৩০ ঘণ্টা পর ধ্বংসস্তূপ থেকে শিশু উদ্ধার
রাশিয়ায় ধসে যাওয়া অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে ১১ মাসের শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। শূন্যের নিচে তাপমাত্রায় ৩০ ঘণ্টা ধরে শিশুটি ধ্বংসস্তূপের ভেতর আটকে ছিল। শিশুটিকে উদ্ধারের পর চিকিৎসার জন্য মস্কোয় পাঠানো হয়েছে। শিশুটির জ্ঞান থাকলেও অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, রাশিয়ার মাগনিতোগোরস্ক শহরে গত সোমবার ১০তলা অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে এখনো পর্যন্ত নয়জনের মৃত্যুর তথ্যের সত্যতার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৩২ জন। গ্যাস–সংযোগের ছিদ্র থেকে এ বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিস্ফোরণে ভবনের একাংশ ধসে যায়। ভবনটিতে ৪৮টি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে এবং এতে বাসিন্দা রয়েছেন ১২০ জন।
উদ্ধার হওয়া শিশুটির ব্যাপারে বলা হয়েছে, ছেলেশিশুটির নাম ইভান। এর আগে তার মাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিল।
রাজধানী মস্কো থেকে ১ হাজার ৬৯৫ কিলোমিটার দূরত্বে মাগনিতোগোরস্ক শহরে দিনের বেলাতেই তাপমাত্রা থাকে মাইনাস ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রচণ্ড শীতের কারণে শিশু ইভানের গায়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে, মাথায় আঘাত আছে, পায়ের একাধিক জায়গা ভেঙে গেছে। চিকিৎসার জন্য তাকে উড়োজাহাজে করে মস্কো নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পায়োত্রর গ্রিতসেনকো নামের একজন উদ্ধারকর্মী জানান, দোলনায় কম্বলে মোড়া ছিল শিশুটি। আন্দ্রেই ভালমান নামের আরেকজন উদ্ধারকর্মী শিশুটির কান্নার শব্দ শুনতে পান। তিনি সেটা জানানোর পর শব্দের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য যন্ত্রপাতি বন্ধ করে নীরবতা আনা হয়। তখন শোনা যায়, সত্যিই শিশুর কান্না। তাঁরা শিশুটিকে থামতে বলার সঙ্গে সঙ্গেই সে থেমে যায়। এরপর তারা শিশুটির উদ্দেশে জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি কোথায়?’। শিশুটি তখন আবার কান্না শুরু করে। ঘটনাটি দলের প্রধানকে জানানোর পর তিনি শিশুটিকে উদ্ধারে সবাইকে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজে যুক্ত হতে বলেন।
এর আগে সোমবার ভবনটিতে উদ্ধার তৎপরতা চালানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। আরও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভবনটিকে কিছুটা উপযোগী করে তোলার পর উদ্ধারকাজ শুরু করার কথা ছিল।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিনি ঘুম ভেঙে দেখতে পান, নিচে পড়ে যাচ্ছেন। দেয়াল ধসে পড়েছে। তাঁর মা চিৎকার করছেন এবং তাঁর ছেলে ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই চাপা পড়ে গেল।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিস্ফোরণে প্রাণহানির ঘটনায় আজ মাগনিতোগোরস্ক শহরে শোক দিবস পালন করা হবে। সেখানে পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। শহরের সব ধরনের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।