অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে আর্জেন্টিনা বেছে নিলে আলবার্তোকে
তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে চলা আর্জেন্টিনা পেল নতুন প্রেসিডেন্ট। বর্তমান বিরোধীদলীয় মধ্য-বামপন্থী নেতা আলবার্তো ফার্নান্দেজ প্রয়োজনের চেয়ে ৪৫ শতাংশের ওপরে ভোট পেয়ে জয়ী হন। হেরে গেছেন ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট মাউরিসিও মাক্রি।
এবারের নির্বাচনের মূল লড়াইটি হয়েছে অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্য প্রস্তাবিত দুটি নীতির মধ্যে। একটি দরিদ্রবান্ধব পেরোনিস্ট নীতি, সাবেক প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা ফার্নান্দেজ ডি কির্চনারকে রানিং-মেট হিসেবে নিয়ে যার নেতৃত্বে আলবার্তো ফার্নান্দেজ। আর অন্য পক্ষে ব্যবসায়ীবান্ধব মুক্তবাজার নীতি নিয়ে ছিলেন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মরিসিও মাক্রি।
বিবিসির খবরে বলা হয়, গভীর অর্থনৈতিক সংকটে আর্জেন্টিনার জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে। তাই নির্বাচনে প্রাধান্য পেয়েছে অর্থনৈতিক উদ্বেগ। আর এর প্রভাব পড়েছে নির্বাচনী ফলেও। ভোটারেরাও দিন বদলের আশায় নতুন নেতাকে বেছে নিয়েছেন।
আর্জেন্টিনার আইন অনুযায়ী, কোনো প্রার্থী যদি ৪৫ শতাংশ ভোট পান কিংবা ৪০ শতাংশ ভোট ও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ১০ শতাংশ ভোটে এগিয়ে থাকেন তবেই তিনি সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। নইলে নিকটতম দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্য থেকে একজনকে বেছে নিতে ফের ভোটাভুটি হবে।
রোববার রাতে ৯০ শতাংশ ভোট গণনার পর দেখা যায়, ফার্নান্দেজ ৪৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন আর মাক্রি পেয়েছেন ৪০ দশমিক ৭১ শতাংশ ভোট।
নির্বাচন পূর্ব জরিপেও ফার্নান্দেজের পেছনে ছিলেন মাক্রি এবং গত আগস্টে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে হেরেছিলেন। তবে এরই মধ্যে মাক্রি তাঁর পরাজয় মেনে নিয়ে আলবার্তোকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। নিয়মতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে আলোচনার জন্য ফার্নান্দেজকে সোমবার সকালে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। আগামী ১০ ডিসেম্বর আলবার্তো ক্ষমতায় আসীন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রাতেই ফার্নান্দেজের নির্বাচনী সদর দপ্তরের সামনে বহু লোক জড়ো হয়ে নির্বাচনের ফলাফল উদযাপন করেন।
নির্বাচনের আগে আলবার্তো ফার্নান্দেজ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আর্জেন্টিনার অর্থনীতিকে তিনি সবল করবেন। ঐক্যের ডাক দেওয়া এ নেতা জোর দিয়ে বলছেন যে, তিনি ব্যর্থ হবেন না।
মাক্রি দারিদ্র্যকে শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও তাঁর ক্ষমতার চার বছরে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। তাঁর সমর্থকেরা বলেন, তিনি যখন ক্ষমতায় এসেছেন তখনই ভঙ্গুর অর্থনীতি ছিল । এ পরিস্থিতিকে কাটিয়ে উঠতে তাঁর আরও সময় দরকার। তবে আলবার্তো অর্থনীতিকে টেকসই রাখতে সঠিক প্রার্থীকে বেছে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন