সুইডেনে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা ফের চালু
অনলাইনভিত্তিক অলাভজনক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম উইকিলিকসের সহপ্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ধর্ষণের যে তদন্ত সুইডেন বন্ধ করে দিয়েছিল, তা পুনরায় শুরু হয়েছে। অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যিনি এ অভিযোগ এনেছিলেন, তাঁর আইনজীবীর অনুরোধে তদন্ত পুনরায় শুরু হলো। তবে সুইডেনে প্রত্যাবাসন এড়াতে অ্যাসাঞ্জ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের আফগানিস্তান অভিযানের প্রায় ৭০ হাজার শ্রেণিবদ্ধ নথি ২০১০ সালের জুলাইয়ে প্রকাশ করেছিল উইকিলিকস। এসব তথ্য পরে বিশ্ব গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া ওই বছরের অক্টোবর নাগাদ ইরাক আক্রমণের ৪ লাখ নথি এবং যুক্তরাষ্ট্রের আড়াই লাখ কূটনৈতিক তারবার্তা প্রকাশ করে অ্যাসাঞ্জের প্রতিষ্ঠান। মূলত এসব কারণে যুক্তরাষ্ট্রের তোপের মুখে পড়েন তিনি। পরে ধর্ষণের অভিযোগে সুইডেনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের বিচারক আদেশ দেন, অ্যাসাঞ্জকে সুইডেনের কাছে তুলে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু অ্যাসাঞ্জের ভয় ছিল, তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হতে পারে, যেখানে তাঁর মৃত্যুদণ্ড হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। ফলে ব্রিটিশ পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন অ্যাসাঞ্জ। কিন্তু ওই বছরই যৌন হয়রানির অভিযোগে ইউরোপে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে সুইডেন। এরপর ২০১২ সালের ১৯ জুন যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে তিনি সেখানেই ছিলেন। এ ছাড়া ২০১৭ সালের মে মাসে সুইডেন ধর্ষণ মামলা প্রত্যাহার করে। কিন্তু ওই বছরই যুক্তরাজ্য তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। আর চলতি বছরের ১১ এপ্রিল ব্রিটিশ পুলিশ অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তার করে।
জামিনের শর্ত ভাঙার কারণে সম্প্রতি যুক্তরাজ্যর আদালত অ্যাসাঞ্জকে ৫০ সপ্তাহ কারাদণ্ড দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি লন্ডনের বেলমার্শ কারাগারে রয়েছেন।
মূলত ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নেওয়ায় ধর্ষণের মামলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন সুইডেনেরে কৌঁসুলিরা। কিন্তু গতকাল সোমবার দেশটির বিচার বিভাগের কর্মকর্তা ইভা মারিয়ে পারসন ঘোষণা দেন, ওই মামলা পুনরায় চালু হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এ মামলা চালু করার সম্ভাব্য কারণ হলো অ্যাসাঞ্জ ধর্ষণের চেষ্টা করেছিলেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রেও অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। অনুমতি ব্যতীত কম্পিউটারে প্রবেশের এ অভিযোগ তাঁর পাঁচ বছর কারাদণ্ড হতে পারে।