চীন-পাকিস্তান সীমান্ত নজরদারিতে ভারতের নতুন ড্রোন
চীন সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা এবং পাকিস্তান সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ রেখায় তদারকির জন্য ভারতীয় বাহিনী পেল সবচেয়ে হাল্কা ও ক্ষিপ্রগতি সম্পন্ন ড্রোন। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই উড়ন্ত নজরদারকে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরিডও) তুলে দিয়েছে ভারতীয় সেনা বাহিনীর হাতে।ড্রোনের নাম দেওয়া হয়েছে 'ভারত'।
এই ড্রোন হাতে পাওয়ার পর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) ও নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর দুর্গম অঞ্চলে আকাশপথে নজরদারি চালানো অনেক সহজ ও কার্যকর হয়ে যাবে। ডিআরডিওর পক্ষ থেকে সংবাদ সংস্থা এএনআইকে এই খবর জানানো হয়েছে।
জম্মু কাশ্মীরের পূর্ব ও পশ্চিম দুই সীমান্তে চীন ও পাকিস্তানি বাহিনীর সম্ভাব্য গতিবিধির উপর নজর রাখতে এমন ধরনের এক ড্রোনের প্রয়োজনীয়তা সেনা বাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী অনেক দিন ধরেই অনুভব করছিল। বিশেষ করে এলওসি এবং এলএসির যে সব অঞ্চল দুর্গম ও যেখানে অনুপ্রবেশ নিত্য ঘটনা। লাদাখের গলওয়ান, প্যাংগং লেক বা পশ্চিম সীমান্তের যেসব অঞ্চলে হেঁটে নজরদারি সম্ভব নয়, সেখানে এই ধরনের ড্রোন খুবই উপযুক্ত হবে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ধারণা। ডিআরডিও তাই বেশ কিছুদিন ধরেই এমন এক ড্রোন তৈরির চেষ্টায় ছিল। সেই চেষ্টা সফল হয়েছে বলে সংস্থার দাবি।
পাঞ্জাব ও হরিয়াণার যুগ্ম রাজধানী চন্ডিগড়ে ডিআরডিওর গবেষণাগারে তৈরি 'ভারত'–এর ওজন বা গতি কত তা অবশ্য জানানো হয়নি। তবে দাবি করা হয়েছে, শত্রু রেডারে 'ভারত'কে ধরা যাবে না। 'আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স' (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধি খাটিয়ে 'ভারত' শত্রু–মিত্রের পার্থক্য ধরারও ক্ষমতা রাখে। প্রবল ঠান্ডা ও ঘন জঙ্গলেও প্রায় নিখুঁত ছবি তুলবে ও সিগন্যাল দেবে। ডিআরডিওর দাবি, এর চেয়ে দ্রুতগতি ও হাল্কা ড্রোন পৃথিবীর কোনো দেশে নেই।
গলওয়ানে সংঘর্ষস্থলে কত চীনা সৈন্য জড়ো হয়েছিল ভারতীয় বাহিনী প্রথমে তা আন্দাজ করতে পারেনি। ওই সময়ে বাহিনীর হাতে 'ভারত' থাকলে তা জানা সহজতর হত। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এই দাবি জানিয়ে সংবাদ সংস্থাকে বলা হয়েছে, দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে নতুন এই ড্রোন খুবই প্রয়োজনীয় ও কার্যকর হবে।
সীমান্ত সংঘর্ষের পর ভারত প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির দিকে বিশেষ নজর দিয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সবকটি 'রাফাল' যুদ্ধবিমান চলে আসবে। এলএসি বরাবর 'সুখোই–৩০', 'মিগ–২৯', 'অ্যাপাশে' যুদ্ধ বিমান বছরভর প্রস্তুত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাবমেরিন ধ্বংসকারী 'পি–৮ আই' যুদ্ধবিমানের বকেয়াগুলো দ্রুত নিয়ে আসা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চালানো হচ্ছে যৌথ নৌ মহড়া। 'চীনা আগ্রাসন' রুখতে সবরকমভাবে প্রস্তুত হচ্ছে ভারত। ড্রোন 'ভারত'তারই অঙ্গ।