নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ-হত্যায় উত্তাল ভারত
ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদ শহরে প্রাণিচিকিৎসক এক নারীকে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে ভারতজুড়ে। গত শনিবার হাজারো মানুষ শহরের একটি পুলিশ স্টেশনের বাইরে জড়ো হয়। তারা অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানায়। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ব্যাপক জনবিক্ষোভের মুখে গতকাল রোববার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও বলেন, দ্রুত বিচার আদালতে এই মামলার কাজ হবে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।
এর আগে শনিবারই এ ঘটনায় তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ওই চিকিৎসকের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতেই তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ঘটনার দিন পুলিশ সহযোগিতা করেনি বলে ওই তরুণীর বাবা অভিযোগ করেন। তাঁর ভাষ্য, ঘটনার রাতে মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ডায়েরি করতে তিনি থানায় গিয়েছিলেন। অভিযোগ না নিয়ে তাঁকে অপদস্থ করা হয়। এই অভিযোগেই ওই সময় দায়িত্বে থাকা তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার সকালে ওই নারী চিকিৎসকের দগ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ বলছে, তাঁকে হত্যার আগে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। এই ঘটনায় ট্রাকচালক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের প্রত্যেকের বয়স ২০-এর ঘরে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
গ্রেপ্তার করা দুজনের মা বলেন, তাঁদের সন্তান দোষী হলে যেন শাস্তি পায়। প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গ্রেপ্তার হওয়া এক ব্যক্তির মা বলেন, ‘আমার ছেলে দোষী হলে যা শাস্তি তা-ই দেওয়া হোক। কারণ আমার নিজেরও মেয়ে আছে।’
হায়দরাবাদের শামসাবাদের থাকতেন ওই চিকিৎসক। ওখানকার বাসিন্দারা এ ঘটনায় ব্যাপক বিক্ষোভ করছে। তারা বাড়ির মূল ফটকে তালা মেরে প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় নেমেছে। প্লাকার্ডগুলোতে বলা হচ্ছে, ‘কোনো মিডিয়া নেই, পুলিশ নেই, বাইরের লোক নেই। সহানুভূতি চাই না, কেবল পদক্ষেপ আর ন্যায়বিচার চাই।’
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত বুধবার রাতে স্কুটিতে করে ক্লিনিক থেকে বাড়ি ফিরছিলেন ওই চিকিৎসক। শামসাবাদের কাছে টোল প্লাজার সামনে ওই স্কুটি নষ্ট হয়ে যায়। সাহায্যের খোঁজ করতে থাকেন ওই নারী। এই সময় চার ব্যক্তি ওই নারীকে টোল বুথের কাছে একটি ঝোপে নিয়ে ধর্ষণ করেন। তাঁর ওপর নারকীয় অত্যাচার চালায়। তারা তাঁর ফোন বন্ধ করে দেন, তাঁর মুখে মদ ঢেলে দেন। পরে তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। লাশ একটি কম্বলে মুড়িয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।