চীনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, সামরিক খাতে ব্যাপক পরিবর্তন
চীনকে বরাবরই সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক বন্ধুর চোখে দেখেছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু চীনের যুদ্ধংদেহী স্বভাবের কারণে দেশটির প্রতি আস্থা হারাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। করোনা পরবর্তী বিশ্বের জন্য নিজেদের তাই প্রস্তুত রাখতে সামরিক বাহিনীকে নতুনভাবে সাজাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। তাই এই করোনার সময়েও দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর আগামী দশ বছরের ৪০ শতাংশ বর্ধিত বাজেট পরিকল্পনা করেছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। দূরগামী ক্ষেপণাস্ত্র, সুপারসনিক আগ্নেয়াস্ত্র এবং অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ ও বিমান কেনাসহ নানা খাতে প্রায় ২৭ হাজার কোটি অস্ট্রেলীয় ডলার ব্যয় করার কথা ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান মরিসন সরকার। এ শুরুতে এসব ঘোষণা দিয়েছে তারা।
এশিয়া এবং প্রশান্ত-মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্ষমতার বিস্তার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার সৃষ্ট প্রতিযোগিতাকেও মারাত্মক ঝুঁকি হিসেবে দেখছে অস্ট্রেলিয়া। চীনকে সন্তুষ্ট করে চলার বহু চেষ্টা বেশির ভাগ সময়ই দেখা যেত দেশটির সরকারি ও বিরোধী বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের মধ্যে। অন্য পিঠে বৈশ্বিক রাজনীতিতে চীনের পক্ষ থেকেও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাপারে ‘ভালো ও খারাপ উভয় সময়ে আমরা একত্রে থাকব’ এই বাক্য উচ্চারিত হয়েছে বহুবার। ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার সংসদে দেওয়া ভাষণে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এ কথা বলার পর থেকে দুই দেশের সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বের আগ পর্যন্ত যেকোনো দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে এ বাক্য ছিল অনেকটা স্লোগানের মতো।
কিন্তু চলতি করোনাকালের মাঝামাঝি সময়ে এসে দৃশ্যপট পাল্টে যায়। চীনকে যখন এই মহামারি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক নিরপেক্ষ তদন্তের প্রস্তাব দেওয়া হয় তখন থেকে-ই মুদ্রার অন্য পিঠ দেখতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। প্রথমে বাগ্যুদ্ধ। তারপর হুমকি-ধামকি এরপর বাণিজ্যযুদ্ধ। অস্ট্রেলিয়া থেকে রপ্তানি করা বার্লির ওপর ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কর আরোপ করে চীন। তারপর স্থগিত করে অস্ট্রেলিয়া থেকে মাংস আমদানি। এরপর চীনা পর্যটকদের অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ না করতে সতর্কতা জারি। প্রায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে চীনা শিক্ষার্থীদের অস্ট্রেলিয়ায় আসা। আবার হঠাৎ করেই মাদক পাচারের দায়ে চীনে বিচারাধীন অস্ট্রেলীয় নাগরিককে ফাঁসির রায়। আরও একধাপ এগিয়ে ‘রাষ্ট্রীয়' মদদে অস্ট্রেলিয়ায় সাইবার আক্রমণ। ফলে, থেকে থেকে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে দ্রুত। অন্যদিকে এশিয়া এবং প্রশান্ত-মহাসাগরীয় অঞ্চলে চলমান সীমান্তের লড়াই নিয়ে চীনকে মূল ক্রীড়ানড়ক হিসেবে ইঙ্গিত করে উল্টোদিকে অবস্থান নেয় অস্ট্রেলিয়া।
রাষ্ট্র বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই পরিস্থিতি সামাল দিতেই প্রস্তুত হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। নতুন প্রতিরক্ষা কৌশল গ্রহণ করছে নিজেদের আত্মরক্ষার স্বার্থেই। দেশটি তাদের সৈন্য সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কেনার কথা বলেছে বেশ জোরেশোরেই। প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী চার বছরে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীতে নতুন ৮০০ সেনা যুক্ত করা হবে এবং নৌবাহিনীতে ৬৫০ জন ও বিমানবাহিনীতে ১০০ জন। নতুন প্রতিরক্ষা কৌশলের পরিকল্পনা জানানোর সময় চীনকে অনেকটা স্পষ্ট ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, 'অস্ট্রেলিয়া চায় এশিয়া এবং প্রশান্ত-মহাসাগরীয় অঞ্চল স্বাধীন থাকবে এবং যে কোনো একটি দেশের নিয়ন্ত্রণ সেখানে চলবে না।' প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, সীমান্ত ও বাণিজ্যসহ নানান কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বিরোধ গত কয়েক বছরে বেড়েছে। আর তাদের এই বিভেদ এখন চরম পর্যায়ে। করোনার মহামারি এই বিরোধকে আরও খারাপের দিকে নিয়ে গেছে যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বৈশ্বিক নিরাপত্তার সবচেয়ে অস্থিতিশীল দিক। এ প্রসঙ্গে মরিসন বলেন, ‘ যেকোনো সময় একটি ভুল সিদ্ধান্ত মারাত্মক ভয়াবহতা ডেকে আনতে পারে। আর সে জন্য আমরা নিজেদের প্রস্তুত করে তুলছি।’ এ সময় তিনি ভারত ও চীনের সাম্প্রতিক সীমান্ত বিরোধের কথাও উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে মরিসনের প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা বাজেট প্রকাশ করার পর দেখা যায় প্রতিরক্ষা খাতে সরকারের বাজেট অস্ট্রেলিয়ার জিডিপির প্রায় দুই শতাংশ। বাজেটের বেশির ভাগই ব্যয় হবে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম উন্নয়নে। অস্ট্রেলিয়া তাদের নৌবাহিনীর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর কাছ থেকে এজিএম ১৫৮ সি ধরনের ২০০টি দীর্ঘ যুদ্ধজাহাজ ও ক্ষেপণাস্ত্র কিনবে যা ৩৭০ কিলোমিটার দূরে আক্রমণ করতে পারে। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার কাছে যে ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে তা বড়জোর ১২৪ কিলোমিটার দূরে আক্রমণ করতে পারে। পাশাপাশি তারা নিজেরই দূরপাল্লার হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির প্রকল্প হাতে নিচ্ছে যা কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিতে সক্ষম হবে। সেই সাথে চালক-বিহীন ড্রোন বিমানের সংখ্যা অনেক গুন বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
সামরিক শক্তির পাশাপাশি সাইবার আক্রমণ ঠেকাতেও আরও তৎপরতা বৃদ্ধি করছে অস্ট্রেলিয়া। সাইবার খাতে দেড় হাজার কোটি অস্ট্রেলীয় ডলার ব্যয় করার কথা রয়েছে। গত মাসে অন্য কোনো দেশের ইন্ধনে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর সাইবার হামলার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী মরিসন। তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে এই খাতে আরও বড়সড় হুমকি মোকাবিলা করতে হতে পারে আমাদের।’
সামরিক খাতে এই ব্যাপক পরিবর্তনের ঘোষণার পরেই অস্ট্রেলিয়ার সরকারি গণমাধ্যম এবিসির পররাষ্ট্রবিষয়ক সংবাদদাতা স্টিফেন জেজিক বলেন, অস্ট্রেলিয়ার এই উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্র স্বাভাবিকভাবেই খুশি হবে। কারণ এর আগে এই অঞ্চলকে প্রায় একা-ই নজরদারি করতে হতো তাদের।
অন্যদিকে চীন অস্ট্রেলিয়ার এই সামরিক শক্তি বৃদ্ধিকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ বলে মন্তব্য করেছে। তবে সামরিক বিশ্লেষকেরা বলেছেন, এই মুহূর্তে চীনের পক্ষে অস্ট্রেলিয়ার সমালোচনা করা কঠিন কারণ চীন নিজেরাই উত্তরোত্তর সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করে যাচ্ছে। যদিও ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ানোর ঘোষণায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিল চীন। সামরিক খাতে অস্ট্রেলিয়া ২ হাজার ৯০০ কোটি ডলার ব্যয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত এই অঞ্চলে সেনা উপস্থিতি দীর্ঘায়িত করবে বলে তখন উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তখনকার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হু চুনিয়াং বলেছিলেন, আমরা অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার এমন পরিকল্পনায় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করছি।
সবকিছু মিলে চীনের ব্যাপারে কিছু অস্বস্তি থাকলেও অস্ট্রেলিয়া কখনো সরাসরি প্রকাশ করেনি কিন্তু সাম্প্রতিক একটার পর একটা চীনের যুদ্ধংদেহী মনোভাবের ফলে অস্ট্রেলিয়া কিছুটা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি দিশেহারাও হয়ে পড়েছে তারা। রাজনৈতিক অথবা দীর্ঘদিনের নির্ভরতা যে কারণেই হোক অস্ট্রেলিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বলয় থেকে বের হতে পারছে না অথবা বের হচ্ছে না। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়া এও বুঝে গেছে চীনের সঙ্গে বনিবনা সহজে আর হবে না তাই যুক্তরাষ্ট্রের পরও আশপাশে আরও বন্ধু খুঁজছিল মরিয়া হয়ে। সবকিছু মিলে ভারত-ই সে বন্ধু হতে পারে ভেবে সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে ভারতের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে অস্ট্রেলিয়া। গত জুনে দ্বিপক্ষীয় ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলন হয় এই দুই দেশের মধ্যে। দ্বিপক্ষীয় সম্মেলনের আগেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে শিঙারা ভেজে খাওয়াতে চেয়েছিলেন অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। এ শিঙারা ভাজা যে বিশেষ কিছু সে খবর বেশ বড় করে প্রচারও হয়েছিল উভয় দেশের গণমাধ্যমে তখন।
