ভাতগুলো ছিল একেবারেই অন্য রকম। এই ভাত আপনাকে ভাতের ধারণা পাল্টে দেবে। সাধারণত ভাত যেমন শক্ত ঝরঝরে হয়, তেমনটা নয়। আধেক তরল আর বেশ ‘জুসি জুসি’। প্রথমে মনে হতে পারে চিনি ছাড়া শিরনি বা পায়েস। কিন্তু আরেকটু খেলেই আপনি বুঝে ফেলবেন, এটা অন্য ধরনের ভাত। পরিমাণমতো চালের সঙ্গে বেশি করে পানি দেওয়ার ফলে ভাতের এ রকম লুক এসেছে। খুব আরামে খাওয়া যায়। কোনো পরিশ্রমই হয় না। মুখে দিলে কষ্ট করে চাবাতে হয় না। গিলে ফেললেই সোজা পাকস্থলীতে পাচার! বিশেষ করে বয়সীরা, যাঁদের দাঁত নেই, তাঁরা খুব আরাম পাবেন খেয়ে।
ভাতের সঙ্গেই প্রথমে নিয়েছিলাম আলুভর্তা। হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন—আলুভর্তা। আলুর দাম বেড়ে যাওয়ার আগেই কিনে রাখা আলু দিয়ে তৈরি আলুভর্তা। এমনিতেই খাবারটি আমার খুব প্রিয়। ফলে বুঝতেই পারছেন, এই আলুভর্তা সুপার স্পেশাল। তবে বুয়া আলু পুরোপুরি সেদ্ধ করেন না। হাফ সেদ্ধ অবস্থায় চামচ, গ্লাস ইত্যাদি দিয়ে পিটিয়ে ভর্তা বানানোর পর এটা নতুন এক ধরনের আলুভর্তা হয়ে যায়। আধা সেদ্ধ আলু দানা দানা হয়ে থাকে। জুসি জুসি ভাতের সঙ্গে দানাদার শক্ত আলুভর্তার কম্বিনেশনটা অসাধারণ! বাসায় ট্রাই করে দেখতে পারেন।
আলুভর্তা শেষ করেই নিলাম ডিম ভুনা। প্লেটে নেওয়ার পর জানলাম, এটা আসলে ঝাল ভুনা উইথ এগ। নানা পদের মসলার ব্যবহারের পাশাপাশি এই মেন্যুতে বুয়া স্বাধীনভাবে মরিচের ব্যবহার করেছেন। কড়া লাল রঙের এই মেন্যুটি দেখলেই যে কারও জিব থেকে জল উধাও হয়ে যাবে! খাবারের মাঝে রান্নাঘরে ছুটে গিয়ে চিনি নিলাম। চিনিটা অসাধারণ ছিল। যেমন মিষ্টি তেমনই কুড়কুড়ে।
অর্ধেক প্লেট শেষ করে ছুটলাম রান্নাঘরে। পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ আনতে। পেঁয়াজের টেস্টটা অসাধারণ ছিল। হালকা হালকা ঝাঁজ। সঙ্গে কাঁচা মরিচ জুসি জুসি ভাতের টেস্ট দ্বিগুণ করে ফেলেছিল। সঙ্গে নেওয়া স্পেশাল পাতলা ডাল ভাতগুলো ভাসিয়ে রেখেছিল। দেখতে এত কিউট লাগছিল যেন সমুদ্রের পানিতে ছোট ছোট ঝিনুক ভাসছে। খুব আনন্দ নিয়ে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ আর ডাল দিয়ে খেলাম। সব মিলিয়ে অসাধারণ। খেতে চাইলে বাসার বুয়াকে বলুন।
রেটিং
জুসি জুসি ভাত: ৫/৫
দানাদার আলুভর্তা: ৫/৫
ঝাল ভুনা উইথ এগ: ৫/৫
স্পেশাল পাতলা ডাল: ৫/৫
কাঁচা মরিচ: ৫/৫
পেঁয়াজ: ৫/৫