হেলিকপ্টার ধ্বংস করা ছিল 'বিরাট ভুল'
ভারতীয় বিমানবাহিনীর (আইএএফ) প্রধান রাকেশ কুমার সিং ভাদুড়িয়া বলেছেন, ফেব্রুয়ারি মাসে কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে নিজেদের এমআই-১৭ হেলিকপ্টার ধ্বংস করা একটি ‘বিরাট ভুল’ ছিল। গতকাল শুক্রবার তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় বিমানবাহিনীর দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
২৭ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখার বুদগাম এলাকায় ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানের মধ্যে গুলিবিনিময় হয়। ‘বুদগাম চপার ক্রাশ’ বলে পরিচিত এ ঘটনায় আইএএফের ছয়জন সদস্য এবং একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।
বিমানবাহিনীর প্রধান বলেছেন, ‘এটি আমাদের পক্ষ থেকে একটি বিরাট ভুল ছিল। আমরা ভুল স্বীকার করছি।’ গত সপ্তাহে আদালতের তদন্ত শেষ হয়েছে বলে জানান তিনি।
ভাদুড়িয়া বলেন, ‘আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রই হেলিকপ্টারে আঘাত হেনেছে, এতে সন্দেহ নেই। এ ব্যাপারে প্রশাসনিক পদক্ষেপ এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইএএফের সৈন্যরা পাকিস্তান ভূখণ্ডে প্রবেশ করে বালাকোটে জঙ্গিদের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বোমা ফেলে। এর এক দিন পরই শ্রীনগরের কাছে বুদগামে এমআই-১৭ ভি৫ হেলিকপ্টারটি গুলি করে ধ্বংস করা হয়।
আদালতের তদন্তে দেখা গেছে, শ্রীনগর বিমানঘাঁটির স্পাইডার বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্রপদ্ধতি থেকে হেলিকপ্টারটিতে আঘাত হানা হয়।
জানা গেছে, বিমানবাহিনীর প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পরিচালনাকারী কর্মকর্তারা ভুল করে ভেবেছিলেন, এটি শত্রুপক্ষের হেলিকপ্টার। উড্ডয়নের ১০ মিনিট পরই হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। এমআই-১৭ হেলিকপ্টার ভেঙে দুই ভাগ হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে এতে আগুন ধরে।
দুই দেশের সর্বশেষ সংকটের শুরু গত ১৪ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় দেশটির আধা সামরিক সিআরপিএফের গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলায় ৪০ জওয়ান নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মুহম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করে।
এই ঘটনার ১২ দিন পর পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারত। পরদিন দুই দেশের সেনাদের মধ্যে কাশ্মীর সীমান্তে গোলা ও গুলিবিনিময় হয়। এর পরদিন সকালে বালাকোটে হামলার বদলা নেয় পাকিস্তান। এরপর আকাশযুদ্ধে ভারত হারায় দুটি যুদ্ধবিমান। পাকিস্তান বাহিনীর হাতে বন্দী হন দেশটির এক পাইলট উইং কমান্ডার অভিনন্দন। অন্যদিকে পাকিস্তান হারায় একটি যুদ্ধবিমান।