রোহিঙ্গা নিপীড়ন তদন্তে সামরিক আদালত গঠন
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ২০১৭ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের সময় রোহিঙ্গা নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে সামরিক আদালত গঠন করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। গতকাল সোমবার মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের কার্যালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি পুলিশের তল্লাশিচৌকিতে হামলার জের ধরে সেখানে সন্ত্রাস দমন অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। এরপর প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে। তাদের সবাই অভিযোগ করেছে, মিয়ানমারের সেনারা রোহিঙ্গাদের হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন এবং তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজ চালিয়েছে। জাতিসংঘ রোহিঙ্গা নিপীড়নের এ ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে অভিহিত করেছে। গত বছর জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান মিশন বলেছে, রাখাইনে ‘গণহত্যার উদ্দেশ্যে’ সেনাবাহিনী অভিযান চালায়। দেশটির সেনাপ্রধান ও পাঁচ জেনারেলকে ‘আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে গুরুতর অপরাধ সংঘটনের’ অভিযোগে বিচার করারও সুপারিশ করে ওই মিশন।
মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের দাপ্তরিক ওয়েবসাইটে গতকাল পোস্ট করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, রাখাইনের ঘটনা তদন্তে সেনাবাহিনীর একজন মেজর জেনারেল ও দুজন কর্নেলের সমন্বয়ে সামরিক আদালত গঠন করা হয়েছে। সামরিক বাহিনীর নিয়োগ করা জজ অ্যাডভোকেট-জেনারেলের মূল্যায়ন ও পরামর্শ এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগের ভিত্তিতে এই সামরিক আদালত গঠন করা হয়েছে।
এর আগেও মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রাখাইনের ঘটনায় তদন্তের পর দাবি করে, তদন্তে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ওঠা কোনো অভিযোগেরই সত্যতা পাওয়া যায়নি।
নতুন করে সামরিক আদালত গঠনের বিষয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক পরিচালক নিকোলাস বেকুইলিন বলেন, আন্তর্জাতিক চাপ ঠেকাতে এটি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ‘আরেকটি চাল’। তিনি বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে গুরুতর অপরাধ করলেও এখন পর্যন্ত এই বাহিনীতে সংস্কারের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।