দক্ষিণ এশীয় স্পিকার সম্মেলনে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়
মালদ্বীপে দক্ষিণ এশীয় স্পিকার সম্মেলনে পাকিস্তানের জম্মু ও কাশ্মীরের বিষয়টি উত্থাপনের প্রচেষ্টা রুখে দিয়েছে ভারত। সম্মেলন চলাকালে ভারত ও পাকিস্তানের প্রতিনিধিদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়।
এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গতকাল রোববার দক্ষিণ এশীয় স্পিকার সম্মেলনে এই ঘটনা ঘটে।
পাকিস্তানের প্রচেষ্টার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত বলেছে, ইসলামাবাদের উচিত সন্ত্রাসবাদের প্রতি সব ধরনের রাষ্ট্রীয় সমর্থন বন্ধ করা। এটাই মানবতার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।
মালদ্বীপের পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সম্মেলনে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আলোচনার সময় পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি কাশ্মীর ইস্যুটি উত্থাপনের চেষ্টা করেন।
ভারতের প্রতিনিধি সঙ্গে সঙ্গে পয়েন্ট অব অর্ডার উত্থাপন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনার প্রিসাইডিং অফিসার পাকিস্তানের প্রতিনিধি কাসিম সুরিকে ভারতীয় প্রতিনিধি রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশকে কথা বলার সুযোগ দিতে বলেন। কিন্তু কাসিম সুরি এ কথায় কান না দিলে সম্মেলনে হইচই শুরু হয়।
এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান ভারতের প্রতিনিধি। সম্মেলনে ভারতের অভ্যন্তরীণ ইস্যু উত্থাপন ও তা নিয়ে রাজনীতি করার জন্য পাকিস্তান প্রতিনিধিকে তুলাধোনা করেন হরিবংশ।
হরিবংশ বলেন, ‘এই ফোরামে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় উত্থাপনের ব্যাপারে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে সম্মেলনের মূল বিষয়বস্তুবহির্ভূত ইস্যু উত্থাপন করে এই ফোরামকে রাজনৈতিকীকরণের বিষয়টি আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।’
ভারতের প্রতিনিধি বলেন, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে পাকিস্তানের উচিত আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসবাদসহ সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের প্রতি রাষ্ট্রীয় সমর্থন বন্ধ করা। সন্ত্রাসবাদ আজ সমগ্র মানবতার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।
পাকিস্তানের সিনেটর কুরাতুলাইন মারি হরিবংশের বক্তব্যে আপত্তি জানান। তিনি বলেন, মানবাধিকার ছাড়া নারী ও তরুণদের জন্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে না।
পাকিস্তানি এই সিনেটরের বক্তব্যের জেরে ফের পয়েন্ট অব অর্ডার নেন ভারতীয় রাজ্যসভা ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ। তিনি বলেন, মানবাধিকারসম্পর্কিত বিষয় উত্থাপনের জন্য পাকিস্তানের কি নৈতিক অধিকার আছে? বিশ্ব জানে, তারা কীভাবে নিজ দেশের একটি অংশে গণহত্যা চালিয়েছিল। সেই অংশ এখন স্বাধীন বাংলাদেশ।
সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিল করে। জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নেয়। জম্মু ও কাশ্মীরকে ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করে ভারত সরকার। এই ঘটনার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। পাকিস্তান বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বিষয়টি উত্থাপন করার চেষ্টা করছে। তবে ভারত সব সময়ই বলছে, এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।