধ্যে একটা দেয়াল তুলে দিন।
গ্রন্থনা: মাহফুজ রহমান
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট অনলাইন