নির্ভুল এনআরসির জন্য রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চায় সচেতন নাগরিক মঞ্চ
নির্ভুল জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) তালিকার দাবিতে এবার রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চাইল আসামের সচেতন নাগরিক মঞ্চ।
সামাজিক সংস্থাটি আসামের ৩০ লাখ মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছে ত্রুটিমুক্ত এনআরসি তালিকা প্রকাশের আবেদন জানাবে। গতকাল রোববার গুয়াহাটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানায় সংস্থাটি।
৩১ জুলাইয়ের মধ্যেই প্রকাশিত হবে আসামের বহুল আলোচিত এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা। তালিকায় বাদ পড়তে পারেন—এমন আতঙ্কে আছেন ভাষীক (বাঙালি) ও ধর্মীয় (মুসলিম) সংখ্যালঘুরা।
চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় ৩ কোটি ২৯ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৪ আবেদনকারীর মধ্যে ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৭ জনের নাম নেই। পরবর্তীতে সংযোজনের আবেদন জমা নেওয়ার সময় ৯ লাখেরও বেশি মানুষ আবেদনই করেননি। ফলে এই ৯ লাখের নাগরিকত্ব খোয়ানো প্রায় নিশ্চিত। সেই সঙ্গে খসড়া তালিকাভুক্ত অনেকেরই নামের বিরুদ্ধে জমা পড়েছে আপত্তি। দেখা গেছে, বাঙালিদের নাগরিকত্বই বেশি প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
এই অবস্থায় রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলের নেতা দেবব্রত শইকিয়া মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এনআরসি কর্তারা নিজেদের নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ। লাখ লাখ মানুষের নাগরিকত্ব তাই প্রশ্নের মুখে পড়েছে। সুপ্রিম কোর্টের উচিত বৈধ নাগরিকেরা যাতে বাদ না পড়েন, তা নিশ্চিত করা।’
তবে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এনআরসি প্রক্রিয়ায় বৈধ কোনো নাগরিকের নাম বাদ যাবে না। তিনি বলেন, নির্ভুল এনআরসি তালিকা প্রকাশে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সচেতন নাগরিক মঞ্চ আশঙ্কা প্রকাশ করে, নির্ভুল এনআরসি তালিকা প্রকাশ নাও হতে পারে। এনআরসি প্রক্রিয়ায় ভুল হলে আসামের ‘সর্বনাশ’ হবে বলে মনে করছে তারা।
মঞ্চের আহ্বায়ক চন্দন ভট্টাচার্য জানান, রাজ্যের মানুষ চাইছে নির্ভুল এনআরসি। তাই ৩০ লাখ আসামবাসীর স্বাক্ষর সংবলিত দাবিপত্র রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে পাঠানো হবে।
সম্প্রতি এনআরসির দুই কর্মী সৈয়দ শাহজাহান ও রাহুল পরাসর ১০ হাজার রুপি ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন। রাজধানী গুয়াহাটির আনন্দনগর এলাকার কাজরি ঘোষের কাছ থেকে তাঁরা ঘুষ নিচ্ছিলেন। পাশাপাশি মরিগাঁওয়ে বিদেশি ট্রাইব্যুনাল ঘোষিত ৩৯ পরিবারে ‘বিদেশি’ বলে ঘোষিত ২০০ জনের নাম উঠেছে এনআরসি তালিকায়।
দুটি ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরে চন্দন রাষ্ট্রপতির কাছে নিরপেক্ষ এনআরসি তালিকা প্রকাশের দাবি জানাতে চান। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে তাঁরা এ বিষয়ে হলফনামা জমা দিয়েছেন।