করোনা-ঢালে আটকাল কমলনাথের পতন

ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ। এএফপি ফাইল ছবি
ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ। এএফপি ফাইল ছবি

করোনাকে ঢাল করে আপাতত সরকার বাঁচালেন মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ। রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশন আজ সোমবার শুরু হলেও করোনা আতঙ্কের দরুন স্থগিত করে দেওয়া হলো ১০ দিনের জন্য। ফলে ২৬ মার্চ পর্যন্ত টিকে গেল কংগ্রেস সরকার।

প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টে গেছেন রাজ্যের বিজেপি নেতারা। দরবার করেছেন রাজ্যপালের কাছেও। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বলেছেন, করোনা অস্ত্র প্রয়োগ করলেও কমলনাথ সরকার বাঁচাতে পারবেন না।

করোনার কারণে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থান বিধানসভার অধিবেশনও ২৬ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয় গত শুক্রবার। ওই রাজ্যেও কংগ্রেসি কোন্দলকে কাজে লাগিয়ে সরকার দখলে বিজেপি তৎপর।

মধ্যপ্রদেশ সরকারের সংকট শুরু হয় কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার দলত্যাগের সময় থেকে। কংগ্রেসের এই শীর্ষ নেতা সম্প্রতি ২২ জন অনুগামী বিধায়ক সঙ্গে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। বিধায়কদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় বিজেপি শাসিত কর্ণাটকে। তাঁদের পদত্যাগপত্র স্পিকার গ্রহণে অস্বীকার করেন, যেহেতু তাঁরা সশরীর হাজির হয়ে পদত্যাগ করেননি। তাঁদের হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও বিধায়কেরা বেঙ্গালুরুতেই থেকে যান।

এ অবস্থায় সোমবার থেকে শুরু হয় বাজেট অধিবেশন। রাজ্যপাল লালজী ট্যান্ডনও প্রথম দিনেই সরকারকে আস্থা ভোট নেওয়ার ‘নির্দেশ’ দেন। বিধানসভার স্পিকারকে রাজ্যপাল নির্দেশ দিতে পারেন কি না, তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। সেই বিতর্কের মাঝেই রীতি অনুযায়ী সরকারের তৈরি করে দেওয়া ভাষণ পাঠ না করে ‘সাংবিধানিক মর্যাদা রক্ষার’ আবেদন জানিয়ে বিধানসভা ছেড়ে চলে যান রাজ্যপাল। এরপরেই স্পিকার নর্মদা প্রসাদ প্রজাপতি করোনার কারণ দেখিয়ে সভার অধিবেশন ২৬ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে দেন।

টানা ১৫ বছরের বিজেপি শাসনের অবসান ঘটিয়ে মাত্র ১৫ মাস আগে কংগ্রেস মধ্যপ্রদেশ দখল করেছিল। ২৩০ আসনবিশিষ্ট বিধানসভায় ২টি আসন খালি রয়েছে। কমলনাথ মন্ত্রিসভার ৬ জন মন্ত্রীর ইস্তফা স্পিকার গ্রহণ করায় মোট আসন কমে হয়েছে ২২২। গরিষ্ঠতা প্রমাণে প্রয়োজন ১১২ জনের সমর্থন। ২২ জন বিক্ষুব্ধের পতদ্যাগপত্র গৃহীত হলে কংগ্রেসের পক্ষে গরিষ্ঠতা প্রমাণ অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথকে সরকার বাঁচাতে হলে বিক্ষুব্ধদের জোটে ভাঙন ধরানো জরুরি। সেই কাজে সাফল্য ও ব্যর্থতার ওপরেই নির্ভর করছে কংগ্রেস সরকারের ভাগ্য।