'বিশ্বাস করুন, চরম বিপর্যয় এখনো বাকি'
করোনাভাইরাস মহামারির চরম বিপর্যয়কর সময়টি এখনো আসেনি বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের বিশ্বাস করুন। চরম বিপর্যয় আসা এখনো বাকি।’
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় গত সোমবার এসব কথা বলেন তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস। বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ ও মৃত্যু কমার ইঙ্গিত পেয়ে কিছু দেশে বিধিনিষেধ শিথিল করা শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই এই সতর্কতা দিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক।
তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেন, ‘আসুন, একসঙ্গে এই মর্মান্তিক পরিস্থিতি প্রতিরোধ করি। এই ভাইরাস সম্পর্কে এখনো অনেক মানুষ অনেক কিছুই জানে না।’ এ সময় তিনি করোনাভাইরাস মহামারিকে স্প্যানিশ ফ্লু মহামারির সঙ্গে তুলনা করেন। ১৯১৮ সালে দেখা দেওয়া ওই মহামারিতে বিশ্বজুড়ে ১০ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়।
তবে করোনাভাইরাস স্প্যানিশ ফ্লুর মতো মহামারি হয়ে উঠবে না বলেও মন্তব্য করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন প্রযুক্তি রয়েছে। আমাদের দুর্যোগ ঠেকানোর সক্ষমতা রয়েছে। আমরা ওই ধরনের (স্প্যানিশ ফ্লু) সংকট মোকাবিলা করতে পারব।’
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অবস্থানের পক্ষে কথা বলেন তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় গোপন কোনো কিছু নেই। কারণ, কোনো কিছু গোপন করা বিপজ্জনক। এই পরিস্থিতি (করোনাভাইরাস) একটি স্বাস্থ্যগত সংকট। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিরুদ্ধে অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে অর্থায়ন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক তাকেশি কাসাই গতকাল মঙ্গলবার সতর্ক করে বলেছেন, এখনই লকডাউন তুলে নিলে মহামারি আরও প্রকট হতে পারে। ঘটতে পারে বিপর্যয়। লকডাউন বা অবরুদ্ধ অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে ধীরে ধীরে ধারাবাহিকভাবে।
তাকেশি কাসাই বলেন, লকডাউন বা অবরুদ্ধ করার পদক্ষেপ কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। মানুষকে এখন সমাজ সচল রাখতে নতুনভাবে বাঁচার পথ অনুসন্ধানের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জীবন ও স্বাস্থ্যব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। করোনার টিকা বা কার্যকর চিকিৎসাপদ্ধতি উদ্ভাবন না হওয়া পর্যন্ত এই পরিবর্তনকে মেনে নিতে হবে।’
লকডাউন তুলে নেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করলেও তাকেশি কাসাই পোলিও, হাম, রুবেলাসহ অন্যান্য রোগের টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত রাখার তাগিদ দেন।