ইসরায়েল-আমিরাত 'ঐতিহাসিক চুক্তি'
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে রাজি হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। এই দুই দেশের ‘ঐতিহাসিক চুক্তির’ কথা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চুক্তির আওতায় অধিকৃত পশ্চিম তীরের আরও ভূমি দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা ইসরায়েল স্থগিত করবে বলে জানানো হয়েছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, এ বিষয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও আবুধাবির যুবরাজ মোহাম্মদ আল নাহিয়ান। বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করা হয়, ‘এই ঐতিহাসিক চুক্তি মধ্যপ্রাচ্য শান্তিপ্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাবে’। যৌথ বিবৃতি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন ‘মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে কৌশলগত এজেন্ডায়’ ইসরায়েল ও ইউইএ যুক্ত হবে। বিবৃতিতে নেতারা বলেন, তাঁদের আঞ্চলিক হুমকি ও সুযোগ একই ধরনের। তাঁরা কূটনৈতিক সম্পৃক্ততার মাধ্যমে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা সুসংহত করতে চান।
উপসাগরীয় অঞ্চলের আরব দেশগুলোর কারও সঙ্গেই ইসরায়েলের কূটনৈতিক কোনো সম্পর্ক নেই। যদিও ইরানের আঞ্চলিক প্রভাবের বিষয়টি মাথায় রেখে প্রায় সবাই ইসরায়েলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ রেখেছে।
ট্রাম্পের ওই ঘোষণার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু হিব্রু ভাষায় টুইট করেছেন, ‘ঐতিহাসিক দিন’।
ইউএইর দূত ইউসুফ আল ওতাইবা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এটা কূটনীতির জন্য জয়, এই অঞ্চলের জয়’। তিনি বলেন, আরব-ইসরায়েল সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটা গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি যা আঞ্চলিক উত্তেজনা কমাবে এবং ইতিবাচক পরিবর্তনের পক্ষে শক্তি জোগাবে।’
ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো আরব দেশের এই চুক্তি ১৯৪৮ সালে দেশটির স্বাধীনতা ঘোষণার পর মাত্র তৃতীয় ঘটনা। এর আগে ইসরায়েলের সঙ্গে ১৯৭৯ সালে মিসর ও ১৯৯৪ সালে জর্ডান চুক্তি করেছিল।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েল ও ইউএইর চুক্তির ধারাবাহিকতায় আগামী সপ্তাহগুলোতে এই দুই দেশের প্রতিনিধিরা বিনিয়োগ, পর্যটন, সরাসরি ফ্লাইট, নিরাপত্তা, টেলিযোগাযোগ, প্রযুক্তি, জ্বালানি, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি, পরিবেশ এবং পারস্পরিক দূতাবাস প্রতিষ্ঠার বিষয়গুলো নিয়ে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করার জন্য বৈঠকে বসবেন।
১৯১৭ সালে বেলফোর ঘোষণার ধারাবাহিকতায় ১৯৪৮ সালে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ইসরায়েল। ওই বছরই আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডসহ বেশ কিছু আরবভূমি দখল করে নেয় ইসরায়েল। এরপর ১৯৬৭ সালে আরব জোট-ইসরায়েল যুদ্ধে ফিলিস্তিনের প্রায় পুরোটাই ও মিসরে সিনাইয়ের কিছু ভূমিও দখল করে ইসরায়েল।