আবার হংকংয়ের বাসিন্দাদের দমনের জন্য সম্প্রতি চীন যে নতুন নিরাপত্তা আইন পাশ করছে তখন অস্ট্রেলিয়াও চীনের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার সুযোগটা হাতছাড়া করে নি। তখন অস্ট্রেলিয়া হংকংয়ের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেয়। এতে চীন বেশ ভালোই চটে। কিন্তু সেসব এবার আর তোয়াক্কা করে নি অস্ট্রেলিয়া। প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন চীনের বিপরীতে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান আরও স্পট করতে শুধু চুক্তি-ই বাতিল করেননি বরং হংকংয়ের বাসিন্দাদের জন্য ভিসার মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন এবং কাজ অথবা শিক্ষার্থী ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় থাকা হংকংয়ের নাগরিকেরা পরবর্তী সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পাবেন বলেও ইঙ্গিত দেয় মরিসন সরকার। আগে চীনের ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান যা-ও একটু অস্পষ্ট ছিল এবার অনেকটায় রাখঢাকহীন। প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, নতুন আইন চালু হওয়ার পরে আদৌ হংকংয়ে থাকাটা নিরাপদের হবে কি না, সেটা ভেবে দেখার সময় এসেছে। তবে বিষয়টি নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন। অস্ট্রেলিয়া সরকারকে এর ফল ভুগতে হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান।
অন্যদিকে, শুধু-ই কি এই। বাগ্যুদ্ধ কিংবা বাণিজ্যযুদ্ধ, নাকি আরও শঙ্কা কাজ করে অস্ট্রেলিয়ার মনে, এ রকম ধারাবাহিক প্রশ্ন উঠছে গণমাধ্যমের বিভিন্ন আলোচনায়। অস্ট্রেলিয়া তার জনসংখ্যা এবং কৌশলগত অবস্থানের তুলনায় তাদের শক্তপোক্ত সামরিক শক্তি রয়েছে। সামরিক শক্তির দিক থেকে অস্ট্রেলিয়া বর্তমানে পৃথিবীর ১৯তম দেশ। ইসরায়েলের পর পর-ই তাদের অবস্থান। তারপরও সামরিক খাতকে কেন দিন দিন বাড়াচ্ছে অস্ট্রেলিয়া এ রকম প্রশ্নের উত্তরে বিশ্লেষকেরা দিয়েছেন নতুন নতুন তথ্য।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অধ্যাপক অ্যাশলে টাউন্সেন্ড লিখেছেন, অস্ট্রেলিয়ার প্রধান লক্ষ্য হলো সংকট তৈরি হলে তারা যেন চীনা সেনাবাহিনী, চীনা স্বার্থ এবং অবকাঠামোতে আঘাত করতে পারে। কারণ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরে অস্ট্রেলিয়া এবং তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিগত এবং সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব এখন আর নেই বলেই মনে করা হয়। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৫ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মিলিত শক্তির চেয়ে চীনের একার শক্তি বেশি হবে আর এটায় অস্ট্রেলিয়ার চিন্তার বিষয়।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে চীন অনেক দিন ধরেই প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে অবস্থান নেওয়ার মতো একটা জায়গা খুঁজছিল। এখন দ্বীপপুঞ্জ রাষ্ট্র কিরিবাতিতে অস্ট্রেলিয়াকে পেছনে ফেলে জায়গা করে নিচ্ছে চীন। এখানে যদি চীন সামরিক ঘাঁটি তৈরি করতে পারে তবে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের পক্ষে মারাত্মক অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠবে চীন এবং কিরিবাতিতে ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি করতে পারলে মার্কিন প্রশাসনকেও একহাত দেখে নিতে পারবে চীন। কারণ ক্ষেপণাস্ত্রের পরিসীমার মধ্যে চলে আসবে মূল মার্কিন ভূখণ্ড। বিশ্লেষকদের ধারণা, কিরিবাতিতে চীনা সামরিক শক্তির উপস্থিতিতে রাতের ঘুম ছুটে যাবে অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকার।
বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু সামরিক বাজেট বৃদ্ধিই নয়, চীনের মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র-জাপান-ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে গত প্রায় এক দশক ধরে ‘কোয়াড‘ নামে যে বলয় গড়ে উঠছে তাতে অস্ট্রেলিয়া আরও ঘনিষ্ঠ সম্পৃক্ততা চাইছে। ২০১৫ সাল থেকে প্রতি বছর জাপান-ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র যে যৌথ নৌ মহড়া করে। তাতে চীন অখুশি হবে বলে ভারত অস্ট্রেলিয়ার অংশগ্রহণে আপত্তি তুলে আসছে এতদিন। কিন্তু এবার চীন-ভারত সীমান্ত বিরোধ সেই পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাপারে ভারত এবার তাদের আপত্তি তুলে নিচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত এবং আগামী আগস্ট মাসে যে মহড়া হওয়ার কথা তাতে হয়তো এবার অস্ট্রেলিয়াও থাকবে। ফলে, অনেকটায় পরিষ্কার সামরিক খাতে ব্যাপক পরিবর্তন এনে চীনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।