২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

হাফিজ সাঈদের সাজা কার্যকর দেখতে চায় ভারত

হাফিজ সাঈদ। ছবি: রয়টার্স
হাফিজ সাঈদ। ছবি: রয়টার্স

২০০৮ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার অন্যতম সন্দেহভাজন পরিকল্পনাকারী হাফিজ সাঈদকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগে ছয় বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন পাকিস্তানের একটি আদালত। এ ঘটনায় ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসী নেতা ও গ্রুপ পরিচালনাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

এনডিটিভি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, সরকারি সূত্রগুলো গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখেছে যে পাকিস্তানের একটি আদালত সন্ত্রাসী অর্থায়নের অভিযোগে হাফিজ সাঈদকে সাজা দিয়েছেন। সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি হিসেবে পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতার অংশ এটি। বৈশ্বিক সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থা দ্য ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) সভার প্রাক্কালে পাকিস্তান এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা এখন দেখার বিষয়।

সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের বিরুদ্ধে কাজ করা ওই টাস্কফোর্সের সভায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, তা এখন দেখার বিষয়। পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করলে আন্তর্জাতিক নানা সাহায্য থেকে বঞ্চিত হবে দেশটি এবং স্বাধীন রেটিংদাতা সংস্থাগুলোর কাছে মান নেমে যাবে। পাকিস্তান অন্য সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবে, সেটিও এখন দেখার বিষয়।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে হাফিজ সাঈদের আইনজীবী ইমরান গিল বলেন, তাঁকে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠনের অংশ এবং অবৈধ সম্পত্তি থাকার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এফএটিএফের সম্ভাব্য কালো তালিকা থেকে ছাড় পেতে তাঁকে জেলে যেতে হচ্ছে। এর সঙ্গে এই মামলার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা এফএটিএফের চাপের অংশ।

ইমরান গিল অবশ্য হাফিজ সাঈদের সাজার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি। তবে তাঁকে লাহোর জেলে রাখা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন।

ধারণা করা হচ্ছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের চাপে পাকিস্তান এই উগ্রপন্থী নেতার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নিয়েছে। এর আগে তাঁর মাথার মূল্য এক কোটি ডলার ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

সাঈদকে ২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করে ভারত। ১০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী রাইফেল ও গ্রেনেড দিয়ে ওই হামলা চালায়। ওই হামলায় ১৬৬ জন নিহত হন।

জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচিত সাঈদ। ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার পর তাঁকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। তবে সাঈদ মুম্বাই হামলার সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে অবশেষে হাফিজ সাঈদের বিরুদ্ধে মামলা করে পাকিস্তান।

পাকিস্তানের পাঞ্জাব পুলিশের সন্ত্রাস দমন বিভাগের করা এফআইআরে হাফিজ সাঈদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগান দেওয়া ও অর্থ তছরুপের অভিযোগ আনা হয়েছে।

২০১৭ সালে সন্ত্রাসবাদ আইনে হাফিজ সাঈদ এবং তাঁর চারজন সঙ্গীকে আটক করে পাকিস্তান সরকার। তবে ১১ মাস পরে তাঁদের আটক করে রাখার মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকার করে মুক্তি দেয় পাঞ্জাবের বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনাসংক্রান্ত বোর্ড।

সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন বন্ধে ব্যর্থতার অভিযোগে অর্থ পাচার পর্যবেক্ষণ সংস্থা এফএটিএফের কালো তালিকাভুক্ত হওয়ার পথে আছে পাকিস্তান। সেই সময়ই হাফিজের এই দণ্ড হলো।